ভারতের নতুন কৃষি আইন স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট

ভারতে নতুন যে তিনটি কৃষি আইন নিয়ে কৃষকরা আন্দোলন করে আসছিলেন সেগুলো স্থগিত রাখতে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে ওই তিনটি আইন এখন কার্যকর হচ্ছে না। সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আদালত বলে দিয়েছে কৃষি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কৃষকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আইনগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে। আদেশে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেছেন, ‘পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই তিনটি আইন স্থগিতের আদেশ দিচ্ছি।’ আদেশে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো তাদের আন্দোলন বন্ধ করতে বলতে পারব না। তবে আমি মনে করি আজ যে বিশেষ আদেশ দেয়া হলো তা অন্তত এখনকার মতো অনেকদিন ধরে কৃষকের স্বার্থে চলা আন্দোলনের একটি অর্জন হিসেবে দেখা যেতে পারে।’

কৃষকদের যে সংগঠনগুলো আছে এখন তারা কৃষকদের জীবন, জীবিকা ও স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সেগুলো রক্ষাকল্পে তাদের ফিরে যাওয়ার কথা বলতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছিল, এই আইনগুলো তাড়াহুড়ো করে করা হয়নি, বরং সেগুলো কয়েক দশক ধরে চিন্তাভাবনা করেই করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কৃষকদের সঙ্গে আট দফায় হওয়া আলোচনায় প্রতিবারই সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়া হয়েছে। তবে সরকার বলেছে, তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কিছু সংশোধনী আনা যেতে পারে। এসবের কোনকিছুই সঠিক ছিল না বলে সুপ্রীম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়। তাই সবচেয়ে ভালো হচ্ছে আইনগুলোকে স্থগিত করে দেয়া, আদেশে বিচারক বলেন, ‘এখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন। আইন নিয়ে আমাদের চিন্তা আছে। মানুষের জানমালের যে ক্ষতি হচ্ছে এই বিক্ষোভ করতে গিয়ে, তা নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা চেষ্টা করছি সমস্যার সবচেয়ে ভালো সমাধানের। আমাদের যতটুকু ক্ষমতা আছে, তার একটি হচ্ছে আইনগুলোকে স্থগিত করে দেয়া।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা একটি কমিটি করছি যেহেতু আমরা সমস্যার সমাধান চাই।’ সেই কমিটিতে কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাতি, ক্ষেতকারী সংগঠনের অনীল ঘানওয়াত, রাজ্যসভার সাবেক সদস্য ভুপেন্দর সিং মান, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ সেন্টারের প্রমোদ যোশীকে রাখতে সুপারিশ করেছে সুপ্রীম কোর্ট। অবশ্য এই চারজনই কৃষি আইনের সমর্থক।

বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১ , ২৯ পৌষ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ভারতের নতুন কৃষি আইন স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট

সংবাদ ডেস্ক |

ভারতে নতুন যে তিনটি কৃষি আইন নিয়ে কৃষকরা আন্দোলন করে আসছিলেন সেগুলো স্থগিত রাখতে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে ওই তিনটি আইন এখন কার্যকর হচ্ছে না। সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আদালত বলে দিয়েছে কৃষি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কৃষকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আইনগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে। আদেশে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেছেন, ‘পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই তিনটি আইন স্থগিতের আদেশ দিচ্ছি।’ আদেশে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো তাদের আন্দোলন বন্ধ করতে বলতে পারব না। তবে আমি মনে করি আজ যে বিশেষ আদেশ দেয়া হলো তা অন্তত এখনকার মতো অনেকদিন ধরে কৃষকের স্বার্থে চলা আন্দোলনের একটি অর্জন হিসেবে দেখা যেতে পারে।’

কৃষকদের যে সংগঠনগুলো আছে এখন তারা কৃষকদের জীবন, জীবিকা ও স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সেগুলো রক্ষাকল্পে তাদের ফিরে যাওয়ার কথা বলতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছিল, এই আইনগুলো তাড়াহুড়ো করে করা হয়নি, বরং সেগুলো কয়েক দশক ধরে চিন্তাভাবনা করেই করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কৃষকদের সঙ্গে আট দফায় হওয়া আলোচনায় প্রতিবারই সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়া হয়েছে। তবে সরকার বলেছে, তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কিছু সংশোধনী আনা যেতে পারে। এসবের কোনকিছুই সঠিক ছিল না বলে সুপ্রীম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়। তাই সবচেয়ে ভালো হচ্ছে আইনগুলোকে স্থগিত করে দেয়া, আদেশে বিচারক বলেন, ‘এখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন। আইন নিয়ে আমাদের চিন্তা আছে। মানুষের জানমালের যে ক্ষতি হচ্ছে এই বিক্ষোভ করতে গিয়ে, তা নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা চেষ্টা করছি সমস্যার সবচেয়ে ভালো সমাধানের। আমাদের যতটুকু ক্ষমতা আছে, তার একটি হচ্ছে আইনগুলোকে স্থগিত করে দেয়া।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা একটি কমিটি করছি যেহেতু আমরা সমস্যার সমাধান চাই।’ সেই কমিটিতে কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাতি, ক্ষেতকারী সংগঠনের অনীল ঘানওয়াত, রাজ্যসভার সাবেক সদস্য ভুপেন্দর সিং মান, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ সেন্টারের প্রমোদ যোশীকে রাখতে সুপারিশ করেছে সুপ্রীম কোর্ট। অবশ্য এই চারজনই কৃষি আইনের সমর্থক।