সাঁথিয়ায় ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস

সাঁথিয়া পৌরসভায় নির্বাচন ১৬ জানুয়ারি। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ৩ জন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. মাহবুবুল আলম বাচ্চু, বিএনপি দলীয় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন (জামায়াত সমর্থিত) মো. আকতার হোসেন।

তিনটি সংরক্ষিত মহিলা আসনে কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে ৩ জন বুলবুলি খাতুন, সালমা খাতুন ও লিজা খাতুন; ২নং ওয়ার্ডে ২ জন রেবেকা সুলতানা ও হাছিনা খাতুন এবং ৩নং ওয়ার্ডে ৩ জন ছন্দা খাতুন জীবন নাহার ও শামসুন্নাহার। ৯টি ওয়ার্ডে মোট কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩০ জন। ১নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ২নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৫নং ৩ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৩ জন এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৩ জন। মোট ভোটার ৩১ হাজার ৯২ জন। পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৫শ ৫৫ জন, মহিলা ভোটার ১৫ হাজার ৫শ’ ৩৭ জন। ১৪টি ভোট কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৯২টি।

ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কিনা। সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এবং তার পুত্র যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসিফ শামস রঞ্জনের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘন ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। গত বুধবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। নির্বাচন কমিশনের নিকট এ বিষয়ে বারংবার অভিযোগ করেও কোন ফল মিলছে না বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা। লিখিত বক্তব্যে বিএনপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে ক্রমাগত আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন। গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সাঁথিয়া ছেঁচানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চান। এরপর গত ৯ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের সমাবেশে ১১ ও ১২ জানুয়ারি সাঁথিয়ায় নৌকার প্রার্থী মাহবুবুল আলম বাচ্চুর নির্বাচনী সমাবেশে তিনি নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান। প্রতিটি ঘটনায় নির্বাচনী রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান, ইডেন কলেজের সাবেক ভিপি খায়রুন্নাহার মিরু। বিএনপি প্রার্থী আরও অভিযোগ করেন, কেবল সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুই নন তার পুত্র যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আসিফ শামস রঞ্জন গত ১১ জানুয়ারি প্রকাশ্যে সমাবেশে নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। যে কোন প্রক্রিয়ার নৌকাকে বিজয়ী করতে নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপি নেতারা দাবি করেন, সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু ও তার ছেলে রঞ্জনের উষ্কানিতে উশৃঙ্খল সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে সাঁথিয়া পৌর এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের নিকট দাবি জানান তারা। পাশাপাশি, ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানোরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বলেন, বিএনপির কর্মীরাই আওয়ামী লীগ কর্মীদের পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, দলীয় কর্মসূচি ও সরকারি অনুষ্ঠানে আমি বেশ কয়েকবার সাঁথিয়া গিয়েছি, মানুষের সাথে কথাও বলেছি, তবে তা নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করে নয়। নির্বাচন প্রভাবান্বিত করার কোন চেষ্টা আমি বা আমার ছেলে করছি না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন। আমি কোন হস্তক্ষেপ করিনি।

শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১ মাঘ ১৪২৭, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সাঁথিয়ায় ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস

প্রতিনিধি, সাঁথিয়া (পাবনা)

সাঁথিয়া পৌরসভায় নির্বাচন ১৬ জানুয়ারি। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ৩ জন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. মাহবুবুল আলম বাচ্চু, বিএনপি দলীয় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন (জামায়াত সমর্থিত) মো. আকতার হোসেন।

তিনটি সংরক্ষিত মহিলা আসনে কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে ৩ জন বুলবুলি খাতুন, সালমা খাতুন ও লিজা খাতুন; ২নং ওয়ার্ডে ২ জন রেবেকা সুলতানা ও হাছিনা খাতুন এবং ৩নং ওয়ার্ডে ৩ জন ছন্দা খাতুন জীবন নাহার ও শামসুন্নাহার। ৯টি ওয়ার্ডে মোট কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩০ জন। ১নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ২নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৫নং ৩ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৩ জন এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৩ জন। মোট ভোটার ৩১ হাজার ৯২ জন। পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৫শ ৫৫ জন, মহিলা ভোটার ১৫ হাজার ৫শ’ ৩৭ জন। ১৪টি ভোট কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৯২টি।

ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কিনা। সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এবং তার পুত্র যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসিফ শামস রঞ্জনের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘন ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। গত বুধবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। নির্বাচন কমিশনের নিকট এ বিষয়ে বারংবার অভিযোগ করেও কোন ফল মিলছে না বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা। লিখিত বক্তব্যে বিএনপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে ক্রমাগত আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন। গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সাঁথিয়া ছেঁচানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চান। এরপর গত ৯ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের সমাবেশে ১১ ও ১২ জানুয়ারি সাঁথিয়ায় নৌকার প্রার্থী মাহবুবুল আলম বাচ্চুর নির্বাচনী সমাবেশে তিনি নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান। প্রতিটি ঘটনায় নির্বাচনী রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান, ইডেন কলেজের সাবেক ভিপি খায়রুন্নাহার মিরু। বিএনপি প্রার্থী আরও অভিযোগ করেন, কেবল সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুই নন তার পুত্র যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আসিফ শামস রঞ্জন গত ১১ জানুয়ারি প্রকাশ্যে সমাবেশে নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। যে কোন প্রক্রিয়ার নৌকাকে বিজয়ী করতে নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপি নেতারা দাবি করেন, সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু ও তার ছেলে রঞ্জনের উষ্কানিতে উশৃঙ্খল সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে সাঁথিয়া পৌর এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের নিকট দাবি জানান তারা। পাশাপাশি, ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানোরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বলেন, বিএনপির কর্মীরাই আওয়ামী লীগ কর্মীদের পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, দলীয় কর্মসূচি ও সরকারি অনুষ্ঠানে আমি বেশ কয়েকবার সাঁথিয়া গিয়েছি, মানুষের সাথে কথাও বলেছি, তবে তা নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করে নয়। নির্বাচন প্রভাবান্বিত করার কোন চেষ্টা আমি বা আমার ছেলে করছি না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন। আমি কোন হস্তক্ষেপ করিনি।