দেশে করোনা

মৃত্যু বাড়লেও সার্বিকভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি

এক সপ্তাহে শনাক্তের হার ৮.৩৪ শতাংশ কমেছে

আট মাসের মধ্যে একদিনে গতকাল দেশে সবচেয়ে কম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ওইদিন দেশে মাত্র ৫৭৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে ওইদিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও সার্বিকভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সময়ে দেশে ১২ হাজার ৫৬৩ জনের করোনা শনাক্ত এবং ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত জুন, জুলাই ও আগস্টে করোনা সংক্রমণ চূড়ায় ছিল, ওই সময়ের তুলনায় গত ১৬ দিনে দেশের শনাক্তের সংখ্যা ও মৃত্যু কমেছে। গত নভেম্বরে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও ডিসেম্বরের মাঝামামাঝি সময় থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসছে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে, যা ১৫ ডিসেম্বর ছিল ১৩ জন। এই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৭৮ জনের। মারা যাওয়া ২১ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট সাত হাজার ৮৮৩ জনের মৃত্যু হলো। আর ৫৭৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৬৩ জন হয়েছে। গত বছরের ২ মে ৫৫২ জন রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর গতকাল সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হলো।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৬৩৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত একদিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে চার লাখ ৭১ হাজার ৭৫৬ জন হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির

ধারাবাহিক উন্নতি

দেশে প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর ২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়। দেশে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অর্থাৎ সংক্রমণ চূড়ায় ছিল গত জুন, জুলাই ও আগস্টে। ওই সময়ের তুলনায় গত দু’তিন মাসে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ১ জানুয়ারি দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৫৭৬ জন। দুই সপ্তাহে শনাক্ত ১২ হাজার ৫৬৩ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৩০৭ জন বেড়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত একমাসে শনাক্ত বেড়েছে ৪৬ হাজার ২৮৫ জন এবং মৃত্যু বেড়েছে ৮৮৪ জন। এর আগে গত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত একমাসে শনাক্ত বেড়েছে ৫৫ হাজার ৩৮০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭০৩ জনের। আর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত একমাসে ৪২ হাজার ৬৯৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত এবং ৬৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে গত বছরের ১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত একমাসে ৯৬ হাজার ৯৪৯ জনের করোনা শনাক্ত এবং এক হাজার ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত একমাসে ৮৮ হাজার ৩৭৬ জনের করোনা শনাক্ত এবং এক হাজার ২২৩ জনের মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ তথ্য

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট ১২ হাজার ২১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৭টি।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ বাড়লেও শনাক্তের সংখ্যা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

সার্বিকভাবে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ও নারী ৮ জন। ২১ জনের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। ২১ জনের মধ্যে ১২ জনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। এছাড়া ৪ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে। ৩ জনের বয়স ছিল ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। আর ১ জনের বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে।

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১ , ৩ মাঘ ১৪২৭, ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

দেশে করোনা

মৃত্যু বাড়লেও সার্বিকভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি

এক সপ্তাহে শনাক্তের হার ৮.৩৪ শতাংশ কমেছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

আট মাসের মধ্যে একদিনে গতকাল দেশে সবচেয়ে কম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ওইদিন দেশে মাত্র ৫৭৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে ওইদিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও সার্বিকভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সময়ে দেশে ১২ হাজার ৫৬৩ জনের করোনা শনাক্ত এবং ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত জুন, জুলাই ও আগস্টে করোনা সংক্রমণ চূড়ায় ছিল, ওই সময়ের তুলনায় গত ১৬ দিনে দেশের শনাক্তের সংখ্যা ও মৃত্যু কমেছে। গত নভেম্বরে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও ডিসেম্বরের মাঝামামাঝি সময় থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসছে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে, যা ১৫ ডিসেম্বর ছিল ১৩ জন। এই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৭৮ জনের। মারা যাওয়া ২১ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট সাত হাজার ৮৮৩ জনের মৃত্যু হলো। আর ৫৭৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৬৩ জন হয়েছে। গত বছরের ২ মে ৫৫২ জন রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর গতকাল সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হলো।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৬৩৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত একদিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে চার লাখ ৭১ হাজার ৭৫৬ জন হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির

ধারাবাহিক উন্নতি

দেশে প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর ২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়। দেশে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অর্থাৎ সংক্রমণ চূড়ায় ছিল গত জুন, জুলাই ও আগস্টে। ওই সময়ের তুলনায় গত দু’তিন মাসে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ১ জানুয়ারি দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৫৭৬ জন। দুই সপ্তাহে শনাক্ত ১২ হাজার ৫৬৩ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৩০৭ জন বেড়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত একমাসে শনাক্ত বেড়েছে ৪৬ হাজার ২৮৫ জন এবং মৃত্যু বেড়েছে ৮৮৪ জন। এর আগে গত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত একমাসে শনাক্ত বেড়েছে ৫৫ হাজার ৩৮০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭০৩ জনের। আর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত একমাসে ৪২ হাজার ৬৯৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত এবং ৬৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে গত বছরের ১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত একমাসে ৯৬ হাজার ৯৪৯ জনের করোনা শনাক্ত এবং এক হাজার ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত একমাসে ৮৮ হাজার ৩৭৬ জনের করোনা শনাক্ত এবং এক হাজার ২২৩ জনের মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ তথ্য

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট ১২ হাজার ২১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৭টি।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ বাড়লেও শনাক্তের সংখ্যা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

সার্বিকভাবে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ও নারী ৮ জন। ২১ জনের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। ২১ জনের মধ্যে ১২ জনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। এছাড়া ৪ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে। ৩ জনের বয়স ছিল ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। আর ১ জনের বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে।