সীতাকুণ্ডের উপকূলে

শিকারির ফাঁদ ও কীটনাশকে মারা পড়ছে অনেক হরিণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে মিঠাপানি ও খাবারের সন্ধানে এসে শিকারির ফাঁদ ও কীটনাশকযুক্ত সবজি খেয়ে মারা পড়ছে অনেক হরিণ। এতে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। সম্প্রতি এমন বেশকিছু ঘটনার সত্যতা পেয়ে উদ্বিগ্ন বন কর্মকর্তারাও। তারা উপকূলে পাহারা জোরদার করেছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের কয়েকটি ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় এখনও প্রচুর হরিণ রয়েছে।

এসব হরিণ শীতকালীন সবজি খেতে কিংবা মিঠাপানি পান করতে রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে আসে। সুযোগে এক শ্রেণীর শিকারি হরিণ শিকারের নেশায় মেতে উঠেছে। তারা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করে। এছাড়া লোকালয়ে সবজি খেতে গিয়ে কীটনাশক মিশ্রিত সবজি খেয়ে মারা পড়ছে বহু হরিণ। সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাড়বকু- ও বাঁশবাড়িয়া সাগর উপকূলে মাঝে মধ্যেই এভাবে হরিণ ধরা পড়া ও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

গত ১৫ ডিসেম্বর বিশালাকার একটি হরিণ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বগাচতর এলাকায় সবজির বিষক্রিয়ায় মারা যায়। খবর পেয়ে উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এছাড়া বনের ভেতর আরও অনেক হরিণের হাড়গোড় পড়ে থাকতে দেখেছেন বন কর্মকর্তারা। সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ আসে। এসব হরিণ এই শুকনো মৌসুমে মিঠা পানির সন্ধানে উপকূলে আসে। এতে তারা কখনও শিকারির ফাঁদে আবার কখনও কৃষকের সবজি খেয়ে কীটনাশকের বিষক্রিয়ার শিকার হন।

তিনি বলেন, সুযোগসন্ধানী শিকারিদের পাহারা দেয়া খুবই কঠিন কাজ। তবু আমরা উপকূলীয় কৃষকদের নিয়ে একটি সচেতনতা সভা করতে চেষ্টা করছি।

এর আগেও উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকু-সহ বিভিন্ন স্থানে অনেক হরিণ আটক করা হয়েছে। যার অনেকগুলো উপকূলীয় বনে পুনরায় অবমুক্ত করা হয় আবার কিছু কিছু হরিণ শিকারিরা মাংস বিক্রি করে দেয় বলেও জানা গেছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলার উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জ সহযোগী ফরেস্টার খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলেন, সবজি খেতের অনেক স্থানেই হরিণের হাড়গোড় পড়ে আছে এবং সেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ নেমে আসার মতো পায়ের ছাপ আমরা দেখেছি।

এছাড়া অনেক খেত ও উপকূলীয় এলাকায় শিকারিদের পেতে রাখা ফাঁদও দেখেছি। এজন্য উপকূলীয় এলাকায় সভা করে এলাকাবাসীকে সচেতন করার উদ্যোগের প্রস্তুতির কথা জানান তিনিও।

সোমবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২১ , ৪ মাঘ ১৪২৭, ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সীতাকুণ্ডের উপকূলে

শিকারির ফাঁদ ও কীটনাশকে মারা পড়ছে অনেক হরিণ

প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)

image

বিক্রির জন্য মৃত হরিণের চামড়া তুলে নেয়া হচ্ছে -সংবাদ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে মিঠাপানি ও খাবারের সন্ধানে এসে শিকারির ফাঁদ ও কীটনাশকযুক্ত সবজি খেয়ে মারা পড়ছে অনেক হরিণ। এতে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। সম্প্রতি এমন বেশকিছু ঘটনার সত্যতা পেয়ে উদ্বিগ্ন বন কর্মকর্তারাও। তারা উপকূলে পাহারা জোরদার করেছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের কয়েকটি ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় এখনও প্রচুর হরিণ রয়েছে।

এসব হরিণ শীতকালীন সবজি খেতে কিংবা মিঠাপানি পান করতে রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে আসে। সুযোগে এক শ্রেণীর শিকারি হরিণ শিকারের নেশায় মেতে উঠেছে। তারা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করে। এছাড়া লোকালয়ে সবজি খেতে গিয়ে কীটনাশক মিশ্রিত সবজি খেয়ে মারা পড়ছে বহু হরিণ। সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাড়বকু- ও বাঁশবাড়িয়া সাগর উপকূলে মাঝে মধ্যেই এভাবে হরিণ ধরা পড়া ও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

গত ১৫ ডিসেম্বর বিশালাকার একটি হরিণ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বগাচতর এলাকায় সবজির বিষক্রিয়ায় মারা যায়। খবর পেয়ে উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এছাড়া বনের ভেতর আরও অনেক হরিণের হাড়গোড় পড়ে থাকতে দেখেছেন বন কর্মকর্তারা। সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ আসে। এসব হরিণ এই শুকনো মৌসুমে মিঠা পানির সন্ধানে উপকূলে আসে। এতে তারা কখনও শিকারির ফাঁদে আবার কখনও কৃষকের সবজি খেয়ে কীটনাশকের বিষক্রিয়ার শিকার হন।

তিনি বলেন, সুযোগসন্ধানী শিকারিদের পাহারা দেয়া খুবই কঠিন কাজ। তবু আমরা উপকূলীয় কৃষকদের নিয়ে একটি সচেতনতা সভা করতে চেষ্টা করছি।

এর আগেও উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকু-সহ বিভিন্ন স্থানে অনেক হরিণ আটক করা হয়েছে। যার অনেকগুলো উপকূলীয় বনে পুনরায় অবমুক্ত করা হয় আবার কিছু কিছু হরিণ শিকারিরা মাংস বিক্রি করে দেয় বলেও জানা গেছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলার উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জ সহযোগী ফরেস্টার খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলেন, সবজি খেতের অনেক স্থানেই হরিণের হাড়গোড় পড়ে আছে এবং সেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ নেমে আসার মতো পায়ের ছাপ আমরা দেখেছি।

এছাড়া অনেক খেত ও উপকূলীয় এলাকায় শিকারিদের পেতে রাখা ফাঁদও দেখেছি। এজন্য উপকূলীয় এলাকায় সভা করে এলাকাবাসীকে সচেতন করার উদ্যোগের প্রস্তুতির কথা জানান তিনিও।