১২ বছর পর ধর্ষকের যাবজ্জীবন

সন্তানের স্বীকৃতি

দীর্ঘ ১২ বছর পর রংপুরের পীরগাছায় প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আসামি আবুল কালামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার হরিরাম গ্রামের শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী এক নারীকে একই গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে আসামি আবুল কালাম ১/১২/২০০৮ সালে বাসায় একা পেয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ইশারায় প্রতিবন্ধী নারী স্বজনদের জানান। এর মধ্যেই প্রতিবন্ধী নারী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এরপর গত ৮/৯/২০০৯ সালে গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় প্রতিবন্ধী নারীর বাবা আবদুর রহমান বাদী হয়ে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করলে আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য পীরগাছা থানাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীকালে পুলিশ আসামি আবুল কালামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামি আবুল কালামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

বিজ্ঞ বিচারক রায়ে প্রতিবন্ধীর গর্ভে জন্ম নেয়া পুত্র সন্তানকে আসামি আবুল কালামের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও তার ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির ভাগ দেয়ার আদেশ দেন। যদি কোন সম্পদ না থাকে তাহলে রাষ্ট্রকে শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুটির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত এবং সম্পদের অংশ দেয়ারও আদেশ দিয়েছেন। এটি একটি যুগান্তকারী রায় বলে জানান তিনি। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজিবী এমদাদুল হক প্রধান অ্যাডভোকেট জানান, এ রায়ে তারা ন্যায়বিচার পাননি। উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

সোমবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২১ , ৪ মাঘ ১৪২৭, ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

প্রতিবন্ধী ধর্ষণ

১২ বছর পর ধর্ষকের যাবজ্জীবন

সন্তানের স্বীকৃতি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

দীর্ঘ ১২ বছর পর রংপুরের পীরগাছায় প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আসামি আবুল কালামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার হরিরাম গ্রামের শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী এক নারীকে একই গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে আসামি আবুল কালাম ১/১২/২০০৮ সালে বাসায় একা পেয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ইশারায় প্রতিবন্ধী নারী স্বজনদের জানান। এর মধ্যেই প্রতিবন্ধী নারী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এরপর গত ৮/৯/২০০৯ সালে গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় প্রতিবন্ধী নারীর বাবা আবদুর রহমান বাদী হয়ে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করলে আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য পীরগাছা থানাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীকালে পুলিশ আসামি আবুল কালামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামি আবুল কালামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

বিজ্ঞ বিচারক রায়ে প্রতিবন্ধীর গর্ভে জন্ম নেয়া পুত্র সন্তানকে আসামি আবুল কালামের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও তার ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির ভাগ দেয়ার আদেশ দেন। যদি কোন সম্পদ না থাকে তাহলে রাষ্ট্রকে শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুটির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত এবং সম্পদের অংশ দেয়ারও আদেশ দিয়েছেন। এটি একটি যুগান্তকারী রায় বলে জানান তিনি। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজিবী এমদাদুল হক প্রধান অ্যাডভোকেট জানান, এ রায়ে তারা ন্যায়বিচার পাননি। উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।