ইউটার্নে বেড়েছে তেজগাঁও বনানীর যানজট

রাজধানীর বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি মোড়। দুপুর ১২টা। যানজটের কারণে দাঁড়িয়ে আছে প্রাইভেটকারচালক ইকরাম। তিনি গুলশান-২ নম্বরে যাবেন। মহাখালী থেকে বনানী চৌরাস্তা পর্যন্ত আসতে তার সময় লেগেছে ৪৫ মিনিট। আগে লাগতো ৩০ মিনিট। ‘এখন একটু বেশি সময় লাগে। কারণ চেয়ারম্যান বাড়ির ইউটার্নের কারণে সড়কের প্রসস্থতা কিছুটা কমে গেছে। গাড়ির চাপ কিন্তু আগের মতোই আছে’ বলেন ইকরাম। এটা গত বৃহস্পতিবারের চিত্র।

তবে প্রতিদিনই অফিসের সময় ‘সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা ও বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত’ প্রচ- যানজটের সৃষ্টি হয় এই পথে। এ কারণে মহাখালি থেকে বনানী পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। কোন কোন সময় তা দেড় থেকে ২ ঘণ্টা লেগে যায়।

এই যানজট দূর করার জন্য বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় একটি ইউটার্ন নির্মাণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এছাড়া তেজগাঁও বিজি প্রেসের মোড় ও নাবিস্কো-কোহিনূর কেমিক্যাল মোড়ে আরও দুটি ইউটার্ন নির্মাণ করা হয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর এই ৩টি ইউটার্ন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। সড়কের প্রসস্থতা কম থাকায় এই ইউটার্নের ফলে যানজট আগের চাইতে বেড়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

রাজধানীর নাবিস্কো মোড়ে নাসির নামে বলাকা বাসের এক চালক সংবাদকে বলেন, ‘ইউটার্নের কারণে যানজট কমেনি বরং আরও বাড়ছে। ইউটার্নের কারণে রাস্তা ছোট হয়ে গেছে। এছাড়া মহাখালীর টার্মিনালের বাসগুলো রাস্তা দখল করে রাখে। এতে মহাখালী থেকে নাবিস্কো হয়ে সাতরাস্তা পর্যন্ত যানজট থাকে। এখন স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকায় দুপুরের সময় যানজট কিছুটা কম হয়। স্কুল-কলেজ চালু হলে এই এলাকায় আরও ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে।’

ইউটার্ন চালুর বিষয়ে বনানী এলাকায় মনিরুল ইসলাম নামে এক ট্রাফিক পরিদর্শক সংবাদকে বলেন, ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী এলাকায় যানজটের একমাত্র কারণ হলো গুলশানের যানবাহন। গুলশানের গাড়িগুলো প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্যই মহাসড়কে গাড়ি আটকে রাখতে হয়। এতে যানজট তৈরি হয়। চালু হওয়া চেয়ারম্যান বাড়ি ইউটার্ন দিয়ে গুলশানে একটি গাড়িও প্রবেশ করে না। সব যাতায়াত বনানীর চৌরাস্তা দিয়ে। তাই বনানী চৌরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।’

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোড়বেষ্টিত শহরে ইউটার্ন ও ফ্লাইওভার সাময়িক কিছু সুবিধা দিলেও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এটা নয়। এভাবে অপরিকল্পিত ব্যবস্থার কারণে ঢাকার যানজট দূর করা যাচ্ছে না বলে জানান তারা।

‘ঢাকায় যে ১০টি ইউটার্ন তৈরি করা হয়েছে বা হচ্ছে। এগুলো ঢাকার শহরের জন্য স্থায়ী সমাধান নয়। ইউটার্নের কারণে সড়কের প্রসস্থতা কমে যায়। পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। উত্তরায় দুটি ইউটার্ন সুবিধা দিচ্ছে কারণ উত্তরায় সড়কের প্রসস্থতা বেশি। কিন্তু বনানী ও তেজগাঁও সড়ক এতো প্রসস্থ নয়। তাই এখন যানজট কম হলেও স্কুল-কলেজ চালু হলে প্রচ- যানজট তৈরি হবে এই এলাকায়’ বলেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল হক।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ শামছুল হক সংবাদকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমেই ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব। এসব কিছু বিষয় গবেষণা করেই তৈরি হয়েছে গণপরিবহনের কৌশলগত পরিকল্পনা (এসটিপি)। পরে তা সংশোধন করে আরএসটিপি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আরএসটিপি’র বাইরে গিয়ে ঢাকা যানজট নিরসেনর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তাই ঢাকা শহরের যানজট দূর করতে হলে সবার আগে পরিবহন ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ধাপে ধাপে ঢাকাকে যানজটমুক্ত করে বসবাসের নগরীতে পরিণত করতে হলে একাধিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এরমধ্যে গণপরিবহনের উন্নয়ন, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমেই ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব।’

২০১৫ সাল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার যানজট কমাতে ১১টি ইউটার্ন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন ডিএনসিসি’র তৎকালীন মেয়র প্রয়াত আনিসুল হক। সেগুলো হচ্ছেÑ উত্তরার রাজলক্ষ্মী, জসীমউদ্দীন রোড, কাওলার ফ্লাইং একাডেমি ও তেজগাঁও-বনানীর ৩টিসহ মোট ৬টি ইউটার্ন চালু হয়েছে। এছাড়া বনানী ফ্লাইওভারের নিচে, বনানী-কাকলী রেলস্টেশন, মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে, মহাখালী আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল সামনে আরও চারটি ইউটার্ন নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে আর্মি গলফ ক্লাবসংলগ্ন ইউটার্নটি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রথম ধাপেই বাদ দেয়া হয়েছে।

এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথের ৩১ দশমিক ২৫ বিঘা, রেলওয়ের ১ দশমিক ৬১ বিঘা এবং সিভিল এভিয়েশনের ১ দশমিক ৮৩ বিঘা জমির প্রয়োজন হয়। যানজট নিরসনে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ১০টি ইউটার্ন নির্মাণ করছে ডিএনসিসি।

প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম সংবাদকে বলেন, ‘১০টি ইউটার্নের মধ্যে ৬টির কাজ শেষ হয়েছে। এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এর আগে সবগুলোর কাজ শেষ হবে।’ ইউটার্ন সবগুলো একসঙ্গে চালু হলেই যানজট অনেকটা কমে যাবে বলে জানান তিনি।

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা না হলে সড়কে যানজট কমবে না উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘সড়কে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে নিয়মিত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১৩টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জেল ও জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও কাজ হচ্ছে না। যতদিন গণপরিবহনে শৃঙ্খলা না আসবে, ততদিন পর্যন্ত যানজট দূর করা কঠিন হবে।’ এজন্য পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও সরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১ , ৫ মাঘ ১৪২৭, ৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ইউটার্নে বেড়েছে তেজগাঁও বনানীর যানজট

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

তেজগাঁও-বনানী সড়কে ইউটার্ন থাকার ফলে বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় যানবাহনের জটলায় ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে-সোহরাব আলম

রাজধানীর বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি মোড়। দুপুর ১২টা। যানজটের কারণে দাঁড়িয়ে আছে প্রাইভেটকারচালক ইকরাম। তিনি গুলশান-২ নম্বরে যাবেন। মহাখালী থেকে বনানী চৌরাস্তা পর্যন্ত আসতে তার সময় লেগেছে ৪৫ মিনিট। আগে লাগতো ৩০ মিনিট। ‘এখন একটু বেশি সময় লাগে। কারণ চেয়ারম্যান বাড়ির ইউটার্নের কারণে সড়কের প্রসস্থতা কিছুটা কমে গেছে। গাড়ির চাপ কিন্তু আগের মতোই আছে’ বলেন ইকরাম। এটা গত বৃহস্পতিবারের চিত্র।

তবে প্রতিদিনই অফিসের সময় ‘সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা ও বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত’ প্রচ- যানজটের সৃষ্টি হয় এই পথে। এ কারণে মহাখালি থেকে বনানী পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। কোন কোন সময় তা দেড় থেকে ২ ঘণ্টা লেগে যায়।

এই যানজট দূর করার জন্য বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় একটি ইউটার্ন নির্মাণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এছাড়া তেজগাঁও বিজি প্রেসের মোড় ও নাবিস্কো-কোহিনূর কেমিক্যাল মোড়ে আরও দুটি ইউটার্ন নির্মাণ করা হয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর এই ৩টি ইউটার্ন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। সড়কের প্রসস্থতা কম থাকায় এই ইউটার্নের ফলে যানজট আগের চাইতে বেড়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

রাজধানীর নাবিস্কো মোড়ে নাসির নামে বলাকা বাসের এক চালক সংবাদকে বলেন, ‘ইউটার্নের কারণে যানজট কমেনি বরং আরও বাড়ছে। ইউটার্নের কারণে রাস্তা ছোট হয়ে গেছে। এছাড়া মহাখালীর টার্মিনালের বাসগুলো রাস্তা দখল করে রাখে। এতে মহাখালী থেকে নাবিস্কো হয়ে সাতরাস্তা পর্যন্ত যানজট থাকে। এখন স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকায় দুপুরের সময় যানজট কিছুটা কম হয়। স্কুল-কলেজ চালু হলে এই এলাকায় আরও ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে।’

ইউটার্ন চালুর বিষয়ে বনানী এলাকায় মনিরুল ইসলাম নামে এক ট্রাফিক পরিদর্শক সংবাদকে বলেন, ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী এলাকায় যানজটের একমাত্র কারণ হলো গুলশানের যানবাহন। গুলশানের গাড়িগুলো প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্যই মহাসড়কে গাড়ি আটকে রাখতে হয়। এতে যানজট তৈরি হয়। চালু হওয়া চেয়ারম্যান বাড়ি ইউটার্ন দিয়ে গুলশানে একটি গাড়িও প্রবেশ করে না। সব যাতায়াত বনানীর চৌরাস্তা দিয়ে। তাই বনানী চৌরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।’

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোড়বেষ্টিত শহরে ইউটার্ন ও ফ্লাইওভার সাময়িক কিছু সুবিধা দিলেও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এটা নয়। এভাবে অপরিকল্পিত ব্যবস্থার কারণে ঢাকার যানজট দূর করা যাচ্ছে না বলে জানান তারা।

‘ঢাকায় যে ১০টি ইউটার্ন তৈরি করা হয়েছে বা হচ্ছে। এগুলো ঢাকার শহরের জন্য স্থায়ী সমাধান নয়। ইউটার্নের কারণে সড়কের প্রসস্থতা কমে যায়। পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। উত্তরায় দুটি ইউটার্ন সুবিধা দিচ্ছে কারণ উত্তরায় সড়কের প্রসস্থতা বেশি। কিন্তু বনানী ও তেজগাঁও সড়ক এতো প্রসস্থ নয়। তাই এখন যানজট কম হলেও স্কুল-কলেজ চালু হলে প্রচ- যানজট তৈরি হবে এই এলাকায়’ বলেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল হক।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ শামছুল হক সংবাদকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমেই ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব। এসব কিছু বিষয় গবেষণা করেই তৈরি হয়েছে গণপরিবহনের কৌশলগত পরিকল্পনা (এসটিপি)। পরে তা সংশোধন করে আরএসটিপি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আরএসটিপি’র বাইরে গিয়ে ঢাকা যানজট নিরসেনর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তাই ঢাকা শহরের যানজট দূর করতে হলে সবার আগে পরিবহন ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ধাপে ধাপে ঢাকাকে যানজটমুক্ত করে বসবাসের নগরীতে পরিণত করতে হলে একাধিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এরমধ্যে গণপরিবহনের উন্নয়ন, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমেই ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব।’

২০১৫ সাল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার যানজট কমাতে ১১টি ইউটার্ন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন ডিএনসিসি’র তৎকালীন মেয়র প্রয়াত আনিসুল হক। সেগুলো হচ্ছেÑ উত্তরার রাজলক্ষ্মী, জসীমউদ্দীন রোড, কাওলার ফ্লাইং একাডেমি ও তেজগাঁও-বনানীর ৩টিসহ মোট ৬টি ইউটার্ন চালু হয়েছে। এছাড়া বনানী ফ্লাইওভারের নিচে, বনানী-কাকলী রেলস্টেশন, মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে, মহাখালী আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল সামনে আরও চারটি ইউটার্ন নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে আর্মি গলফ ক্লাবসংলগ্ন ইউটার্নটি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রথম ধাপেই বাদ দেয়া হয়েছে।

এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথের ৩১ দশমিক ২৫ বিঘা, রেলওয়ের ১ দশমিক ৬১ বিঘা এবং সিভিল এভিয়েশনের ১ দশমিক ৮৩ বিঘা জমির প্রয়োজন হয়। যানজট নিরসনে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ১০টি ইউটার্ন নির্মাণ করছে ডিএনসিসি।

প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম সংবাদকে বলেন, ‘১০টি ইউটার্নের মধ্যে ৬টির কাজ শেষ হয়েছে। এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এর আগে সবগুলোর কাজ শেষ হবে।’ ইউটার্ন সবগুলো একসঙ্গে চালু হলেই যানজট অনেকটা কমে যাবে বলে জানান তিনি।

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা না হলে সড়কে যানজট কমবে না উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘সড়কে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে নিয়মিত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১৩টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জেল ও জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও কাজ হচ্ছে না। যতদিন গণপরিবহনে শৃঙ্খলা না আসবে, ততদিন পর্যন্ত যানজট দূর করা কঠিন হবে।’ এজন্য পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও সরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।