চাঁদপুরের নৌপথে ঘন কুয়াশায় ডাকাতির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়ায় প্রতিনিয়ত চাঁদপুরগামী ছোট-বড় যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে ডাকাতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভরা বর্ষায় ঝড়ের কবলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে প্রাণহানির। আর শীত মৌশুমে ঘন কুয়াশায় ভয়ঙ্কর হতে থাকে ডাকাত দলের তৎপরতা। সূত্র মতে, চাঁদপুর থেকে বিভিন্ন রুটে ছোট-বড় ২৪টির মতো যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে থাকে। আর এসব লঞ্চ ঘন কুয়াশায় ধীর গতিতে চলতে দেখলেই আক্রমণ চালায় ডাকাতদল। ডাকাতরা অবশ্য আগে থেকেই স্পীডবোট বা স্টিলবডি ট্রলারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রামণের জন্য প্রস্তুত থাকে। আর সুযোগমতো জায়গায় ডাকাতরা লঞ্চগুলো আটকা পড়তে বা ধীর গতিতে চলতে দেখলেই যাত্রীদের থেকে লুটে নেয় স্ববর্¯^। বিশ্বস্ত সূত্র মতে, গেল ২১শে ডিসেম্বর ডাকাতের কবলে পড়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমবি শাহ আলী-৪। যদিও মেঘনা নদীতে গজারিয়া এলাকায় একইস্থানে একাধিকবার ডাকাতের কবলে পড়ার ঘটনাও সবার জানা। গেল ১৬ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুরের মতলবগামী এমভি হৃদয় যাত্রীবাহী লঞ্চে এবং এর আগে একই স্থানে ১৯শে নভেম্বর এমভি মকবুল-২ লঞ্চে ডাকাতি হয়েছিল। ২১শে ডিসেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে এমভি শাহ আলী-৪ লঞ্চের মালিক আক্তার হোসেন জানান, দুটি স্পিডবোটে করে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও রামদাসহ ডাকাতরা গতিরোধ করে লঞ্চে উঠে পড়ে। এ সময় প্রায় ১৫-২০ ডাকাত যাত্রীদের জিম্মি করে মারধর এবং বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। চাঁদপুর নৌ থানার ওসি মো. জহিরুল হক দৈনিক সংবাদ কে জানান, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের নির্দেশে ২১ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আমরা ৪টি টিম গঠন করে ডাকাতি রোধে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা লঞ্চ টার্মিনালে চেকপোস্টে নজর রাখছি। এছাড়াও ৫ জনের অস্ত্রসহ স্পেশাল টিমও রেখেছি। মূলত শীতের মৌশুমকে প্রাধান্য দিয়ে ডাকাতিরোধে আমাদের এই কর্মতৎপরতা। বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটি চাঁদপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা দৈনিক সংবাদ কে বলেন, যে হারে নৌপথে ঘন ঘন ডাকাতি হচ্ছে। গত ২৫ বছরে এমনটা হয়নি। আগে শুধু থানা পুলিশ ছিল। এখন তো নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড আছে, সঙ্গে থানা পুলিশের ফাঁড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। এরপরও এমন ডাকাতির ঘটনায় আমরা শঙ্কিত ও বিস্মিত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নৌপুলিশের চাঁদপুরের এসপি কামরুজ্জামান জানান, মূলত শীতকালে কুয়াশার কারণে নৌপথে ডাকাতি বেড়ে যায়। কেননা এ সময়ে ঘন কুয়াশায় নৌযানগুলোও ধীরে চলাচল করে। তাই ডাকাতরাও ডাকাতি করে দ্রুত নিজেদের সহজেই লুকিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তিনি আরও জানান, সর্বশেষ ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনার স্পট আমরা চিহ্নিত করেছি। নৌপথে ডাকাতিরোধে প্রয়োজনে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। আমরা ডাকাতদের ধরতে কাজ করে যাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১ , ৭ মাঘ ১৪২৭, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২
সংবাদদাতা, চাঁদপুর
চাঁদপুরের নৌপথে ঘন কুয়াশায় ডাকাতির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়ায় প্রতিনিয়ত চাঁদপুরগামী ছোট-বড় যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে ডাকাতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভরা বর্ষায় ঝড়ের কবলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে প্রাণহানির। আর শীত মৌশুমে ঘন কুয়াশায় ভয়ঙ্কর হতে থাকে ডাকাত দলের তৎপরতা। সূত্র মতে, চাঁদপুর থেকে বিভিন্ন রুটে ছোট-বড় ২৪টির মতো যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে থাকে। আর এসব লঞ্চ ঘন কুয়াশায় ধীর গতিতে চলতে দেখলেই আক্রমণ চালায় ডাকাতদল। ডাকাতরা অবশ্য আগে থেকেই স্পীডবোট বা স্টিলবডি ট্রলারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রামণের জন্য প্রস্তুত থাকে। আর সুযোগমতো জায়গায় ডাকাতরা লঞ্চগুলো আটকা পড়তে বা ধীর গতিতে চলতে দেখলেই যাত্রীদের থেকে লুটে নেয় স্ববর্¯^। বিশ্বস্ত সূত্র মতে, গেল ২১শে ডিসেম্বর ডাকাতের কবলে পড়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমবি শাহ আলী-৪। যদিও মেঘনা নদীতে গজারিয়া এলাকায় একইস্থানে একাধিকবার ডাকাতের কবলে পড়ার ঘটনাও সবার জানা। গেল ১৬ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুরের মতলবগামী এমভি হৃদয় যাত্রীবাহী লঞ্চে এবং এর আগে একই স্থানে ১৯শে নভেম্বর এমভি মকবুল-২ লঞ্চে ডাকাতি হয়েছিল। ২১শে ডিসেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে এমভি শাহ আলী-৪ লঞ্চের মালিক আক্তার হোসেন জানান, দুটি স্পিডবোটে করে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও রামদাসহ ডাকাতরা গতিরোধ করে লঞ্চে উঠে পড়ে। এ সময় প্রায় ১৫-২০ ডাকাত যাত্রীদের জিম্মি করে মারধর এবং বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। চাঁদপুর নৌ থানার ওসি মো. জহিরুল হক দৈনিক সংবাদ কে জানান, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের নির্দেশে ২১ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আমরা ৪টি টিম গঠন করে ডাকাতি রোধে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা লঞ্চ টার্মিনালে চেকপোস্টে নজর রাখছি। এছাড়াও ৫ জনের অস্ত্রসহ স্পেশাল টিমও রেখেছি। মূলত শীতের মৌশুমকে প্রাধান্য দিয়ে ডাকাতিরোধে আমাদের এই কর্মতৎপরতা। বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটি চাঁদপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা দৈনিক সংবাদ কে বলেন, যে হারে নৌপথে ঘন ঘন ডাকাতি হচ্ছে। গত ২৫ বছরে এমনটা হয়নি। আগে শুধু থানা পুলিশ ছিল। এখন তো নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড আছে, সঙ্গে থানা পুলিশের ফাঁড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। এরপরও এমন ডাকাতির ঘটনায় আমরা শঙ্কিত ও বিস্মিত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নৌপুলিশের চাঁদপুরের এসপি কামরুজ্জামান জানান, মূলত শীতকালে কুয়াশার কারণে নৌপথে ডাকাতি বেড়ে যায়। কেননা এ সময়ে ঘন কুয়াশায় নৌযানগুলোও ধীরে চলাচল করে। তাই ডাকাতরাও ডাকাতি করে দ্রুত নিজেদের সহজেই লুকিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তিনি আরও জানান, সর্বশেষ ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনার স্পট আমরা চিহ্নিত করেছি। নৌপথে ডাকাতিরোধে প্রয়োজনে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। আমরা ডাকাতদের ধরতে কাজ করে যাচ্ছি।