রাজারবেশে রাজ্যে ফিরলেন সাকিব

আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা ও করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকায় দীর্ঘ ১৬ মাস পর খেলতে নেমে প্রায় একাই ক্যারিবীয়দের গুঁড়িয়ে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১২৩ রানের। সেই লক্ষ্যও পার করে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। তবে  সাকিব জানিয়েছেন, এতদিন পর ফেরাটা কঠিন হলেও নিজের পারফরম্যান্সে তিনি খুশি। ম্যাচের এগারতম ওভারে বল হাতে আসেন সাকিব। নিজের প্রথম ওভারে অন্তত তিনবার ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কানায় বল লাগান সাকিব, সম্ভাবনা জাগান উইকেটের। প্রথম ওভারে উইকেট না পেলেও, পরে সাকিবের ঘূর্ণিতেই কুপোকাত হয়েছে উইন্ডিজ। প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার বল করেছেন তিনি। ক্যারিবীয় ইনিংসের ২৩তম ওভারে যখন আক্রমণ থেকে সরানো হয় সাকিবকে, তখন তার নামের পাশে বোলিং ফিগার ৭-২-৮-৩; এই স্পেলে ৩৪টি বলই ছিল ডট। সবমিলিয়ে সাকিবের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় : ৭.২-২-৮-৪!। ব্যাটসম্যানদের ঘাম ঝরা ম্যাচে ব্যাট হাতেও খুব একটা খারাপ করলেন না। ব্যাট হাতে সাকিব করেন ৪৩ বলে ১৯ রান।  সবমিলিয়ে বিরতি কাটিয়ে বাংলাদেশের ফেরা আর সাকিবের ফেরাটা আনন্দের উপলক্ষ হয়ে রইলো। ম্যাচসেরা হয়েছেনও তিনি।

সাকিব বলেছেন, ‘ভালো লাগছে। ১৬-১৭ মাস পর খেলাটা সহজ নয়। তবে যেভাবে পারফর্ম করেছি, আমি খুশি। বিষয়টা হলো, আমরা ১০ মাস কিছুই খেলিনি। তাই সবাই খেলার জন্য মুখিয়ে ছিল। শুরুতে সবার মধ্যেই নার্ভাসনেস ছিল, একইসঙ্গে উত্তেজনাও কাজ করেছে। আমার পরিকল্পনা ছিল যে সবকিছু যত সহজ রাখা যায়, যত ভালো জায়গায় বোলিং করা যায় এবং বাকিটা উইকেটের (পিচ) হাতে ছেড়ে দেয়া।’

সাকিবের ৮ রানে ৪ উইকেট নেয়ার ইনিংসে আলো কেড়েছেন অভিষিক্ত হাসানও। পরপর দুই বলে দুই উইকেটসহ মোট ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ২১ বছর বয়সী হাসান। তার বোলিংয়ে মুগ্ধ সাকিব। শুধু হাসান নয়, পাইপলাইনে থাকা অন্যান্য তরুণ ফাস্ট বোলারদের ব্যাপারেও আশাবাদী সাবেক বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। সাকিব বলেছেন, ‘আমাদের পাইপলাইনে বেশ কয়েকজন ভালো পেসার আছে। তারা সিস্টেমের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে। আমি সবশেষ টি-২০ টুর্নামেন্ট (বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ) খেলেছি, তখন দেখেছি তরুণ পেসারদের। সবাই নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বোলিং করে। আমি আর হাসান মাহমুদ একই দলে ছিলাম। তাকে এমন বোলিং করতে দেখা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়।’

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আরও বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছি। ওরা ম্যাচ খেলতে আসছে। হ্যাঁ ওদের ৬-৭ জন মূল খেলোয়াড় নেই। আর ওদের মূল দল যেটা আমরা বলছি সেটাকে আমরা বিশ্বকাপে হারিয়ে এসেছি। আবার ওদের দেশে হারিয়েছি। ওদের সেরা টিমটা ভালো করতে পারছে না বলেই হয়তো এই টিম পাঠিয়ে দিয়েছে। যেন বেটার রেজাল্ট করতে পারে। আপনাদের চিন্তাধারা সম্পূর্ণ ভুল। ওরা সব সময় বেটার। আমরা সব সময় ওদের রেসপেক্ট করি। তারা ভালো ক্রিকেট খেলতে সামর্থ্যবান। আাজকের উইকেট কঠিন ছিল। হয়তো অভিজ্ঞতার কারণে বেটার ক্রিকেট খেলেছি। কিন্তু তার মানে এই না যে আমরা সামনের দুই ম্যাচ আরামে জিতে যাব। আমাদের পরিশ্রম করতে হবে।

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১ , ৭ মাঘ ১৪২৭, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

রাজারবেশে রাজ্যে ফিরলেন সাকিব

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা ও করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকায় দীর্ঘ ১৬ মাস পর খেলতে নেমে প্রায় একাই ক্যারিবীয়দের গুঁড়িয়ে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১২৩ রানের। সেই লক্ষ্যও পার করে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। তবে  সাকিব জানিয়েছেন, এতদিন পর ফেরাটা কঠিন হলেও নিজের পারফরম্যান্সে তিনি খুশি। ম্যাচের এগারতম ওভারে বল হাতে আসেন সাকিব। নিজের প্রথম ওভারে অন্তত তিনবার ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কানায় বল লাগান সাকিব, সম্ভাবনা জাগান উইকেটের। প্রথম ওভারে উইকেট না পেলেও, পরে সাকিবের ঘূর্ণিতেই কুপোকাত হয়েছে উইন্ডিজ। প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার বল করেছেন তিনি। ক্যারিবীয় ইনিংসের ২৩তম ওভারে যখন আক্রমণ থেকে সরানো হয় সাকিবকে, তখন তার নামের পাশে বোলিং ফিগার ৭-২-৮-৩; এই স্পেলে ৩৪টি বলই ছিল ডট। সবমিলিয়ে সাকিবের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় : ৭.২-২-৮-৪!। ব্যাটসম্যানদের ঘাম ঝরা ম্যাচে ব্যাট হাতেও খুব একটা খারাপ করলেন না। ব্যাট হাতে সাকিব করেন ৪৩ বলে ১৯ রান।  সবমিলিয়ে বিরতি কাটিয়ে বাংলাদেশের ফেরা আর সাকিবের ফেরাটা আনন্দের উপলক্ষ হয়ে রইলো। ম্যাচসেরা হয়েছেনও তিনি।

সাকিব বলেছেন, ‘ভালো লাগছে। ১৬-১৭ মাস পর খেলাটা সহজ নয়। তবে যেভাবে পারফর্ম করেছি, আমি খুশি। বিষয়টা হলো, আমরা ১০ মাস কিছুই খেলিনি। তাই সবাই খেলার জন্য মুখিয়ে ছিল। শুরুতে সবার মধ্যেই নার্ভাসনেস ছিল, একইসঙ্গে উত্তেজনাও কাজ করেছে। আমার পরিকল্পনা ছিল যে সবকিছু যত সহজ রাখা যায়, যত ভালো জায়গায় বোলিং করা যায় এবং বাকিটা উইকেটের (পিচ) হাতে ছেড়ে দেয়া।’

সাকিবের ৮ রানে ৪ উইকেট নেয়ার ইনিংসে আলো কেড়েছেন অভিষিক্ত হাসানও। পরপর দুই বলে দুই উইকেটসহ মোট ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ২১ বছর বয়সী হাসান। তার বোলিংয়ে মুগ্ধ সাকিব। শুধু হাসান নয়, পাইপলাইনে থাকা অন্যান্য তরুণ ফাস্ট বোলারদের ব্যাপারেও আশাবাদী সাবেক বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। সাকিব বলেছেন, ‘আমাদের পাইপলাইনে বেশ কয়েকজন ভালো পেসার আছে। তারা সিস্টেমের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে। আমি সবশেষ টি-২০ টুর্নামেন্ট (বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ) খেলেছি, তখন দেখেছি তরুণ পেসারদের। সবাই নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বোলিং করে। আমি আর হাসান মাহমুদ একই দলে ছিলাম। তাকে এমন বোলিং করতে দেখা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়।’

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আরও বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছি। ওরা ম্যাচ খেলতে আসছে। হ্যাঁ ওদের ৬-৭ জন মূল খেলোয়াড় নেই। আর ওদের মূল দল যেটা আমরা বলছি সেটাকে আমরা বিশ্বকাপে হারিয়ে এসেছি। আবার ওদের দেশে হারিয়েছি। ওদের সেরা টিমটা ভালো করতে পারছে না বলেই হয়তো এই টিম পাঠিয়ে দিয়েছে। যেন বেটার রেজাল্ট করতে পারে। আপনাদের চিন্তাধারা সম্পূর্ণ ভুল। ওরা সব সময় বেটার। আমরা সব সময় ওদের রেসপেক্ট করি। তারা ভালো ক্রিকেট খেলতে সামর্থ্যবান। আাজকের উইকেট কঠিন ছিল। হয়তো অভিজ্ঞতার কারণে বেটার ক্রিকেট খেলেছি। কিন্তু তার মানে এই না যে আমরা সামনের দুই ম্যাচ আরামে জিতে যাব। আমাদের পরিশ্রম করতে হবে।