সবুজ শাকের ডগায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন

পালংশাক, মুলা শাক, কলমি শাক, চুকাই শাক, ধনে পাতা কিংবা কুমড়ো শাকের সবুজ ডগাতেই ওদের জীবন জীবিকা আর, বেঁচে থাকার সুখের স্বপ্ন। কখনও কখনও লাভের বদলে লোকসান ও হয়। আবার কখনও ভালো দাম পেয়ে পুষে যায় । তবু ও বন্ধ হয় না ওদের পথচলা। একটি ক্ষেতের ফলন ফুরোনোর আগেই আরেকটি ক্ষেতে স্বপ্ন বুনা শুরু হয়। এভাবেই সবুজ শাকের সঙ্গেই চলে ওদের সুখ দুঃখ আর জীবন চক্র।

মীরসরাই উপজেলার ৯নং মীরসরাই ইউনিয়ন ও পৌরসভার একাংশ মিলে তালবাড়িয়া গ্রাম। কৃষিপ্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলার এই গ্রাম ও কৃষিতে অনন্য দৃষ্টান্তকারী অনেক কৃষকের বসবাস। অনেক সফল কৃষকের পাশাপাশি শাক চাষি কৃষক হেলাল উদ্দিন (৩৮) এই গ্রামের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বছরের নানা মৌসুমে বিভিন্ন শাক চাষ করাই প্রধান জীবিকা তার। কখনও কখনও মা, চাচি, দাদি, প্রতিবেশী নারী পুরুষ সবাই সাহায্য করে হেলালকে। সম্প্রতি সরজমিন শাকচাষ দেখতে গেলে দেখা যায় পৌষের বিকেলে পাশের গাঁয়ের মাসি ও বৌদি, নিজের বধূসহ কয়েকজন মিলে শাক তুলছে আর আঁটি বেঁধে তৈরি করে রাখছে পরদিন হাটে বিক্রির জন্য। এ সময় শাক চাষ নিয়ে সুখ দুঃখ জানতে চাইলে হেলাল উদ্দিন বলে সারা বছরই শাক চাষ করেই সংসার চলে। পার্শ^বর্তী অনেকে সাহায্য করে ওদের ও জীবিকা চলে। এবার ১২ কড়া জমিতে পালংশাক করেছে।

এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। প্রতিদিন হাজার টাকার শাক বিক্রি করছে। তবে এবার আগাম শাক না আসায় অন্য এলাকা থেকে অল্প দামের শাক বাজারে চলে আসায় দাম নিম্নমুখী। তাই আঁটি ১৫ টাকায় ও পাইকারি বিক্রি করতে হয়। এবার খরচ পুষিয়ে ও উঠবে না তাই। তবে পরের মৌসুমে ভালো দাম পাবার আশা আছে। একটি শাকের ক্ষেত থেকে বিক্রি শেষ হবার আগেই আরেকটি ক্ষেত প্রস্তুত করেন তিনি। আয়ের ও হিসাব করেন না। ব্যায়ের ও হিসাব করেন না। তবে বছরে লাখ টাকা ব্যয় হয়। খরচ উঠে নিজে ও চলছেন।

পরিবারের ভরণ-পোষণ ও চলছে। আবার কয়েকজনের জীবিকাও। শাক চাষ করেই সুখ দুঃখ সবই চালান। স্বপ্ন দেখেন শাক দিয়েই। আগামীতে আরও কোন বিশেষ উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে হেলাল বলে বর্গা জমি নিয়ে ফলন আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এতেই প্রতিয়মান হয় শাকের সবুজ আর লালচে ডগায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন এই শাক চাষির। তবে হেলাল অভিযোগ করে কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহযোগিতা, সার বা বীজের কিংবা কীটনাশকের কোন সহযোগিতা কখনও পায়নি সে। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার হাজী নুরুল আলম জানান কৃষকদের সব পরামর্শ ও সেবা দিতে প্রস্তুত কৃষি বিভাগ। আমাদের মাঠকর্মী কিংবা আমাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলেই যেকোন সহযোগিতা করব আমরা।

image
আরও খবর
সময়োচিত পদক্ষেপে করোনাকালেও বিশ্বমন্দা এড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী
ইশরাত নিশাত স্মরণে ‘এক জীবনের থিয়েটার’ অনুষ্ঠান
বরগুনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোজ্ঞ প্রকাশনা
কুষ্টিয়ার এসপিকে হাইকোর্টে তলব
প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে করোনা বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ অর্থমন্ত্রী
মাদকের এডিসহ বরখাস্ত ৫
রাজশাহীতে বিয়ের শর্তে চিকিৎসকের জামিন
ঘাতক চালক রিমান্ডে
২৭টি ফ্ল্যাট কর্মচারীদের অবৈধ দখলে
কারাগারে নয়, বই হাতে সংশোধনে পাঠালেন আদালত
খেলার মাঠ ও বিনোদনকেন্দ্রের উদ্যোগ নেয়া হবে রেজাউল
হতদরিদ্রদের আবাসন সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার দেব শাহাদাত
সব ছিনিয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দিত ওরা

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১ , ৭ মাঘ ১৪২৭, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সবুজ শাকের ডগায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন

রণজিত ধর, মীরসরাই (চট্টগ্রাম)

image

পালংশাক, মুলা শাক, কলমি শাক, চুকাই শাক, ধনে পাতা কিংবা কুমড়ো শাকের সবুজ ডগাতেই ওদের জীবন জীবিকা আর, বেঁচে থাকার সুখের স্বপ্ন। কখনও কখনও লাভের বদলে লোকসান ও হয়। আবার কখনও ভালো দাম পেয়ে পুষে যায় । তবু ও বন্ধ হয় না ওদের পথচলা। একটি ক্ষেতের ফলন ফুরোনোর আগেই আরেকটি ক্ষেতে স্বপ্ন বুনা শুরু হয়। এভাবেই সবুজ শাকের সঙ্গেই চলে ওদের সুখ দুঃখ আর জীবন চক্র।

মীরসরাই উপজেলার ৯নং মীরসরাই ইউনিয়ন ও পৌরসভার একাংশ মিলে তালবাড়িয়া গ্রাম। কৃষিপ্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলার এই গ্রাম ও কৃষিতে অনন্য দৃষ্টান্তকারী অনেক কৃষকের বসবাস। অনেক সফল কৃষকের পাশাপাশি শাক চাষি কৃষক হেলাল উদ্দিন (৩৮) এই গ্রামের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বছরের নানা মৌসুমে বিভিন্ন শাক চাষ করাই প্রধান জীবিকা তার। কখনও কখনও মা, চাচি, দাদি, প্রতিবেশী নারী পুরুষ সবাই সাহায্য করে হেলালকে। সম্প্রতি সরজমিন শাকচাষ দেখতে গেলে দেখা যায় পৌষের বিকেলে পাশের গাঁয়ের মাসি ও বৌদি, নিজের বধূসহ কয়েকজন মিলে শাক তুলছে আর আঁটি বেঁধে তৈরি করে রাখছে পরদিন হাটে বিক্রির জন্য। এ সময় শাক চাষ নিয়ে সুখ দুঃখ জানতে চাইলে হেলাল উদ্দিন বলে সারা বছরই শাক চাষ করেই সংসার চলে। পার্শ^বর্তী অনেকে সাহায্য করে ওদের ও জীবিকা চলে। এবার ১২ কড়া জমিতে পালংশাক করেছে।

এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। প্রতিদিন হাজার টাকার শাক বিক্রি করছে। তবে এবার আগাম শাক না আসায় অন্য এলাকা থেকে অল্প দামের শাক বাজারে চলে আসায় দাম নিম্নমুখী। তাই আঁটি ১৫ টাকায় ও পাইকারি বিক্রি করতে হয়। এবার খরচ পুষিয়ে ও উঠবে না তাই। তবে পরের মৌসুমে ভালো দাম পাবার আশা আছে। একটি শাকের ক্ষেত থেকে বিক্রি শেষ হবার আগেই আরেকটি ক্ষেত প্রস্তুত করেন তিনি। আয়ের ও হিসাব করেন না। ব্যায়ের ও হিসাব করেন না। তবে বছরে লাখ টাকা ব্যয় হয়। খরচ উঠে নিজে ও চলছেন।

পরিবারের ভরণ-পোষণ ও চলছে। আবার কয়েকজনের জীবিকাও। শাক চাষ করেই সুখ দুঃখ সবই চালান। স্বপ্ন দেখেন শাক দিয়েই। আগামীতে আরও কোন বিশেষ উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে হেলাল বলে বর্গা জমি নিয়ে ফলন আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এতেই প্রতিয়মান হয় শাকের সবুজ আর লালচে ডগায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন এই শাক চাষির। তবে হেলাল অভিযোগ করে কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহযোগিতা, সার বা বীজের কিংবা কীটনাশকের কোন সহযোগিতা কখনও পায়নি সে। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার হাজী নুরুল আলম জানান কৃষকদের সব পরামর্শ ও সেবা দিতে প্রস্তুত কৃষি বিভাগ। আমাদের মাঠকর্মী কিংবা আমাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলেই যেকোন সহযোগিতা করব আমরা।