হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম দূর করুন

হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সুনামগঞ্জে একের পর এক প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এসবের কাজ শুরুর কোন আলামত নেই। উপরন্তু আরও প্রকল্প নেয়ার জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌড়ঝাঁপ চলছে। অভিযোগ উঠেছে, মধ্যস্বত্বভোগীরা উপজেলা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কমিটিকে প্রভাবিত করে প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে প্রকল্প গ্রহণে বাধ্য করছে।

সুনামগঞ্জে দু-তিন বছর পরপরই বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি হাওরে ঢুকে পড়ে। কৃষককে পথে বসিয়ে সোনার ধান জলের অতলে হারিয়ে যায়। লক্ষণীয় হলো, যতবারই ফসলডুবি হয়, ততবারই এর কারণ হিসেবে দেখা যায়, নির্মাণ ত্রুটি কিংবা সময়মতো বাঁধ সংস্কার না করা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফসলডুবির পর সরকার হাওরের ফসল রক্ষায় বিশেষ তৎপরতা দেখিয়েছিল। সেই তৎপরতার অংশ হিসেবে নতুন নতুন জায়গায় বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনাও হয়েছে। কিন্তু আশঙ্কার কথা হলো, নির্ধারিত সময় কাজ শুরু হয়নি। বরং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে এবং ব্যয় বৃদ্ধির সুযোগ খোঁজা হচ্ছে।

উপজেলা পর্যায় থেকে হাওরে গিয়ে সুবিধাভোগী, জমির মালিক ও প্রকৃত কৃষকদের নেতৃত্বে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের কথা ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। সুবিধাভোগী প্রভাবশালীদের নিয়ে গণশুনানি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে প্রকল্প থেকে প্রকৃত কৃষকরা বাদ পড়েছেন। এসব অনিয়মের ঘটনায় বিভিন্ন সময় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজটি হয়নি।

এ অনিয়ম কোনভাবেই কাম্য নয়। প্রকৃত কৃষকদের সম্পৃক্ত করার জন্যই পিআইসি করা। এ কমিটি থেকে কৃষকরা বাদ পড়েন কিভাবে? আমরা চাই, কৃষকদের মধ্যে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের সবার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হোক। এক্ষেত্রে যদি কারও দোষ প্রমাণিত হয় তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হোক।

যেসব কৃষক পিআইসি থেকে বাদ পড়েছেন তাদের যুক্ত করে বাঁধ নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। কোন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যেন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে বঁধ নির্মাণে যাতে কোন ধরনের ফাঁকি না থাকে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।

সুনামগঞ্জের মানুষ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। কোনো কারণে হাওরে ফসলডুবি হলে কৃষকদের কষ্টের সীমা থাকে না। বিষয়টি অবশ্যই সবার মনে রাখা উচিত। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া দরকার।

শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১ , ৮ মাঘ ১৪২৭, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম দূর করুন

হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সুনামগঞ্জে একের পর এক প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এসবের কাজ শুরুর কোন আলামত নেই। উপরন্তু আরও প্রকল্প নেয়ার জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌড়ঝাঁপ চলছে। অভিযোগ উঠেছে, মধ্যস্বত্বভোগীরা উপজেলা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কমিটিকে প্রভাবিত করে প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে প্রকল্প গ্রহণে বাধ্য করছে।

সুনামগঞ্জে দু-তিন বছর পরপরই বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি হাওরে ঢুকে পড়ে। কৃষককে পথে বসিয়ে সোনার ধান জলের অতলে হারিয়ে যায়। লক্ষণীয় হলো, যতবারই ফসলডুবি হয়, ততবারই এর কারণ হিসেবে দেখা যায়, নির্মাণ ত্রুটি কিংবা সময়মতো বাঁধ সংস্কার না করা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফসলডুবির পর সরকার হাওরের ফসল রক্ষায় বিশেষ তৎপরতা দেখিয়েছিল। সেই তৎপরতার অংশ হিসেবে নতুন নতুন জায়গায় বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনাও হয়েছে। কিন্তু আশঙ্কার কথা হলো, নির্ধারিত সময় কাজ শুরু হয়নি। বরং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে এবং ব্যয় বৃদ্ধির সুযোগ খোঁজা হচ্ছে।

উপজেলা পর্যায় থেকে হাওরে গিয়ে সুবিধাভোগী, জমির মালিক ও প্রকৃত কৃষকদের নেতৃত্বে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের কথা ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। সুবিধাভোগী প্রভাবশালীদের নিয়ে গণশুনানি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে প্রকল্প থেকে প্রকৃত কৃষকরা বাদ পড়েছেন। এসব অনিয়মের ঘটনায় বিভিন্ন সময় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজটি হয়নি।

এ অনিয়ম কোনভাবেই কাম্য নয়। প্রকৃত কৃষকদের সম্পৃক্ত করার জন্যই পিআইসি করা। এ কমিটি থেকে কৃষকরা বাদ পড়েন কিভাবে? আমরা চাই, কৃষকদের মধ্যে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের সবার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হোক। এক্ষেত্রে যদি কারও দোষ প্রমাণিত হয় তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হোক।

যেসব কৃষক পিআইসি থেকে বাদ পড়েছেন তাদের যুক্ত করে বাঁধ নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। কোন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যেন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে বঁধ নির্মাণে যাতে কোন ধরনের ফাঁকি না থাকে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।

সুনামগঞ্জের মানুষ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। কোনো কারণে হাওরে ফসলডুবি হলে কৃষকদের কষ্টের সীমা থাকে না। বিষয়টি অবশ্যই সবার মনে রাখা উচিত। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া দরকার।