আয়োডিনের দাম কমালো

আয়োডিনযুক্ত লবণের প্রধান উপাদান পটাসিয়াম আয়োডেটের (আয়োডিন) দাম কমিয়ে পুনঃনির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। বিসিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে গত বুধবার বিসিক মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক অখিল রঞ্জন তরফদার সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ তৈরি কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়োডিনের ঘাটতি পূরণ (সিআইডিডি) প্রকল্প স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে পটাসিয়াম আয়োডেটের (আয়োডিন) দাম কমিয়ে পুনঃনির্ধারণ করার বিষয়টি বিসিকের ৮টি লবণ জোনে কর্মরত কর্মকর্তা ও লবণ মিল মালিকদের জানিয়ে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, খাবার লবণ আয়োডিনযুক্তকরণে ব্যবহৃত হয় পটাসিয়াম আয়োডেট। পটাসিয়াম আয়োডেট বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় না। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতিটন লবণ পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত করতে ৭০-৯০ গ্রাম পটাসিয়াম আয়োডেটের প্রয়োজন হয়। প্রতিবছর লবণে আয়োডিনযুক্তকরণে কমবেশি প্রায় ৩০ মেট্রিক টন পটাসিয়াম আয়োডেট ব্যবহৃত হয়। একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদেশ থেকে পটাসিয়াম আয়োডেট আমদানি করে লবণ কারখানার চাহিদা অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে পটাসিয়াম আয়োডেট সরবরাহ করে বিসিক। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পটাসিয়াম আয়োডেটের দাম প্রতিকেজি ৪৭০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতে লবণ কারখানা সমূহকে সহায়তার অংশ হিসেবে পটাসিয়াম আয়োডেটের দাম আরেক দফা কমিয়ে প্রতিকেজি ২৫০০ টাকা মূল্যে লবণ কারখানা সমূহকে সরবরাহের নির্দেশ প্রদান করেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, এনডিসি।

দেশের লবণ শিল্পকে বাঁচাতে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে এটি একটি অন্যতম পদক্ষেপ। ১০০ ভাগ মানুষকে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে বিসিক। পটাসিয়াম আয়োডেটের মূল্যহ্রাস লবণ শিল্পকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। লবণ কারখানা মালিকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে পরিমিত মাত্রায় (উৎপাদনকালে ৩০-৫০পিপিএম/ প্রতি কেজিতে ৩০-৫০ মিলিগ্রাম) লবণে আয়োডিন মিশ্রণ নিশ্চিত করবে বলে বিসিক কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিসিক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ তৈরি কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়োডিনের ঘাটতি পূরণ (সিআইডিডি) প্রকল্প একটি জনস্বাস্থ্য প্রকল্প। সিআইডিডি প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় ভোক্তাপর্যায়ে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন ও নায্যমূল্যে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে ১ জানুয়ারি ২০২১ হতে প্রতিকেজি পটাসিয়াম আয়োডেটের মূল্য ৩০০০ টাকার পরিবর্তে ২৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। জাতীয় লবণনীতি অনুযায়ী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় বিসিক লবণ শিল্পের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে।

কক্সবাজারে অবস্থিত বিসিকের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যালয়ের আওতায় ১২টি লবণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণ চাষে সার্বিক সহায়তা প্রদান এবং নিয়মিতভাবে লবণ উৎপাদন ও মজুদ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। পাশাপাশি বিসিক সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ তৈরি কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়োডিন ঘাটতি পূরণ (সিআইডিডি) প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের লবণ প্রক্রিয়াজাতকরণ মিলসমূহকে ৮টি লবণ জোনে ভাগ করে লবণ মিলসমূহ হতে নিয়মিতভাবে তথ্য সংগ্রহসহ সার্বিক কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

শনিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২১ , ৯ মাঘ ১৪২৭, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২

আয়োডিনের দাম কমালো

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

আয়োডিনযুক্ত লবণের প্রধান উপাদান পটাসিয়াম আয়োডেটের (আয়োডিন) দাম কমিয়ে পুনঃনির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। বিসিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে গত বুধবার বিসিক মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক অখিল রঞ্জন তরফদার সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ তৈরি কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়োডিনের ঘাটতি পূরণ (সিআইডিডি) প্রকল্প স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে পটাসিয়াম আয়োডেটের (আয়োডিন) দাম কমিয়ে পুনঃনির্ধারণ করার বিষয়টি বিসিকের ৮টি লবণ জোনে কর্মরত কর্মকর্তা ও লবণ মিল মালিকদের জানিয়ে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, খাবার লবণ আয়োডিনযুক্তকরণে ব্যবহৃত হয় পটাসিয়াম আয়োডেট। পটাসিয়াম আয়োডেট বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় না। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতিটন লবণ পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত করতে ৭০-৯০ গ্রাম পটাসিয়াম আয়োডেটের প্রয়োজন হয়। প্রতিবছর লবণে আয়োডিনযুক্তকরণে কমবেশি প্রায় ৩০ মেট্রিক টন পটাসিয়াম আয়োডেট ব্যবহৃত হয়। একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদেশ থেকে পটাসিয়াম আয়োডেট আমদানি করে লবণ কারখানার চাহিদা অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে পটাসিয়াম আয়োডেট সরবরাহ করে বিসিক। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পটাসিয়াম আয়োডেটের দাম প্রতিকেজি ৪৭০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতে লবণ কারখানা সমূহকে সহায়তার অংশ হিসেবে পটাসিয়াম আয়োডেটের দাম আরেক দফা কমিয়ে প্রতিকেজি ২৫০০ টাকা মূল্যে লবণ কারখানা সমূহকে সরবরাহের নির্দেশ প্রদান করেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, এনডিসি।

দেশের লবণ শিল্পকে বাঁচাতে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে এটি একটি অন্যতম পদক্ষেপ। ১০০ ভাগ মানুষকে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে বিসিক। পটাসিয়াম আয়োডেটের মূল্যহ্রাস লবণ শিল্পকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। লবণ কারখানা মালিকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে পরিমিত মাত্রায় (উৎপাদনকালে ৩০-৫০পিপিএম/ প্রতি কেজিতে ৩০-৫০ মিলিগ্রাম) লবণে আয়োডিন মিশ্রণ নিশ্চিত করবে বলে বিসিক কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিসিক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ তৈরি কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়োডিনের ঘাটতি পূরণ (সিআইডিডি) প্রকল্প একটি জনস্বাস্থ্য প্রকল্প। সিআইডিডি প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় ভোক্তাপর্যায়ে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন ও নায্যমূল্যে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে ১ জানুয়ারি ২০২১ হতে প্রতিকেজি পটাসিয়াম আয়োডেটের মূল্য ৩০০০ টাকার পরিবর্তে ২৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। জাতীয় লবণনীতি অনুযায়ী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় বিসিক লবণ শিল্পের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে।

কক্সবাজারে অবস্থিত বিসিকের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যালয়ের আওতায় ১২টি লবণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণ চাষে সার্বিক সহায়তা প্রদান এবং নিয়মিতভাবে লবণ উৎপাদন ও মজুদ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। পাশাপাশি বিসিক সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ তৈরি কার্যক্রমের মাধ্যমে আয়োডিন ঘাটতি পূরণ (সিআইডিডি) প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের লবণ প্রক্রিয়াজাতকরণ মিলসমূহকে ৮টি লবণ জোনে ভাগ করে লবণ মিলসমূহ হতে নিয়মিতভাবে তথ্য সংগ্রহসহ সার্বিক কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।