ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে

সারাদেশে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আবাসন হস্তান্তর

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর গতকাল আনুষ্ঠনিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আবাসন হস্তান্তর উদ্বোধন করেন। বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের ৩৩৬ জন ক-শ্রেণীর ভুমিহীনকে বসতঘর উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘর পেয়ে উপকারভোগীদের সমন্বয়ে আয়োজিত ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘর প্রদান করেন। এ সময় বাগেরহাটের নবাগত জেলা প্রশাসক আনম ফয়জুল হক উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এ ঘর বিতরণ করেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, একসঙ্গে খাস জমিতে একই অবকাঠামোর সেমিপাকা ঘর ও জমি স্থায়ীভাবে ভোগ করবেন ভূমিহীনরা। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন দেশ এটা পেরেছেন বলে আমার জানা নেই। যা পেরেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা তার সাহসিকতার ফসল। ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলায় ৪৩৩টি ঘরের মধ্যে ৩৩৬ জনকে এদিন ঘর হস্তান্তর করা হয়। জেলার ৯টি উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে একই সময় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘর বিতরণ করেন এবং সব ইউএনওরা এ ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ভিটেমাটিবিহীন মানুষ নতুন ঠিকানা খুঁজে পেলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১ হাজার ৩শ’ ১৯ পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়। গতকাল বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের মানপুরা সল্লাহ গ্রামে ৩৬টি পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ উপকারভোগীদের হাতে কবুলিয়াত দলিল তুলে দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মদ শিমুল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসি, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ন কবির খোন্দকার, জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মঈনুদ্দিন মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আবদুল ওদুদ, পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মো. রুহুল আমিন, ৫৩ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্র্র্র্নেল মোহাম্মদ সুরুজ মিয়া, সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দেবেন্দ্র নাথ উরাঁ ও অন্যান্য কর্মকর্তাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নসিমুদ্দীন নসুকে নবনির্মিত পাকা ঘর প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ তাকে চৌডালার নতুনবাজারে নতুন ঘর তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে জমির দলিল হস্তান্তর করবেন।

এ সময় তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে। এছাড়া সংসার চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্য দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিয়েছেন। জাতির জনকের কন্যার সুবাদে ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।

কোটালীপাড়া : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ ২য় প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন ৩০টি পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর ও জমির দলিল বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ৩০টি পরিবারের মধ্যে এসব বিতরণ করা হয়। বেলা দশটায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ভূমি ও ঘর প্রদান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ৩০টি পরিবারের মধ্যে জমির দলিল ও নতুন নির্মিত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। কোটালীপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে এসব বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মাহফজুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইকবাল হোসেন, জেলাত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহমান, কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, পৌর মেয়র হাজী কামাল হোসেন শেখ, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহসিনউদ্দিন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আ. খালেক হাওলাদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মী রানী সরকার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান, ওসি শেখ লুৎফর রহমান হিরন, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে নতুন ঘরের চাবি ও জমির দলিল হাতে পেয়ে জরিনা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি জানান, সন্তানদের নিয়ে মাথা গুজবার স্থান ছিলনা। আজ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেলাম, এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস করতে পারব।

শালিখা (মাগুরা) : শালিখায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫০টি পরিবারকে জমি ও গৃহের চাবি প্রদান করা হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থ্যপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় উপজেলার উজগ্রামে নির্মিত ঘরগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্রধান অতিথি মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বিরেন শিকদার জমির দলিলসহ পাকা বাড়ির চাবি গৃহহীন পরিবারের হাতে হস্তান্তর করেন।

উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মোহম্মদ বাতেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মাগুরার উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরুজ্জমান, শালিখা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তরীকুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম ও জেসমিন আক্তার, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার দে, সাধারণ স¤পাদক ও আড়পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আরজ আলী বিশ্বাস, ধনেশ্বরগাতী ইউপি চেয়ারম্যান বিমলেন্দু শিকদার, শালিখা প্রেসক্লাবের সাধারণ স¤পাদক আ. রব মিয়া, স¤পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাবিবুল হকসহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন দপ্তর, পতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ডিমলা (নীলফামারী) : মুজিববর্ষ উপলক্ষে নীলফামারীর ডিমলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমি ও গৃহ পেলেন ১৮৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।

গতকাল সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রথম পর্যায় ১৮৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে জমি ও গৃহ প্রদানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে উপজেলার সদর ইউনিয়নে ৩০টি, বালাপাড়া ইউনিয়নে ৫০টি, খালিশা চাপানী ইউনিয়নে ৩০টি, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নে ১০টি, টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে ১০টি ও পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নে ১৫টিসহ মোট ১৮৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমি ও গৃহ প্রদানের উদ্বোধন করেন ডিমলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম।

এ সময় ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নিরেন্দ্র নাথ রায়, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সিদ্দিকা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান মানিক, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহাকারী প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার কামরুল ইসলাম, খসাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন, বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুইয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নওগাঁ : লাল ও আকাশি নীল রংয়ের ছাউনির সারি সারি বাড়িগুলো দেখে অসহায় ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রধানমন্ত্রীর উপহার এসব বাড়িগুলোতে বসবাস করার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলেন গৃহহীন পরিবারগুলো। আর মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে ১০৫৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। আশ্রায়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার এই প্রতিপাদ্যের আলোকে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার হিসেবে দুই শতক জমিসহ বাড়ি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর গতকাল তাদের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর, মান্দা, পোরশা ও নিয়ামতপুর উপজেলার বেশ কয়েকজন উপকারভোগী জানান, নিজেদের কোন ঘর ছিল না। কেউ রাস্তার ধারে আবার কেউ অন্যের জায়গায় পাটখড়ি ও পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি ঘরে কোন রকম থেকেছেন বহু বছর। শুধু তাই নয়, ঝড়-বৃষ্টির সময় অহসায় জীবন-যাপন করতে হয়েছে তাদের। আর আজ সেই জায়গায় প্রধানমন্ত্রী মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে। পাকা ঘর পেয়ে আমরা বেজায় খুশি। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও দোয়া করেছেন।

নওগাঁ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকা ঘরগুলোর গুণগত মান রক্ষা করে নির্মাণ করা হয়েছে। এসব পাকা ঘর পেয়ে খুশি গৃহহীনরা। তারা কোনদিন কল্পনাও করেনি পাকা ঘরে থাকতে পারবে। আর প্রতিটি বাড়ির জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। বাড়িগুলোতে দুইটি ঘর, একটি টয়লট, একটি রান্নাঘর, সামনে খোলা বারান্দা। জেলার ১১ উপজেলার মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১১০টি, আত্রাইয়ে ১৭৫টি, সাপাহারে ১২০টি, পতœীতলায় ১১৪টি, মহাদেবপুরে ৩৪টি, রানীনগরে ৯০টি, বদলগাছীতে ৪৮টি, মান্দায় ৯০টি, ধামইরহাটে ১৫০টি, পোরশায় ৫৪টি ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ৭১টি জমিসহ বাড়ি।

দশমিনা (পটুয়াখালী) : আশ্রয়ণের অধিকার, প্রধানমন্ত্রীর উপহার এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে পটুয়াখালীর দশমিনায় ৫০টি গৃহহীন পরিবারকে স্বপ্নের ঠিকানা জমির দলিল ও নির্মিত গৃহ প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীনকে তাদের স্বপ্নের ঠিকানা হিসেবে ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম. শাহজাদা সাজু এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ মিয়া। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন পালোয়ান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার খান ডলি, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল কাউয়ুম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, পুলিশ কর্মকর্তা মো. জসিমসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে, উপজেলা প্রশাসন চর রাজিবপুরের বাস্তবায়নে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৪৪ পরিবারকে জমি ও গৃহের কাগজপত্র প্রদান করলেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাফিজুর রহমান। গতকাল বেলা ১১টা ৫ মিনিটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে শুভ উদ্বোধন করার পর জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার ৪৪ জন গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতক জমির ওপর নির্মিত ঘরের কাগজপত্র তুলে দেন। তাকে সহযোগিতা করেন চর রাজিবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস।

মহম্মদপুর (মাগুরা) : মাগুরার মহম্মদপুরে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৩০টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার জমি ও ঘর পেয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সারাদেশের ন্যায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় মহম্মদপুরে একযোগে ৩০টি ঘরের জমির দলিল ও ঘরের চাবি উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারীর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. শ্রী বীরেন শিকদার। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু আবদুল্লাহেল কাফি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান, উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান (মহিলা ভাইস চেয়াম্যান) মোছা. বেবী নাজনীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ উপকারভোগীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের ৩ হাজার একটি পরিবারের মধ্যে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে সারাদেশে যে ৬৬ হাজার ১৬৬টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর বিতরণ করবেন সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ৩ সহস্রাধিক পরিবার। সারাদেশে পর্যায়ক্রমে যে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর প্রদান করা হবে তারই প্রাথমিক পর্যায়ে গতকাল দক্ষিণাঞ্চলের ৩ সহস্রাধিক পরিবারের মধ্যে ঘর ও জমি হস্তান্তর করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব ড. অমিতাভ সরকার জানিয়েছেন, শনিবার এ কার্যক্রমের সূচনার দিনে বরিশাল জেলার ১ হাজার ৯টি, পটুয়াখালী জেলার ৭২৯টি, ভোলার ৫২০টি, পিরোজপুরের ৩৭৫টি, বরগুনার ২২৩টি এবং ঝালকাঠি জেলার ১৪৫টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব আবাসনগুলোতে বিশুদ্ধ পানিসহ সড়ক যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ সরবারহও ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে বলে বিভাগীয় কমিশনার জানান।

আগামীতে সারাদেশে যে ৮ লক্ষাধিক গৃহহীনদের এ ধরনের আবসান সুবিধা নিশ্চিত করা হবে, তার আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলাতে অন্তত ৩৫ হাজার গৃহহীন এ ধরনের ঘর ও জমি পাবেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। আগামীতে এসব গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও সম্মানজনক পেশা নিশ্চিত করণেও সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে।

রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২১ , ১০ মাঘ ১৪২৭, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে

সারাদেশে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আবাসন হস্তান্তর

সংবাদ ডেস্ক |

image

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর গতকাল আনুষ্ঠনিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আবাসন হস্তান্তর উদ্বোধন করেন। বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের ৩৩৬ জন ক-শ্রেণীর ভুমিহীনকে বসতঘর উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘর পেয়ে উপকারভোগীদের সমন্বয়ে আয়োজিত ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘর প্রদান করেন। এ সময় বাগেরহাটের নবাগত জেলা প্রশাসক আনম ফয়জুল হক উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এ ঘর বিতরণ করেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ মুছাব্বেরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, একসঙ্গে খাস জমিতে একই অবকাঠামোর সেমিপাকা ঘর ও জমি স্থায়ীভাবে ভোগ করবেন ভূমিহীনরা। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন দেশ এটা পেরেছেন বলে আমার জানা নেই। যা পেরেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা তার সাহসিকতার ফসল। ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলায় ৪৩৩টি ঘরের মধ্যে ৩৩৬ জনকে এদিন ঘর হস্তান্তর করা হয়। জেলার ৯টি উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে একই সময় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘর বিতরণ করেন এবং সব ইউএনওরা এ ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ভিটেমাটিবিহীন মানুষ নতুন ঠিকানা খুঁজে পেলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১ হাজার ৩শ’ ১৯ পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়। গতকাল বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের মানপুরা সল্লাহ গ্রামে ৩৬টি পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ উপকারভোগীদের হাতে কবুলিয়াত দলিল তুলে দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মদ শিমুল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসি, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ন কবির খোন্দকার, জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মঈনুদ্দিন মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আবদুল ওদুদ, পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মো. রুহুল আমিন, ৫৩ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্র্র্র্নেল মোহাম্মদ সুরুজ মিয়া, সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দেবেন্দ্র নাথ উরাঁ ও অন্যান্য কর্মকর্তাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নসিমুদ্দীন নসুকে নবনির্মিত পাকা ঘর প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ তাকে চৌডালার নতুনবাজারে নতুন ঘর তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে জমির দলিল হস্তান্তর করবেন।

এ সময় তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে। এছাড়া সংসার চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্য দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিয়েছেন। জাতির জনকের কন্যার সুবাদে ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।

কোটালীপাড়া : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ ২য় প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন ৩০টি পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর ও জমির দলিল বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ৩০টি পরিবারের মধ্যে এসব বিতরণ করা হয়। বেলা দশটায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ভূমি ও ঘর প্রদান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ৩০টি পরিবারের মধ্যে জমির দলিল ও নতুন নির্মিত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। কোটালীপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে এসব বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মাহফজুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইকবাল হোসেন, জেলাত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহমান, কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, পৌর মেয়র হাজী কামাল হোসেন শেখ, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহসিনউদ্দিন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আ. খালেক হাওলাদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মী রানী সরকার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান, ওসি শেখ লুৎফর রহমান হিরন, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে নতুন ঘরের চাবি ও জমির দলিল হাতে পেয়ে জরিনা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি জানান, সন্তানদের নিয়ে মাথা গুজবার স্থান ছিলনা। আজ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেলাম, এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস করতে পারব।

শালিখা (মাগুরা) : শালিখায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫০টি পরিবারকে জমি ও গৃহের চাবি প্রদান করা হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থ্যপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় উপজেলার উজগ্রামে নির্মিত ঘরগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্রধান অতিথি মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বিরেন শিকদার জমির দলিলসহ পাকা বাড়ির চাবি গৃহহীন পরিবারের হাতে হস্তান্তর করেন।

উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মোহম্মদ বাতেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মাগুরার উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরুজ্জমান, শালিখা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তরীকুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম ও জেসমিন আক্তার, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার দে, সাধারণ স¤পাদক ও আড়পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আরজ আলী বিশ্বাস, ধনেশ্বরগাতী ইউপি চেয়ারম্যান বিমলেন্দু শিকদার, শালিখা প্রেসক্লাবের সাধারণ স¤পাদক আ. রব মিয়া, স¤পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাবিবুল হকসহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন দপ্তর, পতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ডিমলা (নীলফামারী) : মুজিববর্ষ উপলক্ষে নীলফামারীর ডিমলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমি ও গৃহ পেলেন ১৮৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।

গতকাল সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রথম পর্যায় ১৮৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে জমি ও গৃহ প্রদানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে উপজেলার সদর ইউনিয়নে ৩০টি, বালাপাড়া ইউনিয়নে ৫০টি, খালিশা চাপানী ইউনিয়নে ৩০টি, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নে ১০টি, টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে ১০টি ও পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নে ১৫টিসহ মোট ১৮৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমি ও গৃহ প্রদানের উদ্বোধন করেন ডিমলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম।

এ সময় ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নিরেন্দ্র নাথ রায়, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সিদ্দিকা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান মানিক, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহাকারী প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার কামরুল ইসলাম, খসাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন, বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুইয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নওগাঁ : লাল ও আকাশি নীল রংয়ের ছাউনির সারি সারি বাড়িগুলো দেখে অসহায় ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রধানমন্ত্রীর উপহার এসব বাড়িগুলোতে বসবাস করার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলেন গৃহহীন পরিবারগুলো। আর মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে ১০৫৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। আশ্রায়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার এই প্রতিপাদ্যের আলোকে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার হিসেবে দুই শতক জমিসহ বাড়ি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর গতকাল তাদের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর, মান্দা, পোরশা ও নিয়ামতপুর উপজেলার বেশ কয়েকজন উপকারভোগী জানান, নিজেদের কোন ঘর ছিল না। কেউ রাস্তার ধারে আবার কেউ অন্যের জায়গায় পাটখড়ি ও পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি ঘরে কোন রকম থেকেছেন বহু বছর। শুধু তাই নয়, ঝড়-বৃষ্টির সময় অহসায় জীবন-যাপন করতে হয়েছে তাদের। আর আজ সেই জায়গায় প্রধানমন্ত্রী মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে। পাকা ঘর পেয়ে আমরা বেজায় খুশি। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও দোয়া করেছেন।

নওগাঁ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকা ঘরগুলোর গুণগত মান রক্ষা করে নির্মাণ করা হয়েছে। এসব পাকা ঘর পেয়ে খুশি গৃহহীনরা। তারা কোনদিন কল্পনাও করেনি পাকা ঘরে থাকতে পারবে। আর প্রতিটি বাড়ির জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। বাড়িগুলোতে দুইটি ঘর, একটি টয়লট, একটি রান্নাঘর, সামনে খোলা বারান্দা। জেলার ১১ উপজেলার মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১১০টি, আত্রাইয়ে ১৭৫টি, সাপাহারে ১২০টি, পতœীতলায় ১১৪টি, মহাদেবপুরে ৩৪টি, রানীনগরে ৯০টি, বদলগাছীতে ৪৮টি, মান্দায় ৯০টি, ধামইরহাটে ১৫০টি, পোরশায় ৫৪টি ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ৭১টি জমিসহ বাড়ি।

দশমিনা (পটুয়াখালী) : আশ্রয়ণের অধিকার, প্রধানমন্ত্রীর উপহার এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে পটুয়াখালীর দশমিনায় ৫০টি গৃহহীন পরিবারকে স্বপ্নের ঠিকানা জমির দলিল ও নির্মিত গৃহ প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীনকে তাদের স্বপ্নের ঠিকানা হিসেবে ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম. শাহজাদা সাজু এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ মিয়া। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন পালোয়ান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার খান ডলি, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল কাউয়ুম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, পুলিশ কর্মকর্তা মো. জসিমসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে, উপজেলা প্রশাসন চর রাজিবপুরের বাস্তবায়নে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৪৪ পরিবারকে জমি ও গৃহের কাগজপত্র প্রদান করলেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাফিজুর রহমান। গতকাল বেলা ১১টা ৫ মিনিটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে শুভ উদ্বোধন করার পর জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার ৪৪ জন গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতক জমির ওপর নির্মিত ঘরের কাগজপত্র তুলে দেন। তাকে সহযোগিতা করেন চর রাজিবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস।

মহম্মদপুর (মাগুরা) : মাগুরার মহম্মদপুরে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৩০টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার জমি ও ঘর পেয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সারাদেশের ন্যায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় মহম্মদপুরে একযোগে ৩০টি ঘরের জমির দলিল ও ঘরের চাবি উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারীর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. শ্রী বীরেন শিকদার। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু আবদুল্লাহেল কাফি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান, উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান (মহিলা ভাইস চেয়াম্যান) মোছা. বেবী নাজনীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ উপকারভোগীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের ৩ হাজার একটি পরিবারের মধ্যে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে সারাদেশে যে ৬৬ হাজার ১৬৬টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর বিতরণ করবেন সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ৩ সহস্রাধিক পরিবার। সারাদেশে পর্যায়ক্রমে যে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর প্রদান করা হবে তারই প্রাথমিক পর্যায়ে গতকাল দক্ষিণাঞ্চলের ৩ সহস্রাধিক পরিবারের মধ্যে ঘর ও জমি হস্তান্তর করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব ড. অমিতাভ সরকার জানিয়েছেন, শনিবার এ কার্যক্রমের সূচনার দিনে বরিশাল জেলার ১ হাজার ৯টি, পটুয়াখালী জেলার ৭২৯টি, ভোলার ৫২০টি, পিরোজপুরের ৩৭৫টি, বরগুনার ২২৩টি এবং ঝালকাঠি জেলার ১৪৫টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব আবাসনগুলোতে বিশুদ্ধ পানিসহ সড়ক যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ সরবারহও ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে বলে বিভাগীয় কমিশনার জানান।

আগামীতে সারাদেশে যে ৮ লক্ষাধিক গৃহহীনদের এ ধরনের আবসান সুবিধা নিশ্চিত করা হবে, তার আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলাতে অন্তত ৩৫ হাজার গৃহহীন এ ধরনের ঘর ও জমি পাবেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। আগামীতে এসব গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও সম্মানজনক পেশা নিশ্চিত করণেও সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে।