বিল বকেয়া নেই তবু বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন : জমিতে পানি সেচ বন্ধ, কৃষক দিশেহারা

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

বোরো ধানের মৌসুমের পিক সিজনে কোন বিল বকেয়া না থাকার পরেও রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার মকসুদপুর প্রমানিক পাড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় সেচের জন্য শতাধিক কৃষকের দুই শতাধিক বিঘা জমিতে বোরো ধানের বীজতলা রোপণসহ চাষাবাদ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

সরজমিন গিয়ে এলাকাবাসি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মকসুদপুর প্রমানিক পাড়া গ্রামের কৃষক আবু বক্কর ছিদ্দিক গত বছর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ট্রান্সফরমার বিদ্যুতের খুটিসহ অন্যান্য সরঞ্জামের লক্ষাধিক টাকা জমা দিয়ে গত বছর বোরো ধানের মৌসুমে তার নিজস্ব জমিতে মোটর স্থাপন করে। গত বছর বোরো মৌসুমে আশপাশের শতাধিক কৃষকের দুইশ বিঘা জমিতে পানি সরবরাহের মাধ্যমে সেচ সুবিধা প্রদান করে নিজের জমিতেও ধান চাষ করে। প্রতিমাসে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ করা বিলের বিপরীতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছিল।

এবার বোরো মৌসুমের শুরুতেই ১৫ জানুয়ারি তারিখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোন নোটিশ প্রদান ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার নিয়ে যায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

এ ব্যাপারে বদরগজ্ঞ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা বৈদ্যুতিক খুটি থেকে ১২০ মিটারের বেশি দূরে হওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা জানায়। অন্যদিকে কৃষকরা অভিযোগ করেছে আশপাশে বেশ কয়েকটি সংযোগ ৩ থেকে ৫ হাজার মিটার দুরে এবং বাঁশের খুটি দিয়ে লাইন নেয়া হলেও তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এ ঘটনার কারনে শতাধিক কৃষক সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে তাদের জমি তৈরি বোরো ধানের বীজতলা রোপণ করতে পারেনি। কৃষক আবু বক্কর ছিদ্দিক অভিযোগ করেন তার আপটুডেট বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা আছে কোন বকেয়া নেই। অথচ কোন নোটিশ প্রদান না করেই তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এতে করে পানির অভাবে শতাধিক কৃষকের দুইশতাধিক বিঘা জমি তৈরি চারা রোপণসহ সব কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

কৃষক মমতাজ আলী, মোনাব্বর হোসেনসহ অনেকে জানান, বোরো মৌসুমের এখন পিক সিজন চলছে এখন সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে জমি কাঁদা করতে হবে হাল দিতে হবে এরপর চারা রোপণ করতে হবে কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোন নোটিশ ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় তারা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না। কৃষকরা অভিযোগ করেছে প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা দিয়েছে বোরো ধানের মৌসুমে কৃষকরা যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে অথচ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় তাদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে বদরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের প্রধান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. হামিদুল হকের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তিনি নানান গল্পজুড়ে দেন তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা স্বীকার করলেও সুনিদৃষ্ট কোন কারন দেখাতে পারেননি। তবে প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের পরোক্ষ নির্দেশের কথা স্বীকার করেন। এদিকে কৃষকরা বোরো মৌসুমে কৃষকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ঘটনায় দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

আরও খবর
আলু পিয়াজসহ সবজিতে দাম কমায় ক্রেতাসাধারণে স্বস্তি
দলের নাম নিয়ে অপকর্মে জড়িত হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা : কাদের
জেল খাটা মা ও শিশুর ঋণ পরিশোধ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
সারের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন
ঢাকা-দিল্লি সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদারে একমত
অভিবাসীদের সুরক্ষায় সরকার সচেষ্ট রয়েছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বগুড়ায় ১২০ বিঘা জমিতে প্রস্ফুটিত হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি
কথিত স্বামী রাকিকুল মুখ খুলছে না
কাদের মির্জাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা ভাগ্নের
কানাডায় পড়তে গিয়ে নিখোঁজ ১৭ দিন পর পাওয়া গেল লাশ
সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি
ভিক্টর বাসের হেলপার গ্রেপ্তার

শনিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২১ , ১৬ মাঘ ১৪২৭, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

বদরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ

বিল বকেয়া নেই তবু বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন : জমিতে পানি সেচ বন্ধ, কৃষক দিশেহারা

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

বোরো ধানের মৌসুমের পিক সিজনে কোন বিল বকেয়া না থাকার পরেও রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার মকসুদপুর প্রমানিক পাড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় সেচের জন্য শতাধিক কৃষকের দুই শতাধিক বিঘা জমিতে বোরো ধানের বীজতলা রোপণসহ চাষাবাদ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

সরজমিন গিয়ে এলাকাবাসি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মকসুদপুর প্রমানিক পাড়া গ্রামের কৃষক আবু বক্কর ছিদ্দিক গত বছর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ট্রান্সফরমার বিদ্যুতের খুটিসহ অন্যান্য সরঞ্জামের লক্ষাধিক টাকা জমা দিয়ে গত বছর বোরো ধানের মৌসুমে তার নিজস্ব জমিতে মোটর স্থাপন করে। গত বছর বোরো মৌসুমে আশপাশের শতাধিক কৃষকের দুইশ বিঘা জমিতে পানি সরবরাহের মাধ্যমে সেচ সুবিধা প্রদান করে নিজের জমিতেও ধান চাষ করে। প্রতিমাসে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ করা বিলের বিপরীতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছিল।

এবার বোরো মৌসুমের শুরুতেই ১৫ জানুয়ারি তারিখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোন নোটিশ প্রদান ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার নিয়ে যায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

এ ব্যাপারে বদরগজ্ঞ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা বৈদ্যুতিক খুটি থেকে ১২০ মিটারের বেশি দূরে হওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা জানায়। অন্যদিকে কৃষকরা অভিযোগ করেছে আশপাশে বেশ কয়েকটি সংযোগ ৩ থেকে ৫ হাজার মিটার দুরে এবং বাঁশের খুটি দিয়ে লাইন নেয়া হলেও তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এ ঘটনার কারনে শতাধিক কৃষক সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে তাদের জমি তৈরি বোরো ধানের বীজতলা রোপণ করতে পারেনি। কৃষক আবু বক্কর ছিদ্দিক অভিযোগ করেন তার আপটুডেট বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা আছে কোন বকেয়া নেই। অথচ কোন নোটিশ প্রদান না করেই তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এতে করে পানির অভাবে শতাধিক কৃষকের দুইশতাধিক বিঘা জমি তৈরি চারা রোপণসহ সব কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

কৃষক মমতাজ আলী, মোনাব্বর হোসেনসহ অনেকে জানান, বোরো মৌসুমের এখন পিক সিজন চলছে এখন সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে জমি কাঁদা করতে হবে হাল দিতে হবে এরপর চারা রোপণ করতে হবে কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোন নোটিশ ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় তারা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না। কৃষকরা অভিযোগ করেছে প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা দিয়েছে বোরো ধানের মৌসুমে কৃষকরা যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে অথচ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় তাদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে বদরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের প্রধান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. হামিদুল হকের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তিনি নানান গল্পজুড়ে দেন তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা স্বীকার করলেও সুনিদৃষ্ট কোন কারন দেখাতে পারেননি। তবে প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের পরোক্ষ নির্দেশের কথা স্বীকার করেন। এদিকে কৃষকরা বোরো মৌসুমে কৃষকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ঘটনায় দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।