কোর্ট থেকে আদেশের কপি কোম্পানিগঞ্জ থানায় পৌঁছেনি

বাদীকে হত্যার হুমকি

খুনের মামলা দায়েরের ৭ দিন পরও নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৫নং আমলি আদালত থেকে আদেশের কপি কোম্পানিগঞ্জ থানায় পৌঁছেনি। মামলা তুলে না নিলে মামলার বাদিনী ও তার শিশু পুত্রকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। খুনের শিকার সুমাইয়ার মা ও মামলার বাদিনী বিবি ফাতেমা বেগম জানান, কিছুদিন আগে তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে তার ফুফু জাহানারা বেগম বেড়ানোর কথা বলে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের চর এলাহী গ্রামের হোসেন মেম্বার বাড়িতে তার মেয়ে জামাই বাড়ি নিয়ে যায়।

নেয়ার পর থেকে ফুফু জাহানারা বেগম, ফুফাতো বোন রতœা বেগম ও ফুফাতো বোনের জামাই শামছুউদ্দীন তাকে অনৈতিক কাজে জড়ানোর জন্য চেষ্টা চালায়। এতে ব্যর্থ হয়ে গত ২০ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে নগদ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে পাচারের চেষ্টা করে। তখন সুমাইয়া শোরচিৎকার শুরু করলে শামছুউদ্দীন, রতœা ও জাহানারা বেগম তার মুখ বেঁধে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে।

তারপর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে লাশ দাফনের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে কোম্পানিগঞ্জ থানা পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ পরদিন লাশ তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেন। আত্মীয়রা বাড়ি নিয়ে লাশ দাফনের জন্য লাশের গোসল দিতে নিয়ে আত্মীয়রা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও মাথায় থেঁতলানো জখম দেখতে পায়।

পরদিন ভিকটিম সুমাইয়ার মা বিবি ফাতেমা বেগম কোম্পানিগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে লাশ উদ্ধারকারী সাব- ইন্সপেক্টর তাকে বকাঝকা করে থানা থেকে বের করে দেন এবং আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। তারপর বাদিনী তার প্রবাসী স্বামীর অনুমতি নিয়ে ২৪ জানুয়ারি নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল হাকিম মোসলেম উদ্দিন নিজামের আদালতে হত্যা ও হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে এনে শামছউদ্দিন, রতœা বেগম, ও জাহানারা বেগমকে এজাহারভুক্ত, আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা দিয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৬১। তারিখ ২৪-০১-২০২১। আদালত মামলা গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে কোম্পানিগঞ্জ থানায় আগে কোন মামলা দায়ের করেছে কিনা তা আদালতকে জানাতে আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশের ৭ দিন পর গতকালও আদালতের আদেশের কপি কোম্পানিগঞ্জ থানায় পৌঁছেনি বলে কোম্পানিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান।

মামলা দায়ের কারিনীর আইনজীবী নোয়াখালীর সিনিয়র আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি কাজী মীর হোসেন জানান, ৭ দিন পরও যদি আদালতের কপি জেলার মধ্যেই একটা থানায় না পৌঁছে তাহলে বিচার প্রার্থীরা আইনজীবীদের উপর ক্ষুব্ধ হয়।

এদিকে মামলা দায়েরের খবর শুনে আসামিরা মামলা তুলে নিতে বাদীনিকে ও তার শিশুপুত্রকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে বাদীনির আইনজীবী এ প্রতিনিধিকে অবহিত করেছেন।

মঙ্গলবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৯ মাঘ ১৪২৭, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২

হত্যা মামলার ৭ দিন পরও

কোর্ট থেকে আদেশের কপি কোম্পানিগঞ্জ থানায় পৌঁছেনি

বাদীকে হত্যার হুমকি

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

খুনের মামলা দায়েরের ৭ দিন পরও নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৫নং আমলি আদালত থেকে আদেশের কপি কোম্পানিগঞ্জ থানায় পৌঁছেনি। মামলা তুলে না নিলে মামলার বাদিনী ও তার শিশু পুত্রকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। খুনের শিকার সুমাইয়ার মা ও মামলার বাদিনী বিবি ফাতেমা বেগম জানান, কিছুদিন আগে তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে তার ফুফু জাহানারা বেগম বেড়ানোর কথা বলে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের চর এলাহী গ্রামের হোসেন মেম্বার বাড়িতে তার মেয়ে জামাই বাড়ি নিয়ে যায়।

নেয়ার পর থেকে ফুফু জাহানারা বেগম, ফুফাতো বোন রতœা বেগম ও ফুফাতো বোনের জামাই শামছুউদ্দীন তাকে অনৈতিক কাজে জড়ানোর জন্য চেষ্টা চালায়। এতে ব্যর্থ হয়ে গত ২০ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে নগদ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে পাচারের চেষ্টা করে। তখন সুমাইয়া শোরচিৎকার শুরু করলে শামছুউদ্দীন, রতœা ও জাহানারা বেগম তার মুখ বেঁধে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে।

তারপর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে লাশ দাফনের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে কোম্পানিগঞ্জ থানা পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ পরদিন লাশ তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেন। আত্মীয়রা বাড়ি নিয়ে লাশ দাফনের জন্য লাশের গোসল দিতে নিয়ে আত্মীয়রা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও মাথায় থেঁতলানো জখম দেখতে পায়।

পরদিন ভিকটিম সুমাইয়ার মা বিবি ফাতেমা বেগম কোম্পানিগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে লাশ উদ্ধারকারী সাব- ইন্সপেক্টর তাকে বকাঝকা করে থানা থেকে বের করে দেন এবং আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। তারপর বাদিনী তার প্রবাসী স্বামীর অনুমতি নিয়ে ২৪ জানুয়ারি নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল হাকিম মোসলেম উদ্দিন নিজামের আদালতে হত্যা ও হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে এনে শামছউদ্দিন, রতœা বেগম, ও জাহানারা বেগমকে এজাহারভুক্ত, আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা দিয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৬১। তারিখ ২৪-০১-২০২১। আদালত মামলা গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে কোম্পানিগঞ্জ থানায় আগে কোন মামলা দায়ের করেছে কিনা তা আদালতকে জানাতে আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশের ৭ দিন পর গতকালও আদালতের আদেশের কপি কোম্পানিগঞ্জ থানায় পৌঁছেনি বলে কোম্পানিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান।

মামলা দায়ের কারিনীর আইনজীবী নোয়াখালীর সিনিয়র আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি কাজী মীর হোসেন জানান, ৭ দিন পরও যদি আদালতের কপি জেলার মধ্যেই একটা থানায় না পৌঁছে তাহলে বিচার প্রার্থীরা আইনজীবীদের উপর ক্ষুব্ধ হয়।

এদিকে মামলা দায়েরের খবর শুনে আসামিরা মামলা তুলে নিতে বাদীনিকে ও তার শিশুপুত্রকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে বাদীনির আইনজীবী এ প্রতিনিধিকে অবহিত করেছেন।