মায়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল অনলাইনে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী।
সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল মায়ানমার থেকে ক্রয়ের প্রস্তাব বাতিল করা হয়। পরে ক্রয় সংক্রান্ত সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মায়ানমার থেকে জি টু জি ভিত্তিতে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল ৪১১ কোটি ২৮ লাখ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেই প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায় ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি।
মায়ানমারের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় চাল আমদানির প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাবটির অনুমোদন দেয়া হয়নি। মায়ানমার সম্পর্কে আরও জানতে হবে। মূলত এই পরিবর্তন আসার আগেই আমরা মায়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। দেশটির সঙ্গে সাধারণ আমাদের সেরকম ব্যবসায়ী সম্পর্ক নেই। বিশেষ পরিস্থিতিতে পিয়াজ আনতে হয়েছে তাদের কাছ থেকে, যখন আমাদের কোন উপায় থাকে না তখন তাদের কাছে যাওয়া লাগে। তারাও সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়। এবারও যখন এই প্রজেক্টটি আসে আমরা বলেছি ধীরে ধীরে এগোতে হবে।
তিনি বলেন, যাদের সঙ্গে চুক্তি করেছিলাম তারা একটি অবস্থায় আছে। তাই এটি যেভাবে আছে সেভাবে রাখার জন্য বলেছি, কিছু সময় নিতে বলেছি। যদি আমরা খুব বিপদগ্রস্ত না হই তাহলেই আমরা তাদের কাছে যাই না। তবে যদি আমাদের কিনতে হয় সেক্ষেত্রে লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে কিনি। লেটার অব ক্রেডিটের শর্ত হলো, কোন অ্যাডভান্স পেমেন্ট করার ব্যবস্থা থাকে না। ফলে চূড়ান্ত যে চুক্তি করেছি সেই লেটার অব ক্রেডিটে বর্ণিত। দ্রব্যাদি পূর্ণমাত্রায় শিপমেন্ট না হলে এবং লেটার অব ক্রেডিটের বিপরিতে শিপমেন্ট ডকুমেন্টস সাবমিট না করলে আমরা পেমেন্ট করি না। ডকুমেন্টস সাবমিট না করলে কোন ব্যাংক টাকা পেমেন্ট করে না, ফলে আমাদের লস হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।
দেশের অর্থনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি ভালো বলেই আজ আমরা মিটিংয়ে বসলাম। এখন পৃথিবীতে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি যাদের স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। থাকলে তাদের দেশের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (আমদানি-রপ্তানি) বাড়ে কী বাড়ে না? নাকি এক জায়গায় আটকা পড়ে আছে? নাকি নিচের দিকে যাচ্ছে? সেটা দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন আমরা কোথায় আছি। সারাবিশ্বের সঙ্গে আমরা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এ যুগে তাই নিয়ম। অন্যরা যেটা কিনবে আমরা সেটা বিক্রি করব, আমরা যেটা কিনব অন্যরা সেটা বিক্রি করবে। সুতরাং কোথাও বড় ধরনের অনিয়ম থাকলে, সারাবিশ্বেই এখন অনিয়ম, সেটার উত্তরণ আমরা ঘটাতে পারিনি। সেটার জন্য আমরা প্রার্থনা করি যাতে এই অবস্থা থেকে আমরা আরও সুন্দর অবস্থানে যেতে পারি। সেজন্য সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে, আর ধৈর্য ধরে সব মোকাবিলা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২১ মাঘ ১৪২৭, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪২
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |
মায়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল অনলাইনে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী।
সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল মায়ানমার থেকে ক্রয়ের প্রস্তাব বাতিল করা হয়। পরে ক্রয় সংক্রান্ত সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মায়ানমার থেকে জি টু জি ভিত্তিতে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল ৪১১ কোটি ২৮ লাখ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেই প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায় ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি।
মায়ানমারের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় চাল আমদানির প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাবটির অনুমোদন দেয়া হয়নি। মায়ানমার সম্পর্কে আরও জানতে হবে। মূলত এই পরিবর্তন আসার আগেই আমরা মায়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। দেশটির সঙ্গে সাধারণ আমাদের সেরকম ব্যবসায়ী সম্পর্ক নেই। বিশেষ পরিস্থিতিতে পিয়াজ আনতে হয়েছে তাদের কাছ থেকে, যখন আমাদের কোন উপায় থাকে না তখন তাদের কাছে যাওয়া লাগে। তারাও সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়। এবারও যখন এই প্রজেক্টটি আসে আমরা বলেছি ধীরে ধীরে এগোতে হবে।
তিনি বলেন, যাদের সঙ্গে চুক্তি করেছিলাম তারা একটি অবস্থায় আছে। তাই এটি যেভাবে আছে সেভাবে রাখার জন্য বলেছি, কিছু সময় নিতে বলেছি। যদি আমরা খুব বিপদগ্রস্ত না হই তাহলেই আমরা তাদের কাছে যাই না। তবে যদি আমাদের কিনতে হয় সেক্ষেত্রে লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে কিনি। লেটার অব ক্রেডিটের শর্ত হলো, কোন অ্যাডভান্স পেমেন্ট করার ব্যবস্থা থাকে না। ফলে চূড়ান্ত যে চুক্তি করেছি সেই লেটার অব ক্রেডিটে বর্ণিত। দ্রব্যাদি পূর্ণমাত্রায় শিপমেন্ট না হলে এবং লেটার অব ক্রেডিটের বিপরিতে শিপমেন্ট ডকুমেন্টস সাবমিট না করলে আমরা পেমেন্ট করি না। ডকুমেন্টস সাবমিট না করলে কোন ব্যাংক টাকা পেমেন্ট করে না, ফলে আমাদের লস হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।
দেশের অর্থনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি ভালো বলেই আজ আমরা মিটিংয়ে বসলাম। এখন পৃথিবীতে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি যাদের স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। থাকলে তাদের দেশের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (আমদানি-রপ্তানি) বাড়ে কী বাড়ে না? নাকি এক জায়গায় আটকা পড়ে আছে? নাকি নিচের দিকে যাচ্ছে? সেটা দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন আমরা কোথায় আছি। সারাবিশ্বের সঙ্গে আমরা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এ যুগে তাই নিয়ম। অন্যরা যেটা কিনবে আমরা সেটা বিক্রি করব, আমরা যেটা কিনব অন্যরা সেটা বিক্রি করবে। সুতরাং কোথাও বড় ধরনের অনিয়ম থাকলে, সারাবিশ্বেই এখন অনিয়ম, সেটার উত্তরণ আমরা ঘটাতে পারিনি। সেটার জন্য আমরা প্রার্থনা করি যাতে এই অবস্থা থেকে আমরা আরও সুন্দর অবস্থানে যেতে পারি। সেজন্য সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে, আর ধৈর্য ধরে সব মোকাবিলা করতে হবে।