শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে আহমদুল কবিরের জন্মদিন পালন

গতকাল দৈনিক সংবাদ’র প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) ৯৯তম জন্মদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালন করা হয়েছে। এবার করোনা মহামারীর কারণে বড় ধরনের কোন আয়োজন করা হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গতকাল ঘোড়াশালের মিয়া বাড়ির কবরস্থানে আহমদুল কবিরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ঘোড়াশালের সর্বস্তরের মানুষ। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে কবর জিয়ারত, এতিমখানায় খাদ্য বিতরণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, কেক কাটা ও আলোচনা সভা ইত্যাদি।

গতকাল সকালে আহমদুল কবিরের কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আহমদুল কবিরের পরিবার ও সংবাদ পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির। এ সময় তার সঙ্গে এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিরাও ছিলেন। এর আগে আহমদুল কবির (মনু মিয়া) স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক কমিশনার নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করেন স্মৃতি সংসদের স্থানীয় কর্মী ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এবং প্রয়াত আহমদুল কবিরের রাজনৈতিক অনুসারীরা। বাদ আসর স্থানীয় তিনটি মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও তিনটি এতিমখানায় এতিমদের মধ্যে উন্নত খাবার বিতরণ করা হয়। বিকেলে স্মৃতি সংসদের স্থানীয় কর্মীদের উদ্যোগে আহমদুল কবিরের জন্মদিনের কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দৈনিক সংবাদ’র প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবির ১৯২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোড়াশালের ঐতিহ্যবাহী মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই একই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির। পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২১ মাঘ ১৪২৭, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে আহমদুল কবিরের জন্মদিন পালন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

ঘোড়াশালে গতকাল জন্মদিন উপলক্ষে আহমদুল কবিরের কবরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন ও জিয়ারত -সংবাদ

গতকাল দৈনিক সংবাদ’র প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) ৯৯তম জন্মদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালন করা হয়েছে। এবার করোনা মহামারীর কারণে বড় ধরনের কোন আয়োজন করা হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গতকাল ঘোড়াশালের মিয়া বাড়ির কবরস্থানে আহমদুল কবিরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ঘোড়াশালের সর্বস্তরের মানুষ। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে কবর জিয়ারত, এতিমখানায় খাদ্য বিতরণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, কেক কাটা ও আলোচনা সভা ইত্যাদি।

গতকাল সকালে আহমদুল কবিরের কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আহমদুল কবিরের পরিবার ও সংবাদ পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির। এ সময় তার সঙ্গে এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিরাও ছিলেন। এর আগে আহমদুল কবির (মনু মিয়া) স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক কমিশনার নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করেন স্মৃতি সংসদের স্থানীয় কর্মী ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এবং প্রয়াত আহমদুল কবিরের রাজনৈতিক অনুসারীরা। বাদ আসর স্থানীয় তিনটি মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও তিনটি এতিমখানায় এতিমদের মধ্যে উন্নত খাবার বিতরণ করা হয়। বিকেলে স্মৃতি সংসদের স্থানীয় কর্মীদের উদ্যোগে আহমদুল কবিরের জন্মদিনের কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দৈনিক সংবাদ’র প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবির ১৯২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোড়াশালের ঐতিহ্যবাহী মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই একই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির। পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।