এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে তিনদিন থানায় আটকে রেখে অস্ত্র মামলা

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে ৩ দিন থানা হাজতে আটক রেখে অস্ত্রমামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বৈলগাছি গ্রামে। আটক মজনু মিয়া উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বৈলগাছি গ্রামের শওকত আলীর ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে আটক মজনু মিয়ার স্ত্রী ভানু খাতুন জানান, গত ২৯ জানুয়ারি গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার সময় প্রকাশ্যে দিবালোকে মমেসপুর হাট ব্যাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আমার স্বামী মজনুমিয়াকে বেলকুচি থানার দুই এসআই ডেকে নিয়ে জোরকরে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি আমার মামা শ্বশুর ও স্থানীয় ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে থানায় যাই এবং এসআই জয়দেবকে সঙ্গে নিয়ে এসআই নুর আলমের সঙ্গে দেখা করি এবং আমার স্বামীর খোঁজ জানতে চাই। তখন তিনি বলেন কাল আসেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার পুনরায় থানায় যাই এবং আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করি এবং তাকে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করি। যা থানায় সিসি টিভি ফুটেজে ডিউটি রুমে বসেই দেখা যায়।

এ সময় এসআই নুর আলম বলেন তাকে ছাড়া যাবে না একটি সন্দেহ মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে কাল কোর্টে চালান করা হবে। পরের দিন ৩১ জানুয়ারি রোববার বেলা ১১টায় পুনরায় খাবার নিয়ে থানায় গেলে আমার স্বামীর সঙ্গে আমার মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় আবারও এসআই নুর আলম আমাদের জানান একটু পরেই কোর্টে প্রেরণ করা হবে। এ সময় আমরা থানার ডিউটি অফিসারের রুমে সিসিটিভি ফুটেজে স্বামীকে দেখি এবং বাড়ি চলে আসি।

পরে কোর্টে গিয়ে জানতে পারি কোর্টে চালান করা হয়নি। পরে সন্ধ্যায় আমার স্বামীকে থানাতেই খাবার দিয়ে আসি। গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে পুনরায় থানায় গেলে জানতে পারি তখনও তাকে চালান করা হয়নি। পরে মঙ্গলবার জানতে পারি বেলকুচি থানার একটি হত্যা মামলায় সন্দেহ এবং অস্ত্রমামলায় তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ২৯ জানুয়ারি দিনে সন্দেহমূলকভাবে আটক দেখিয়ে কিভাবে একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে ১ তারিখ রাতে অস্ত্রসহ আটক দেখিয়ে কোর্টে চালান করা হলো এটা সবার বোধগম্য নয়। শুধু তাই নয় নিরাপরাধ একজন মানুষকে দিনের বেলায় ধরে নিয়ে ৩ দিন থানা হেফাজত আটক দেখিয়ে ৪ দিন পর অস্ত্রসহ আটক দেখিয়ে কোর্টে প্রেরণ করা এটা আইন পরিপন্থি বলে মনে করি। একই সঙ্গে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত করার দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মজনু মিয়ার মামা নুরুল ইসলাম, বোন তানজীদা খাতুনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২২ মাঘ ১৪২৭, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সিরাজগঞ্জে বেলকুচি থানার ওসি

এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে তিনদিন থানায় আটকে রেখে অস্ত্র মামলা

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে ৩ দিন থানা হাজতে আটক রেখে অস্ত্রমামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বৈলগাছি গ্রামে। আটক মজনু মিয়া উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বৈলগাছি গ্রামের শওকত আলীর ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে আটক মজনু মিয়ার স্ত্রী ভানু খাতুন জানান, গত ২৯ জানুয়ারি গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার সময় প্রকাশ্যে দিবালোকে মমেসপুর হাট ব্যাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আমার স্বামী মজনুমিয়াকে বেলকুচি থানার দুই এসআই ডেকে নিয়ে জোরকরে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি আমার মামা শ্বশুর ও স্থানীয় ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে থানায় যাই এবং এসআই জয়দেবকে সঙ্গে নিয়ে এসআই নুর আলমের সঙ্গে দেখা করি এবং আমার স্বামীর খোঁজ জানতে চাই। তখন তিনি বলেন কাল আসেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার পুনরায় থানায় যাই এবং আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করি এবং তাকে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করি। যা থানায় সিসি টিভি ফুটেজে ডিউটি রুমে বসেই দেখা যায়।

এ সময় এসআই নুর আলম বলেন তাকে ছাড়া যাবে না একটি সন্দেহ মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে কাল কোর্টে চালান করা হবে। পরের দিন ৩১ জানুয়ারি রোববার বেলা ১১টায় পুনরায় খাবার নিয়ে থানায় গেলে আমার স্বামীর সঙ্গে আমার মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় আবারও এসআই নুর আলম আমাদের জানান একটু পরেই কোর্টে প্রেরণ করা হবে। এ সময় আমরা থানার ডিউটি অফিসারের রুমে সিসিটিভি ফুটেজে স্বামীকে দেখি এবং বাড়ি চলে আসি।

পরে কোর্টে গিয়ে জানতে পারি কোর্টে চালান করা হয়নি। পরে সন্ধ্যায় আমার স্বামীকে থানাতেই খাবার দিয়ে আসি। গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে পুনরায় থানায় গেলে জানতে পারি তখনও তাকে চালান করা হয়নি। পরে মঙ্গলবার জানতে পারি বেলকুচি থানার একটি হত্যা মামলায় সন্দেহ এবং অস্ত্রমামলায় তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ২৯ জানুয়ারি দিনে সন্দেহমূলকভাবে আটক দেখিয়ে কিভাবে একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে ১ তারিখ রাতে অস্ত্রসহ আটক দেখিয়ে কোর্টে চালান করা হলো এটা সবার বোধগম্য নয়। শুধু তাই নয় নিরাপরাধ একজন মানুষকে দিনের বেলায় ধরে নিয়ে ৩ দিন থানা হেফাজত আটক দেখিয়ে ৪ দিন পর অস্ত্রসহ আটক দেখিয়ে কোর্টে প্রেরণ করা এটা আইন পরিপন্থি বলে মনে করি। একই সঙ্গে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত করার দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মজনু মিয়ার মামা নুরুল ইসলাম, বোন তানজীদা খাতুনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।