সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার

সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে মায়ানমারে মূল শহর ইয়াঙ্গুনে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। সেনাশাসন শুরুর পর এটাই দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে সামরিক জান্তা জনগণের সমাবেশ বন্ধ করার চেষ্টা সত্ত্বেও এ প্রতিবাদ দমন করা যায়নি। বিবিসি

‘সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভকারীরা ওই সময় ‘সামরিক স্বৈরশাসক, ব্যর্থ, ব্যর্থ’, ‘গণতন্ত্রের, জয়, জয়’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের একাংশ সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) পতাকার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লাল পোশাক পরেন। মিছিলে কয়েকজনের হাতে লাল পতাকা দেখা যায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়াঙ্গুনে ইনসিন রোড ও লেডান জংশনের মোড়ে বিক্ষোভকারীদের মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ।

মিছিলের সময় তিন আঙুল উঁচিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সেøাগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। এ সময় প্রতীকী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়িচালক ও বাসচালকদের গাড়ির হর্ন বাজাতেও দেখা যায়। এর আগে বিক্ষোভ দমাতে অস্থায়ীভাবে ফেসবুক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল মায়ানমারের সামরিক সরকার। ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামও বন্ধ করে দেয় তারা।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তকে ‘ঘৃণ্য ও বেপরোয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিং উ হাহ বিবৃতিতে বলেন, ‘সামরিক অভ্যুত্থান, মানবিক সংকট ও করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘৃণ্য ও বেপরোয়া। ‘টেলিযোগাযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা সেনাদের দ্রুত তুলে দিতে হবে। পাশাপাশি মানুষের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলাও বন্ধ করতে হবে।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। রাজধানী নেপিদো ও প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে শুরু করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। সু চির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এসব অভিযোগে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রিমান্ডে থাকবেন সু চি। এনএলডির একজন মুখপাত্র জানান, সু চির বিরুদ্ধে আমদানি-রপ্তানি আইনে অভিযোগ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেআইনি যোগাযোগযন্ত্র রাখার অভিযোগও করেছে পুলিশ।

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৪ মাঘ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার

image

সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ -এএফপি

সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে মায়ানমারে মূল শহর ইয়াঙ্গুনে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। সেনাশাসন শুরুর পর এটাই দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে সামরিক জান্তা জনগণের সমাবেশ বন্ধ করার চেষ্টা সত্ত্বেও এ প্রতিবাদ দমন করা যায়নি। বিবিসি

‘সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভকারীরা ওই সময় ‘সামরিক স্বৈরশাসক, ব্যর্থ, ব্যর্থ’, ‘গণতন্ত্রের, জয়, জয়’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের একাংশ সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) পতাকার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লাল পোশাক পরেন। মিছিলে কয়েকজনের হাতে লাল পতাকা দেখা যায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়াঙ্গুনে ইনসিন রোড ও লেডান জংশনের মোড়ে বিক্ষোভকারীদের মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ।

মিছিলের সময় তিন আঙুল উঁচিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সেøাগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। এ সময় প্রতীকী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়িচালক ও বাসচালকদের গাড়ির হর্ন বাজাতেও দেখা যায়। এর আগে বিক্ষোভ দমাতে অস্থায়ীভাবে ফেসবুক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল মায়ানমারের সামরিক সরকার। ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামও বন্ধ করে দেয় তারা।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তকে ‘ঘৃণ্য ও বেপরোয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিং উ হাহ বিবৃতিতে বলেন, ‘সামরিক অভ্যুত্থান, মানবিক সংকট ও করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘৃণ্য ও বেপরোয়া। ‘টেলিযোগাযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা সেনাদের দ্রুত তুলে দিতে হবে। পাশাপাশি মানুষের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলাও বন্ধ করতে হবে।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। রাজধানী নেপিদো ও প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে শুরু করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। সু চির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এসব অভিযোগে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রিমান্ডে থাকবেন সু চি। এনএলডির একজন মুখপাত্র জানান, সু চির বিরুদ্ধে আমদানি-রপ্তানি আইনে অভিযোগ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেআইনি যোগাযোগযন্ত্র রাখার অভিযোগও করেছে পুলিশ।