জিকে শামীম ও তার মায়ের মামলার চার্জশিট দাখিল

টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার গোলাম কিবরিয়া ওরফে জিকে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় ৩শ’কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগের মামলার চার্জশিট আদালতে গত বৃহস্পতিবার জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।

দুদক আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার ইন্সপেক্টর জুলফিকার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জিকে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে করা মামলাটির চার্জশিট গত বৃহস্পতিবার আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।

দুদক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন জিকে বিল্ডার্সের কর্ণধার যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম। এরপর তার বাসা, অফিসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, অবৈধ অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করে র‌্যাব। এসব ঘটনায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি হরিণের চামড়া পাওয়ায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মামলায় জিকে শামীমকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন ২১ অক্টোবর দুদক উপপরিচালক সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত শেষে দুদক ২৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পায়। তদন্ত শেষে ওইসব সম্পদ অর্জনের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন চেয়ে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর কমিশন চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেন।

দুদক সূত্র জানায়, তদন্তকালে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন আসামি শামীম ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎসের খোঁজ পায়নি দুদক। এছাড়া, জিকে শামীমের বাসা থেকে পাওয়া নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রারও বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরও ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদারিত্বের বৈধ কোন উৎস খুঁজে পায়নি দুদক। এছাড়া, জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎসও পাওয়া যায়নি। চার্জশিটে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। চার্জশিটটি অনুমোদন দেয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে জমা দেয়া হয়েছে। করোনার কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে চার্জশিট জমা দেয়ার ক্ষেত্রে।

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৪ মাঘ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

জিকে শামীম ও তার মায়ের মামলার চার্জশিট দাখিল

টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার গোলাম কিবরিয়া ওরফে জিকে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় ৩শ’কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগের মামলার চার্জশিট আদালতে গত বৃহস্পতিবার জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।

দুদক আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার ইন্সপেক্টর জুলফিকার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জিকে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে করা মামলাটির চার্জশিট গত বৃহস্পতিবার আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।

দুদক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন জিকে বিল্ডার্সের কর্ণধার যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম। এরপর তার বাসা, অফিসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, অবৈধ অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করে র‌্যাব। এসব ঘটনায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি হরিণের চামড়া পাওয়ায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মামলায় জিকে শামীমকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন ২১ অক্টোবর দুদক উপপরিচালক সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত শেষে দুদক ২৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পায়। তদন্ত শেষে ওইসব সম্পদ অর্জনের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন চেয়ে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর কমিশন চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেন।

দুদক সূত্র জানায়, তদন্তকালে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন আসামি শামীম ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎসের খোঁজ পায়নি দুদক। এছাড়া, জিকে শামীমের বাসা থেকে পাওয়া নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রারও বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরও ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদারিত্বের বৈধ কোন উৎস খুঁজে পায়নি দুদক। এছাড়া, জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎসও পাওয়া যায়নি। চার্জশিটে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। চার্জশিটটি অনুমোদন দেয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে জমা দেয়া হয়েছে। করোনার কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে চার্জশিট জমা দেয়ার ক্ষেত্রে।