প্রথমদিন টিকা নিলেন বিচারপতি মন্ত্রী এমপি, শ্রেণী পেশার মানুষ

গণকর্মসূচির প্রথমদিনেই করোনার টিকা নিয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধান বিচারপতি, সংসদ সদস্য, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা ব্যক্তিরা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সির্ভিল সার্জন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও টিকা নিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল সকাল ১০টায় মহাখালী স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় মন্ত্রী বিভিন্ন জেলায় টিকাদান কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এর পরপরই বিভিন্ন জেলায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের আগেই অনেক কেন্দ্রে টিকাদান শুরু হয়।

পরে বেলা ১১টায় তিনি শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে নিজে টিকা নেন। টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের আনন্দের দিন। এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম। এই টিকা নিয়ে যেন কোন রিউমার না হয়।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা নেয়ার পর একই হাসপাতালে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলানসহ চিকিৎসক নেতারা টিকা নেন।

এছাড়াও ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উল ইসলাম, ২০২০ সালের একুশে পদক প্রাপ্ত একজন গুণী মানুষসহ সরকারের প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি করোনা টিকা নেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন।

টিকা নেয়ার পর মন্ত্রীদের অভিমত :

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে করোনা সংক্রমণের এক বছরপূর্তি হওয়ার আরও এক মাস আছে। এর আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গত শনিবার সংক্রমণের হার ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, এই ধারা চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলা যায়। আমরা আশা করি-করছি করোনাভাইরাস দূর হয়ে যাবে। ফাইনাল ব্লো টা আমরা দিব ভ্যাকসিনের মাধ্যমে। আজ বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছে। আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত যত টিকা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘সবচেয়ে ভালো’। বাংলাদেশে এ টিকাই দেয়া হচ্ছে।

টিকা নেয়ার পর কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি টিকা নেয়ার পর ভালোই আছি। টিকা নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা করছে। পুরো বিশ্ব টিকা নিচ্ছে, কিছু না কিছু উপকারিতা তো আছেই।’

প্রধান বিচারপতিসহ টিকা নিলেন ৪৭ বিচারপতি :

বিএসএমএমইউ’তে টিকা নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘আমার স্ত্রী ও আমি টিকা নিয়েছি। আমার এ পর্যন্ত কোন অসুবিধা হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের আমিসহ সাত বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৪০ জন বিচারপতি টিকা নিয়েছেন। সুতরাং, আমি দেশবাসীকে বলব, সবাই যেন তাড়াতাড়ি নিবন্ধন করেন এবং টিকা নেন। স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবার আগে টিকা দেয়া হয়েছে, এটা প্রধানমন্ত্রীর বিশাল কৃতিত্ব।’

রাশেদ খান মেননের অনুভূতি :

টিকা নিয়ে রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘করোনা টিকা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনার ভিত্তি নেই। আমাদের বাংলার মানুষ সাহসী। দেশের সবাইকে বলব আপনারা সবাই নির্ভয়ে টিকা নেন। আতঙ্কের কিছু নেই।’

ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘ঢামেকের টিকা কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে নিবন্ধনকারীরা টিকা নিয়েছে। স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমেও টিকা দিয়েছি। তবে নিবন্ধিত হয়ে আসলে ভালো। সব ধরনের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৫ মাঘ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

প্রথমদিন টিকা নিলেন বিচারপতি মন্ত্রী এমপি, শ্রেণী পেশার মানুষ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

গণকর্মসূচির প্রথমদিনেই করোনার টিকা নিয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধান বিচারপতি, সংসদ সদস্য, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা ব্যক্তিরা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সির্ভিল সার্জন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও টিকা নিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল সকাল ১০টায় মহাখালী স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় মন্ত্রী বিভিন্ন জেলায় টিকাদান কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এর পরপরই বিভিন্ন জেলায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের আগেই অনেক কেন্দ্রে টিকাদান শুরু হয়।

পরে বেলা ১১টায় তিনি শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে নিজে টিকা নেন। টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের আনন্দের দিন। এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম। এই টিকা নিয়ে যেন কোন রিউমার না হয়।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা নেয়ার পর একই হাসপাতালে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলানসহ চিকিৎসক নেতারা টিকা নেন।

এছাড়াও ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উল ইসলাম, ২০২০ সালের একুশে পদক প্রাপ্ত একজন গুণী মানুষসহ সরকারের প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি করোনা টিকা নেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন।

টিকা নেয়ার পর মন্ত্রীদের অভিমত :

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে করোনা সংক্রমণের এক বছরপূর্তি হওয়ার আরও এক মাস আছে। এর আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গত শনিবার সংক্রমণের হার ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, এই ধারা চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলা যায়। আমরা আশা করি-করছি করোনাভাইরাস দূর হয়ে যাবে। ফাইনাল ব্লো টা আমরা দিব ভ্যাকসিনের মাধ্যমে। আজ বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছে। আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত যত টিকা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘সবচেয়ে ভালো’। বাংলাদেশে এ টিকাই দেয়া হচ্ছে।

টিকা নেয়ার পর কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি টিকা নেয়ার পর ভালোই আছি। টিকা নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা করছে। পুরো বিশ্ব টিকা নিচ্ছে, কিছু না কিছু উপকারিতা তো আছেই।’

প্রধান বিচারপতিসহ টিকা নিলেন ৪৭ বিচারপতি :

বিএসএমএমইউ’তে টিকা নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘আমার স্ত্রী ও আমি টিকা নিয়েছি। আমার এ পর্যন্ত কোন অসুবিধা হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের আমিসহ সাত বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৪০ জন বিচারপতি টিকা নিয়েছেন। সুতরাং, আমি দেশবাসীকে বলব, সবাই যেন তাড়াতাড়ি নিবন্ধন করেন এবং টিকা নেন। স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবার আগে টিকা দেয়া হয়েছে, এটা প্রধানমন্ত্রীর বিশাল কৃতিত্ব।’

রাশেদ খান মেননের অনুভূতি :

টিকা নিয়ে রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘করোনা টিকা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনার ভিত্তি নেই। আমাদের বাংলার মানুষ সাহসী। দেশের সবাইকে বলব আপনারা সবাই নির্ভয়ে টিকা নেন। আতঙ্কের কিছু নেই।’

ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘ঢামেকের টিকা কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে নিবন্ধনকারীরা টিকা নিয়েছে। স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমেও টিকা দিয়েছি। তবে নিবন্ধিত হয়ে আসলে ভালো। সব ধরনের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।