বেরোবিতে

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা সমাবেশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গতকাল ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও রসায়ন বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ শিক্ষার্থী জুলমত সোহরাব, সালমাসহ অন্যরা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বর্তমান উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ একজন স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন। তিনি নিজেই অনিয়মের পাহাড় গড়ে তুলেছেন, আর তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেন কেউ কথা বা প্রতিবাদ না করতে পারে সে কারণেই ক্যাম্পাসে নয় ঢাকায় গোপনে সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ, অবস্থান, মৌনমিছিলসহ সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তারা বলেন, আমরা উপাচার্যের এ নির্দেশনা মানি না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্তাঙ্গন, কিন্তু প্রশাসনের এমন নির্দেশনা মূলত স্বৈরতন্ত্রের শামিল। যদি এই স্বৈরাচারী নির্দেশনা দ্রুত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন বক্তারা। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ একরের সব জায়গায় আমাদের অধিকার আছে। যদি বলেন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে আমাদের পারমিশন নিতে হবে। আমরা কার কাছে পারমিশন নিব। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি আসলে কারা? আসলে এই ক্যাম্পাসের সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা হচ্ছেন উপাচার্য ও তার অনুসারীরা। মানববন্ধন শেষে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যায়, তারা প্রশাসনিক ভবনসহ ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এসে তাদের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে।

এদিকে গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের অপসারণের দাবিতে রসায়ন বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান ও বিক্ষোভ করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্র্থী সবুজ, আল আমিনসহ অন্যরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন লংঘন করে জুনিয়র শিক্ষক তানিয়া তোফাজকে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। অথচ আইন অনুযায়ী এ পদে শিক্ষক লিটন মোহন চাকির দায়িত্ব পাওয়ার কথা। কিন্তু উপাচার্য জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে জুনিয়ন শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান, অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান। বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ ব্যাপারে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানিয়া তোফাজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাটি ক্যাম্পাসের বদলে ঢাকায় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা জারি করা হয়। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়।

ওই অফিস আদেশে প্রশাসনিক ভবন, ভিসির বাংলো, অ্যাকাডেমিক ভবন এবং শ্রেণীকক্ষের সামনে মিছিল-মিটিং, অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ প্রদর্শন, স্লোগান, বক্তব্য প্রদান ও মৌনমিছিলসহসহ সব ধরনের কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি এই নোটিশের নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

image

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল -সংবাদ

আরও খবর
মায়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান : তুরস্কের রাষ্ট্রদূত
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নরওয়েকে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শান্তিরক্ষা মিশনে ১৯০০ নারী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী
শেয়ারবাজারে বড় পতন
বিএনপির অপকর্ম বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না কাদের
গণফোরাম থেকে কিবরিয়ার পদত্যাগ
বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে চেয়ারম্যানের নির্যাতন
আল জাজিরার তথ্যচিত্র মন্দ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত এডিটরস গিল্ড
ফিরোজের অবৈধ সম্পদের চার্জশিট দিচ্ছে দুদক
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অবরোধ-বিক্ষোভ
এক সপ্তাহেও গ্রেপ্তার হয়নি এজাহারভুক্ত চার আসামি
ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তার

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৫ মাঘ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

বেরোবিতে

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

image

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল -সংবাদ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা সমাবেশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গতকাল ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও রসায়ন বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ শিক্ষার্থী জুলমত সোহরাব, সালমাসহ অন্যরা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বর্তমান উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ একজন স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন। তিনি নিজেই অনিয়মের পাহাড় গড়ে তুলেছেন, আর তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেন কেউ কথা বা প্রতিবাদ না করতে পারে সে কারণেই ক্যাম্পাসে নয় ঢাকায় গোপনে সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ, অবস্থান, মৌনমিছিলসহ সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তারা বলেন, আমরা উপাচার্যের এ নির্দেশনা মানি না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্তাঙ্গন, কিন্তু প্রশাসনের এমন নির্দেশনা মূলত স্বৈরতন্ত্রের শামিল। যদি এই স্বৈরাচারী নির্দেশনা দ্রুত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন বক্তারা। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ একরের সব জায়গায় আমাদের অধিকার আছে। যদি বলেন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে আমাদের পারমিশন নিতে হবে। আমরা কার কাছে পারমিশন নিব। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি আসলে কারা? আসলে এই ক্যাম্পাসের সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা হচ্ছেন উপাচার্য ও তার অনুসারীরা। মানববন্ধন শেষে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যায়, তারা প্রশাসনিক ভবনসহ ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এসে তাদের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে।

এদিকে গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের অপসারণের দাবিতে রসায়ন বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান ও বিক্ষোভ করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্র্থী সবুজ, আল আমিনসহ অন্যরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন লংঘন করে জুনিয়র শিক্ষক তানিয়া তোফাজকে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। অথচ আইন অনুযায়ী এ পদে শিক্ষক লিটন মোহন চাকির দায়িত্ব পাওয়ার কথা। কিন্তু উপাচার্য জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে জুনিয়ন শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান, অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান। বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ ব্যাপারে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানিয়া তোফাজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাটি ক্যাম্পাসের বদলে ঢাকায় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা জারি করা হয়। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়।

ওই অফিস আদেশে প্রশাসনিক ভবন, ভিসির বাংলো, অ্যাকাডেমিক ভবন এবং শ্রেণীকক্ষের সামনে মিছিল-মিটিং, অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ প্রদর্শন, স্লোগান, বক্তব্য প্রদান ও মৌনমিছিলসহসহ সব ধরনের কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি এই নোটিশের নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।