ধর্ষণ কোনটি

দেশে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন বিরোধী কঠোর আইন থাকলেও এ নিয়ে বিভ্রান্তিও কম নেই। প্রেমিক-প্রেমিকা যদি বিয়ের আগেই পরস্পরের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সেটা কী? সেই প্রেমিকা যদি হন অপ্রাপ্তবয়স্ক? বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ-ই বা কাকে বলা হচ্ছে? চলুন জেনে আসি এগুলোর পেছনের আইনি ব্যাখ্যা-

স্বামী বা আইনসিদ্ধ ছেলেবন্ধুটিও যদি নারীর অসম্মতির পর যৌনকর্মে পীড়াপীড়ি করেন, সেটি যৌন নিপীড়ন নামে সংজ্ঞায়িত। অসম্মতির পরও যৌনাচরণ করলেই ধর্ষণ।

বাংলাদেশে অনেক নারী বিয়ের আশ্বাসে সম্মতি দিয়ে তার সঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক করে থাকেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই পুরুষ তাকে বিয়ে করতে না চাইলে অনেকেই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে যেহেতু বলা আছে, যদি প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক করা হয়, তাহলে সেটা ধর্ষণ হিসেবে দেখা হবে।

নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে যদি কোন পুরুষ ১৬ বছরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে যদি তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ক করেন তারপরও তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে। আবার বিবাহবন্ধন ছাড়া ১৬ বছরের বেশি বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি ছাড়া, ভয় দেখিয়ে বা প্রতারণা করে কেউ যদি যৌন সম্পর্ক করে সেটা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে। ভুক্তভোগীর বয়স ১৬ বছরের বেশি হলেও যদি প্রতারণা করে বা ব্ল্যাকমেইল করে তার সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক করা হয়, সেটাও ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে। আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে দায়ী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

দেশের নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে শিশুকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ১৬ বা তার কম বছর বয়সী ছেলে ও মেয়ে উভয়কে। মানবাধিকার সংস্থা ব্লাস্টের গবেষণা বিশেষজ্ঞ তাকবির হুদার মতে, এই সংজ্ঞায় শিশুকে ভুক্তভোগী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই বয়সে মৌখিক বা লিখিত কোন সম্মতি দেয়ার মতো ক্ষমতা শিশুর গড়ে ওঠে না। তাই এই বয়সী কেউ যদি যৌন সম্পর্কে সম্মতি দিয়েও থাকে সেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে না।

আয়েশা সিদ্দিকা

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৫ মাঘ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ধর্ষণ কোনটি

দেশে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন বিরোধী কঠোর আইন থাকলেও এ নিয়ে বিভ্রান্তিও কম নেই। প্রেমিক-প্রেমিকা যদি বিয়ের আগেই পরস্পরের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সেটা কী? সেই প্রেমিকা যদি হন অপ্রাপ্তবয়স্ক? বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ-ই বা কাকে বলা হচ্ছে? চলুন জেনে আসি এগুলোর পেছনের আইনি ব্যাখ্যা-

স্বামী বা আইনসিদ্ধ ছেলেবন্ধুটিও যদি নারীর অসম্মতির পর যৌনকর্মে পীড়াপীড়ি করেন, সেটি যৌন নিপীড়ন নামে সংজ্ঞায়িত। অসম্মতির পরও যৌনাচরণ করলেই ধর্ষণ।

বাংলাদেশে অনেক নারী বিয়ের আশ্বাসে সম্মতি দিয়ে তার সঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক করে থাকেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই পুরুষ তাকে বিয়ে করতে না চাইলে অনেকেই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে যেহেতু বলা আছে, যদি প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক করা হয়, তাহলে সেটা ধর্ষণ হিসেবে দেখা হবে।

নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে যদি কোন পুরুষ ১৬ বছরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে যদি তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ক করেন তারপরও তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে। আবার বিবাহবন্ধন ছাড়া ১৬ বছরের বেশি বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি ছাড়া, ভয় দেখিয়ে বা প্রতারণা করে কেউ যদি যৌন সম্পর্ক করে সেটা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে। ভুক্তভোগীর বয়স ১৬ বছরের বেশি হলেও যদি প্রতারণা করে বা ব্ল্যাকমেইল করে তার সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক করা হয়, সেটাও ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে। আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে দায়ী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

দেশের নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে শিশুকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ১৬ বা তার কম বছর বয়সী ছেলে ও মেয়ে উভয়কে। মানবাধিকার সংস্থা ব্লাস্টের গবেষণা বিশেষজ্ঞ তাকবির হুদার মতে, এই সংজ্ঞায় শিশুকে ভুক্তভোগী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই বয়সে মৌখিক বা লিখিত কোন সম্মতি দেয়ার মতো ক্ষমতা শিশুর গড়ে ওঠে না। তাই এই বয়সী কেউ যদি যৌন সম্পর্কে সম্মতি দিয়েও থাকে সেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে না।

আয়েশা সিদ্দিকা