দুদক কি আসলেই নখদন্তহীন

অর্থপাচার প্রতিরোধ এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুদক যথাযথ ভূমিকা রাখছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। বহু বছর ধরে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার বা ফেরত আনা তো পরের কথা, কে বা কারা টাকা পাচার করছে সেটাই জানাতে পারছে না দুদক। টাকা পাচারের অভিযোগে কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা করলেও বলা যেত যে দুদক কিছু একটা করছে। সংস্থাটির এমন ব্যর্থতার কারণ কী সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

গত রোববার হাইকোর্ট এক পর্যবেক্ষণে বলেছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দন্তহীন বাঘের মতো আচরণ করলে চলবে না। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

দুদক নখদন্তহীন নাকি যথাস্থানে নখদন্তের ব্যবহার করছে না সেটা একটা প্রশ্ন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন রয়েছে। দুর্নীতি দমনে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠান তার আইনি ক্ষমতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলে দেশে দুর্নীতি উদ্বেগজনক স্থানে পৌঁছত না। দুদক আইন অনুযায়ী চলবে, ছোট-বড় সবার বিরুদ্ধে সমান ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশিত।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানকে উদ্দেশ করে বলেন, দুর্নীতি ও অর্থপাচার প্রতিরোধ করতে গিয়ে দুদককে ঢোঁড়া সাপ হলে হবে না, জাত সাপ হতে হবে। আমরা মনে করি, দুদককে কাজ করতে হবে জাতীয় স্বার্থে। দল-মত নির্বিশেষে সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে হবে। কেউ প্রভাবশালী হলেও তাকে ছাড় দেয়া চলবে না। দুর্নীতিগ্রস্ত প্রভাবশালীদের মধ্য থেকে অন্তত দুই-একজনেরও যদি কঠোর আইনি বিচার করা যায় তাহলে দেশে একটি উদাহরণ তৈরি করা যাবে। নইলে দুর্নীতি দমনের স্লোগান বাস্তব রূপ পাবে না- স্লোগানই থেকে যাবে।

মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৬ মাঘ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

দুদক কি আসলেই নখদন্তহীন

অর্থপাচার প্রতিরোধ এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুদক যথাযথ ভূমিকা রাখছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। বহু বছর ধরে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার বা ফেরত আনা তো পরের কথা, কে বা কারা টাকা পাচার করছে সেটাই জানাতে পারছে না দুদক। টাকা পাচারের অভিযোগে কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা করলেও বলা যেত যে দুদক কিছু একটা করছে। সংস্থাটির এমন ব্যর্থতার কারণ কী সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

গত রোববার হাইকোর্ট এক পর্যবেক্ষণে বলেছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দন্তহীন বাঘের মতো আচরণ করলে চলবে না। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

দুদক নখদন্তহীন নাকি যথাস্থানে নখদন্তের ব্যবহার করছে না সেটা একটা প্রশ্ন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন রয়েছে। দুর্নীতি দমনে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠান তার আইনি ক্ষমতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলে দেশে দুর্নীতি উদ্বেগজনক স্থানে পৌঁছত না। দুদক আইন অনুযায়ী চলবে, ছোট-বড় সবার বিরুদ্ধে সমান ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশিত।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানকে উদ্দেশ করে বলেন, দুর্নীতি ও অর্থপাচার প্রতিরোধ করতে গিয়ে দুদককে ঢোঁড়া সাপ হলে হবে না, জাত সাপ হতে হবে। আমরা মনে করি, দুদককে কাজ করতে হবে জাতীয় স্বার্থে। দল-মত নির্বিশেষে সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে হবে। কেউ প্রভাবশালী হলেও তাকে ছাড় দেয়া চলবে না। দুর্নীতিগ্রস্ত প্রভাবশালীদের মধ্য থেকে অন্তত দুই-একজনেরও যদি কঠোর আইনি বিচার করা যায় তাহলে দেশে একটি উদাহরণ তৈরি করা যাবে। নইলে দুর্নীতি দমনের স্লোগান বাস্তব রূপ পাবে না- স্লোগানই থেকে যাবে।