করোনার মধ্যেও ১৬ কোটি ৮৬ লাখ ব্যাগ কফি উৎপাদন

করোনার মধ্যে যখন অন্য উৎপাদনশীল খাতগুলোতে ধস নেমেছে সেখানে বেড়েছে বৈশ্বিক কফি উৎপাদন। লন্ডনের আন্তর্জাতিক কফি সংস্থার (আইওসি) তথ্য অনুসারে, ‘কফিবর্ষে’ (অক্টোবর ২০১৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০) ১৬ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যাগ কফি উৎপাদন হয়েছে। গত বছরে (পূর্ণ এক বছরের হিসাবে) উৎপাদিত মোট কফির পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যাগ, যা ঠিক তার আগের সমপরিমাণ সময়ের চেয়েও অনেকটা বেশি। এর ফলে তিন বছরের ধারাবাহিকতায় কফি উৎপাদন বেড়েছে। এএফপি।

লকডাউনের কারণে অধিক সময় বাসায় অবস্থানে ঘরে কফি গ্রহণ বৃদ্ধি পাওয়া, ভালো দামে বিক্রি হওয়া এবং কিছু দেশে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উৎপাদন কফি খাতকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। করোনার লকডাউনে অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাসা বা অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই অফিস করতে হয়েছে অনেককেই। বাসায় থেকে থেকে একঘেয়েমি, অবসাদ, ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চা-কফি পান করে থাকেন অনেকেই। এভাবেই লাখ লাখ মানুষের গ্রহণের মাধ্যমে বাসা বা বাড়িতে কফির ব্যবহার ছিল উল্লেখ করার মতো। তবে কফি নিয়ে যেমনটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, মূলত তার থেকেও ভালো হয়েছে এর ব্যবহার। এছাড়াও করোনার কারণে অনেক দেশেই ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং ফসল তোলার ক্ষেত্রেও বেগ পেতে হয়েছে কফি চাষিদের। তবে ব্যবসায় যতটা ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা তারা করেছিলেন, ততটা ক্ষতির মধ্যে তাদের পড়তে হয়নি। বৈশ্বিক বিপর্যয়ের কারণে কফি খাতের বৈশ্বিক বিক্রয়ের মোট পরিমাণ ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমার আশঙ্কা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাসায় কফির ব্যবহারের কারণে তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি বিক্রি হয়েছে।

আইওসি বলছে, মহামারীর কারণে অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় কম কফি উৎপাদন হতে পারে, তাই ২০২০-২১ সালে বৈশ্বিক কফি উৎপাদন আগের তুলনায় ৫২ লাখ ৭০ হাজার ব্যাগের কিছুটা বেশি হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। যার প্রবৃদ্ধির হার হবে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। তাছাড়া চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ কফি সরবরাহ করা এর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। বিশ্বব্যাপী মহামারীসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার কারণে ক্রয় ও রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কফি উৎপাদক দেশগুলোর আয়ে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন এসেছিল। কারণ মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে দেশভেদে ডলারের দাম ওঠানামা করে। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ‘এরাবিকা কফি’ ২০২০ সালে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে ১ দশমিক ১০ ডলার (প্রতি পাউন্ড) হারে বাণিজ্য করে। যদিও ২০১৯ সালে এর মূল্য ছিল ১ ডলারেরও নিচে।

অন্যদিকে, উৎপাদনের উচ্চমাত্রার কারণে বিশ্বে শীর্ষ কফি রপ্তানিকারী দেশ ব্রাজিলের ক্ষেত্রে মূল্য অবমূল্যায়ন ঘটেছে। একই অবস্থা কলম্বিয়ার ক্ষেত্রেও। ব্রাজিল প্রকৃত চাহিদার চেয়েও বেশি উৎপাদন করায় ২৯ শতাংশ মুদ্রা অবমূল্যায়ন ঘটে। কলম্বিয়ার ৪ দশমিক ৭ শতাংশ মূল্য অবমূল্যায়ন হয়।

লন্ডনের র‌্যাবোব্যাংকের বিশেষজ্ঞ কার্লোস মিরার রবাত দিয়ে এএফপি বলছে, কফি উৎপাদনকারী অন্য দেশগুলোর থেকেও ২০২০ সালটি ব্রাজিলের জন্য ছিল খুবই ভালো একটি বছর। দেশটির কফি উৎপাদন ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন করে যার পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ ব্যাগ।

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৮ ফাল্গুন ১৪২৭ ৮ রজব ১৪৪২

করোনার মধ্যেও ১৬ কোটি ৮৬ লাখ ব্যাগ কফি উৎপাদন

সংবাদ ডেস্ক |

image

করোনার মধ্যে যখন অন্য উৎপাদনশীল খাতগুলোতে ধস নেমেছে সেখানে বেড়েছে বৈশ্বিক কফি উৎপাদন। লন্ডনের আন্তর্জাতিক কফি সংস্থার (আইওসি) তথ্য অনুসারে, ‘কফিবর্ষে’ (অক্টোবর ২০১৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০) ১৬ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যাগ কফি উৎপাদন হয়েছে। গত বছরে (পূর্ণ এক বছরের হিসাবে) উৎপাদিত মোট কফির পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যাগ, যা ঠিক তার আগের সমপরিমাণ সময়ের চেয়েও অনেকটা বেশি। এর ফলে তিন বছরের ধারাবাহিকতায় কফি উৎপাদন বেড়েছে। এএফপি।

লকডাউনের কারণে অধিক সময় বাসায় অবস্থানে ঘরে কফি গ্রহণ বৃদ্ধি পাওয়া, ভালো দামে বিক্রি হওয়া এবং কিছু দেশে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উৎপাদন কফি খাতকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। করোনার লকডাউনে অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাসা বা অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই অফিস করতে হয়েছে অনেককেই। বাসায় থেকে থেকে একঘেয়েমি, অবসাদ, ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চা-কফি পান করে থাকেন অনেকেই। এভাবেই লাখ লাখ মানুষের গ্রহণের মাধ্যমে বাসা বা বাড়িতে কফির ব্যবহার ছিল উল্লেখ করার মতো। তবে কফি নিয়ে যেমনটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, মূলত তার থেকেও ভালো হয়েছে এর ব্যবহার। এছাড়াও করোনার কারণে অনেক দেশেই ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং ফসল তোলার ক্ষেত্রেও বেগ পেতে হয়েছে কফি চাষিদের। তবে ব্যবসায় যতটা ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা তারা করেছিলেন, ততটা ক্ষতির মধ্যে তাদের পড়তে হয়নি। বৈশ্বিক বিপর্যয়ের কারণে কফি খাতের বৈশ্বিক বিক্রয়ের মোট পরিমাণ ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমার আশঙ্কা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাসায় কফির ব্যবহারের কারণে তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি বিক্রি হয়েছে।

আইওসি বলছে, মহামারীর কারণে অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় কম কফি উৎপাদন হতে পারে, তাই ২০২০-২১ সালে বৈশ্বিক কফি উৎপাদন আগের তুলনায় ৫২ লাখ ৭০ হাজার ব্যাগের কিছুটা বেশি হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। যার প্রবৃদ্ধির হার হবে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। তাছাড়া চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ কফি সরবরাহ করা এর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। বিশ্বব্যাপী মহামারীসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার কারণে ক্রয় ও রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কফি উৎপাদক দেশগুলোর আয়ে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন এসেছিল। কারণ মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে দেশভেদে ডলারের দাম ওঠানামা করে। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ‘এরাবিকা কফি’ ২০২০ সালে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে ১ দশমিক ১০ ডলার (প্রতি পাউন্ড) হারে বাণিজ্য করে। যদিও ২০১৯ সালে এর মূল্য ছিল ১ ডলারেরও নিচে।

অন্যদিকে, উৎপাদনের উচ্চমাত্রার কারণে বিশ্বে শীর্ষ কফি রপ্তানিকারী দেশ ব্রাজিলের ক্ষেত্রে মূল্য অবমূল্যায়ন ঘটেছে। একই অবস্থা কলম্বিয়ার ক্ষেত্রেও। ব্রাজিল প্রকৃত চাহিদার চেয়েও বেশি উৎপাদন করায় ২৯ শতাংশ মুদ্রা অবমূল্যায়ন ঘটে। কলম্বিয়ার ৪ দশমিক ৭ শতাংশ মূল্য অবমূল্যায়ন হয়।

লন্ডনের র‌্যাবোব্যাংকের বিশেষজ্ঞ কার্লোস মিরার রবাত দিয়ে এএফপি বলছে, কফি উৎপাদনকারী অন্য দেশগুলোর থেকেও ২০২০ সালটি ব্রাজিলের জন্য ছিল খুবই ভালো একটি বছর। দেশটির কফি উৎপাদন ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন করে যার পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ ব্যাগ।