রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই

মোস্তাফা জব্বার

মাত্র ক’দিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উচ্চ আদালতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রায় লেখার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে দু-একজন ভাষাপ্রেমিক বিচারপতি ছাড়া উচ্চ আদালতে বাংলায় রায় লেখা হয় না। উচ্চ আদালতের সব কার্যক্রমই ইংরেজিতেই হয়ে থাকে। শুধু উচ্চ আদালত নয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলা ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম একটি ব্যর্থতা হচ্ছে একে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে রাষ্ট্র ও জীবনের সর্বস্তরে প্রয়োগ করতে না পারা। দিনে দিনে সম্ভবত এক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের যতটা পথ এগিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সেখান থেকেও পেছনে যাচ্ছি আমরা।

বাংলাদেশে বাংলা ভাষা-সাহিত্য ও বাংলা হরফ নিয়ে প্রচুর মাতামাতি থাকলেও আসলে বাংলাদেশে বাংলার সেই মর্যাদা নেই যেটির সাংবিধানিক স্বীকৃতি রয়েছে এবং সেই প্রয়োগ নেই যা রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির জন্য তার প্রাপ্য। ২০১৯ সালে এসে জানলাম যে, এটি কাগজে কলমে রাষ্ট্রভাষা হলেও তাতে নাকি ত্রুটি আছে। এর বাইরে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে এর প্রয়োগে আছে চরম অবহেলা। এজন্য বাংলাদেশে বাংলাকে বাচাতে হলে একে প্রকৃত রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে কারও কোন অজুহাত মানা যাবে না।

এটি যে কেমন দুরবস্থায় আছে তার খবরটি পেলাম কয়েক বছর আগে। তখন হাইকোর্ট এক রায়ে অফিস আদালতে, সাইনবোর্ডে, ব্যানারে বাংলা লেখার নির্দেশ দেয়ায় বাংলাদেশি বাঙালি দুই আইনজীবী (ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ ও ব্যারিস্টার তানজীব-দুজনেই নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আইনজীবী বলে দাবি করেন, তবে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির উকিল বলে সম্ভবত মাতৃভাষার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন।) সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। খবরটি শোনার পর আমি বিস্মিত হয়েছি। দুজনকেই আমি ভালো করে চিনি। তাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে এক সঙ্গে কাজও করি। কিন্তু কোন বাঙালি বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যেতে পারে সেটি ভাবতেও পারিনি আমি। তাদের মতে, বাংলা লেখা হলে সংবিধান লঙ্ঘন হবে। তাদের কথা শুনে আমার মনে হয়েছে, তাহলে বাংলা কি বাংলাদেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রভাষা নয়? সংবিধানে কি এর অন্যথা আছে? সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদ কি তাহলে কার্যকারিতাহীন? যদি সেটি হয়ে থাকে তবে সবার আগে তো সংবিধানের সংশোধন করা দরকার। সংবিধানে জাতির পিতা বাংলাকে এই রাষ্ট্রের একমাত্র রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। এই রাষ্ট্রে বাংলাকে না মানার কোন আইন থাকতে পারে না- থাকতে দেয়া যায় না।

অন্যদিকে আমাদের ভাষার অবস্থাটি কি তার একটি সাধারণ বিবৃতি পেলাম সেদিন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ঢাকার শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক সেমিনারে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভিার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক ড. হাসান সারোয়ার একটি চমৎকার মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা ছেলেমেয়েদের ইংরেজি শেখানোর জন্য অস্থির থাকি-কিন্তু ওরাতো বাংলাই জানে না। বাংলাদেশের শিক্ষার যখন এই অবস্থা তখন আমাদের উচ্চ স্তরের লেখাপড়ার জগতটা পুরোই বাংলাবিহীন হয়ে পড়েছে।

আমরা ভুলে গেছি যে, বাংলাদেশে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৯৪৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আন্দোলনের সূচনা করেন তার অন্যতম দুটি কারণ ছিল; বাঙালির ভাষাপ্রীতি ও ন্যায্য অধিকার আদায়। পাকিস্তানিরা যখন কেবল উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে তখন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের ভাষা বাংলার পক্ষে একটি যুক্তিসঙ্গত বিষয় ছিলো বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেবার। যদিও ১৯৫২ সালে বাঙালিরা সেই লড়াইতে জয়ী হয় তবুও ভাষার আন্দোলন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রূপ নেয় এবং ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রশাসনিক ও কারিগরি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তৎকালে অপটিমা মুনির টাইপরাইটার প্রস্তুত করা ও সরকারি অফিসে বাংলা প্রচলন করার সব উদ্যোগ গ্রহণ করা একটি ঐতিহাসিক কাজ ছিল। তিনি শুধু দেশে নয় জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলার আন্তর্জাতিক সম্মাননা আনেন। তারই পথ ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়েই জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন। কিন্তু এতো বছর পরও বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশে বাংলা তার ন্যায্য মর্যাদা পায় না। এখন তো আমরা ভাষা আন্দোলনের উল্টো পথে হাঁটছি। আমাদের জীবনের সব স্তরে বাংলা প্রচলনের বদলে এখন লড়াই হচ্ছে কত দ্রুত আমরা জীবন থেকে বাংলা ভাষাকে বিদায় করতে পারি। রাষ্ট্র থেকে ব্যক্তিজীবন-সর্বত্র বাংলা ভাষার বিদায়ের ঘণ্টা। সেজন্যই বলতেই হচ্ছে, বাংলা ভাষার বেচে থাকার পথটা মোটেই মসৃণ নেই।

এখানে দেশের অতি সাধারণ মানুষ, দরিদ্র মানুষ, স্বল্পশিক্ষিত বা গ্রামের মানুষ বাংলা চর্চা ব্যাপকভাবে করে। কিন্তু বাংলা ভাষা শহুরে বাংলাদেশির জীবন-জীবিকা, উচ্চশিক্ষা ও উচ্চ আদালতে ‘বেঙ্গলি’ হয়েই আছে। একুশের প্রভাতফেরিতে আসা বিত্তবানদের অনেকেই শহীদ মিনারে ফুল দিলেও মাতৃভাষার প্রতি কোন দরদ পোষণ করেন না। দিনে দিনে সেই অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। শতভাগ আমন্ত্রিত বাংলাদেশি বাঙালি হলেও এমনকি বিয়ের দাওয়াতেও এখন আর বাংলা হরফ ও বাংলা ভাষা বিরাজ করে না। এমনকি ডিজিটাল করার নামে বাংলা ভাষা বিদায় হচ্ছে। সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে সবার আগে ইংরেজি ঠাঁই পায়। কোথাও কোথাও অপসন হিসেবে বাংলা থাকে। সরকারি অফিসেও কাজে কর্মে সুযোগ পেলেই ইংরেজিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সব প্রকল্প দলিল বাংলায় প্রণীত হয়। দোহাই দেয়া হয় যে বাংলা লেখা নাকি বিদেশিরা পড়তে পারে না। অথচ পরিকল্পনা কমিশনের এক সভায় বিশ্বব্যাংক নিজেই বলেছে যে বাংলায় তাদের কোন অসুবিধা নেই। এক সময়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমাদের সরকারি ব্যাংকগুলো বাংলায় কাজ করত। ডিজিটাল করার নামে এখন সেগুলো ইংরেজি হয়েছে। বস্তুত আর্থিক সংস্থাগুলো বাংলাকে ঝেটিয়ে বিদায় করেছে। অন্যদিকে বাংলা ভাষার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশে উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষার প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। উচ্চশিক্ষা বা বিজ্ঞান শিক্ষায় বাংলা ভাষা প্রবেশ করতে পারে না। বাংলা একাডেমি এক সময়ে এসব বিষয়ে পাঠ্যবই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই ধারাটিও ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।

কোন একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যদি একজন বিদেশিও না থাকে তবুও সেই অনুষ্ঠানের ভাষা হয়ে যায় ইংরেজি। ব্যানার, উপস্থাপনের ভাষা ও বক্তৃতা সবই হয় ইংরেজিতে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তো বাংলা ব্যবহার করলে তাদের অপমান হয় তেমন একটি ভাব দেখায়। যত বড় বড় কথাই বলা হোক না কেন, বাংলাদেশে বেসরকারি অফিস ও উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার দিনে দিনে বাড়ার বদলে কমছে। উচ্চ আদালতে বাংলা হরফই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। উচ্চশিক্ষায়ও বাংলা ভাষা ও হরফ নিষিদ্ধ। ফেব্রুয়ারি মাসের বইমেলা ছাড়া আর কোথাও বাংলা ভাষা নিয়ে তেমন মাতামাতিও নেই। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা প্রয়োগের স্রোতটা উল্টোদিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বরং এই কথাটি বলা ভালো যে ডিজিটাল করার প্রথম ও প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাকে বিদায় করা।

বাংলা ভাষার চরম বিকৃতি এফএম রেডিওগুলোতে করা হয়। টিভির অনুষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি বাংলার মিশ্রণে এমনসব নামাকরণ করা হয়, যা শুনলে কষ্ট লাগে। মোবাইলের এসএমএসতো ইংরেজিতে হয়। কম্পিউটারেও রোমান হরফে বাংলা লেখা হয়। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে সরকারের কোন কোন প্রতিষ্ঠান রোমান হরফে বাংলা লেখাকে উৎসাহিত করে।

বাংলাদেশে বাংলা ভাষার গুরুত্ব কতটা তার একটি নমুনা আমি এখানে উল্লেখ করতে পারি। একটি টিভি চ্যানেলে সম্প্রতি বিয়ের কার্ড বিক্রির ওপর একটি জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে ধনী ও শিক্ষিত পরিবারের বিয়ের কার্ডে বাংলা হরফের কোন অস্তিত্বই থাকে না। বাংলা ভাষা ও হরফ ব্যবহার করে স্বল্পশিক্ষিত, গ্রামের মানুষ বা গরিব মানুষ। এতে প্রতীয়মাণ হয় যে বাংলা ভাষার প্রতি এই দেশের বাংলা ভাষাভাষীদের একটি শ্রেণীর দরদ নেই।

যে দেশ ভাষার নামে সৃষ্টি হয়েছে, যে দেশ ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে সেই দেশে বাংলা ভাষা চরমতম অবহেলার বিষয় হয়ে থাকবে সেটি মেনে নেয়া কেমন যেন ভীষণ কষ্টের মনে হয়। মনে হয় আবারও বরকত, সালাম, রফিক জব্বারের রক্তের আহ্বান জানাচ্ছে এই মাতৃভাষা।

আমি আশা করব বাংলাদেশে বাংলা ভাষার প্রকৃত মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে। অতি সংক্ষেপে তার কয়েকটির কথা আমি এখানে উল্লেখ করতে চাই। ক) সরকারি-বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। খ) যেখানে বিদেশি ভাষা ব্যবহার অত্যাবশ্যক সেখানেও সেই ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে হবে। গ) দেশের কোথাও কোন সাইনবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার বা প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হয় এমন সব কিছুতে বাংলা ব্যবহার করতেই হবে। এমনকি অন্য ভাষা ব্যবহার করা হলেও তাতে বাংলা ভাষা বাংলা হরফেই প্রকাশ করতে হবে। ঘ) বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত কোথাও বাংলা হরফ ছাড়া অন্য কোন হরফে বাংলা লেখা যাবে না। ঙ) উচ্চশিক্ষাসহ শিক্ষার সব স্তরে শিক্ষার বাহন হিসেবে বাংলা অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। বিদেশি ভাষায় বিশেষ বিষয় পড়ানো হলেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা শেখাতেই হবে। জ) বাংলাদেশের সব দূতাবাসে বিদেশিদের বাংলা শেখার ব্যবস্থা করতে হবে। ঝ) ডিজিটাল যন্ত্রে ও ডিজিটাল রূপান্তরের নামে বাংলার বদলে অন্য কোন ভাষা ব্যবহার করা যাবেনা। ঞ) রাষ্ট্র বাংলা ভাষার উন্নয়নে সব উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ট) সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগসহ বাংলা শেখার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বস্তুত বাংলা বিভাগ ছাড়া কোন বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত নয়। ঠ) বাংলা লেখার সময় ইংরেজি হরফকে বাংলায় রূপান্তর করার পদ্ধতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বাংলা ভাষার জন্য সরকারের প্রমিত মান সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে। ড) দেশের সব সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদিতে অবশ্যই বাংলা থাকতেই হবে। অপশনাল হিসেবে অন্য ভাষা ব্যবহৃত হতে পারে তবে বাংলা ছাড়া শুধু কোন বিদেশি ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। ঢ) বাংলা ভাষা প্রয়োগবিষয়ক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। ণ) উচ্চ আদালত ও উচ্চশিক্ষাসহ আইন ও শিক্ষায় বাংলাকেই একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।

বাংলা ভাষার নামে জন্ম নেয়া বাংলাদেশে আমরা কোনভাবেই এটি মেনে নিতে পারিনা যে এই ভাষা দেশের অবহেলিত ভাষা হিসেবে টিকে থাকবে। যারা মনে করেন যে বাংলা মূর্খ মানুষের বা গ্রামের মানুষের ভাষা এবং ইংরেজি বিশ্বের ভাষা তাদের অবগতির জন্য বলতে পারি যে সামনের পাঁচ বছরের মাঝে প্রযুক্তির কারণেই ইংরেজির দাপট শূন্যের কোঠায় নেম আসবে। আপনি বাংলায় কথা বলবেন শ্রোতা সেটি তার নিজের মাতৃভাষায় শুনবে। অন্যদিকে বক্তা তার ভাষায় কথা বলবেন আর আপনি বাংলা ভাষাতেই বুঝবেন। আমি এখনই অনুভব করি ইংরেজি জানা লোকের চাইতে জাপানি, কোরীয়, আরবি ভাষা জানলে বিদেশে কর্মসংস্থানটা আগেই হয়।

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক]

mustafajabbar@gmail.com

মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১০ ফাল্গুন ১৪২৭ ১০ রজব ১৪৪২

রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই

মোস্তাফা জব্বার

মাত্র ক’দিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উচ্চ আদালতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রায় লেখার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে দু-একজন ভাষাপ্রেমিক বিচারপতি ছাড়া উচ্চ আদালতে বাংলায় রায় লেখা হয় না। উচ্চ আদালতের সব কার্যক্রমই ইংরেজিতেই হয়ে থাকে। শুধু উচ্চ আদালত নয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলা ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম একটি ব্যর্থতা হচ্ছে একে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে রাষ্ট্র ও জীবনের সর্বস্তরে প্রয়োগ করতে না পারা। দিনে দিনে সম্ভবত এক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের যতটা পথ এগিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সেখান থেকেও পেছনে যাচ্ছি আমরা।

বাংলাদেশে বাংলা ভাষা-সাহিত্য ও বাংলা হরফ নিয়ে প্রচুর মাতামাতি থাকলেও আসলে বাংলাদেশে বাংলার সেই মর্যাদা নেই যেটির সাংবিধানিক স্বীকৃতি রয়েছে এবং সেই প্রয়োগ নেই যা রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির জন্য তার প্রাপ্য। ২০১৯ সালে এসে জানলাম যে, এটি কাগজে কলমে রাষ্ট্রভাষা হলেও তাতে নাকি ত্রুটি আছে। এর বাইরে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে এর প্রয়োগে আছে চরম অবহেলা। এজন্য বাংলাদেশে বাংলাকে বাচাতে হলে একে প্রকৃত রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে কারও কোন অজুহাত মানা যাবে না।

এটি যে কেমন দুরবস্থায় আছে তার খবরটি পেলাম কয়েক বছর আগে। তখন হাইকোর্ট এক রায়ে অফিস আদালতে, সাইনবোর্ডে, ব্যানারে বাংলা লেখার নির্দেশ দেয়ায় বাংলাদেশি বাঙালি দুই আইনজীবী (ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ ও ব্যারিস্টার তানজীব-দুজনেই নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আইনজীবী বলে দাবি করেন, তবে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির উকিল বলে সম্ভবত মাতৃভাষার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন।) সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। খবরটি শোনার পর আমি বিস্মিত হয়েছি। দুজনকেই আমি ভালো করে চিনি। তাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে এক সঙ্গে কাজও করি। কিন্তু কোন বাঙালি বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যেতে পারে সেটি ভাবতেও পারিনি আমি। তাদের মতে, বাংলা লেখা হলে সংবিধান লঙ্ঘন হবে। তাদের কথা শুনে আমার মনে হয়েছে, তাহলে বাংলা কি বাংলাদেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রভাষা নয়? সংবিধানে কি এর অন্যথা আছে? সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদ কি তাহলে কার্যকারিতাহীন? যদি সেটি হয়ে থাকে তবে সবার আগে তো সংবিধানের সংশোধন করা দরকার। সংবিধানে জাতির পিতা বাংলাকে এই রাষ্ট্রের একমাত্র রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। এই রাষ্ট্রে বাংলাকে না মানার কোন আইন থাকতে পারে না- থাকতে দেয়া যায় না।

অন্যদিকে আমাদের ভাষার অবস্থাটি কি তার একটি সাধারণ বিবৃতি পেলাম সেদিন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ঢাকার শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক সেমিনারে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভিার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক ড. হাসান সারোয়ার একটি চমৎকার মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা ছেলেমেয়েদের ইংরেজি শেখানোর জন্য অস্থির থাকি-কিন্তু ওরাতো বাংলাই জানে না। বাংলাদেশের শিক্ষার যখন এই অবস্থা তখন আমাদের উচ্চ স্তরের লেখাপড়ার জগতটা পুরোই বাংলাবিহীন হয়ে পড়েছে।

আমরা ভুলে গেছি যে, বাংলাদেশে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৯৪৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আন্দোলনের সূচনা করেন তার অন্যতম দুটি কারণ ছিল; বাঙালির ভাষাপ্রীতি ও ন্যায্য অধিকার আদায়। পাকিস্তানিরা যখন কেবল উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে তখন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের ভাষা বাংলার পক্ষে একটি যুক্তিসঙ্গত বিষয় ছিলো বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেবার। যদিও ১৯৫২ সালে বাঙালিরা সেই লড়াইতে জয়ী হয় তবুও ভাষার আন্দোলন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রূপ নেয় এবং ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রশাসনিক ও কারিগরি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তৎকালে অপটিমা মুনির টাইপরাইটার প্রস্তুত করা ও সরকারি অফিসে বাংলা প্রচলন করার সব উদ্যোগ গ্রহণ করা একটি ঐতিহাসিক কাজ ছিল। তিনি শুধু দেশে নয় জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলার আন্তর্জাতিক সম্মাননা আনেন। তারই পথ ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়েই জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন। কিন্তু এতো বছর পরও বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশে বাংলা তার ন্যায্য মর্যাদা পায় না। এখন তো আমরা ভাষা আন্দোলনের উল্টো পথে হাঁটছি। আমাদের জীবনের সব স্তরে বাংলা প্রচলনের বদলে এখন লড়াই হচ্ছে কত দ্রুত আমরা জীবন থেকে বাংলা ভাষাকে বিদায় করতে পারি। রাষ্ট্র থেকে ব্যক্তিজীবন-সর্বত্র বাংলা ভাষার বিদায়ের ঘণ্টা। সেজন্যই বলতেই হচ্ছে, বাংলা ভাষার বেচে থাকার পথটা মোটেই মসৃণ নেই।

এখানে দেশের অতি সাধারণ মানুষ, দরিদ্র মানুষ, স্বল্পশিক্ষিত বা গ্রামের মানুষ বাংলা চর্চা ব্যাপকভাবে করে। কিন্তু বাংলা ভাষা শহুরে বাংলাদেশির জীবন-জীবিকা, উচ্চশিক্ষা ও উচ্চ আদালতে ‘বেঙ্গলি’ হয়েই আছে। একুশের প্রভাতফেরিতে আসা বিত্তবানদের অনেকেই শহীদ মিনারে ফুল দিলেও মাতৃভাষার প্রতি কোন দরদ পোষণ করেন না। দিনে দিনে সেই অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। শতভাগ আমন্ত্রিত বাংলাদেশি বাঙালি হলেও এমনকি বিয়ের দাওয়াতেও এখন আর বাংলা হরফ ও বাংলা ভাষা বিরাজ করে না। এমনকি ডিজিটাল করার নামে বাংলা ভাষা বিদায় হচ্ছে। সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে সবার আগে ইংরেজি ঠাঁই পায়। কোথাও কোথাও অপসন হিসেবে বাংলা থাকে। সরকারি অফিসেও কাজে কর্মে সুযোগ পেলেই ইংরেজিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সব প্রকল্প দলিল বাংলায় প্রণীত হয়। দোহাই দেয়া হয় যে বাংলা লেখা নাকি বিদেশিরা পড়তে পারে না। অথচ পরিকল্পনা কমিশনের এক সভায় বিশ্বব্যাংক নিজেই বলেছে যে বাংলায় তাদের কোন অসুবিধা নেই। এক সময়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমাদের সরকারি ব্যাংকগুলো বাংলায় কাজ করত। ডিজিটাল করার নামে এখন সেগুলো ইংরেজি হয়েছে। বস্তুত আর্থিক সংস্থাগুলো বাংলাকে ঝেটিয়ে বিদায় করেছে। অন্যদিকে বাংলা ভাষার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশে উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষার প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। উচ্চশিক্ষা বা বিজ্ঞান শিক্ষায় বাংলা ভাষা প্রবেশ করতে পারে না। বাংলা একাডেমি এক সময়ে এসব বিষয়ে পাঠ্যবই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই ধারাটিও ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।

কোন একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যদি একজন বিদেশিও না থাকে তবুও সেই অনুষ্ঠানের ভাষা হয়ে যায় ইংরেজি। ব্যানার, উপস্থাপনের ভাষা ও বক্তৃতা সবই হয় ইংরেজিতে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তো বাংলা ব্যবহার করলে তাদের অপমান হয় তেমন একটি ভাব দেখায়। যত বড় বড় কথাই বলা হোক না কেন, বাংলাদেশে বেসরকারি অফিস ও উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার দিনে দিনে বাড়ার বদলে কমছে। উচ্চ আদালতে বাংলা হরফই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। উচ্চশিক্ষায়ও বাংলা ভাষা ও হরফ নিষিদ্ধ। ফেব্রুয়ারি মাসের বইমেলা ছাড়া আর কোথাও বাংলা ভাষা নিয়ে তেমন মাতামাতিও নেই। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা প্রয়োগের স্রোতটা উল্টোদিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বরং এই কথাটি বলা ভালো যে ডিজিটাল করার প্রথম ও প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাকে বিদায় করা।

বাংলা ভাষার চরম বিকৃতি এফএম রেডিওগুলোতে করা হয়। টিভির অনুষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি বাংলার মিশ্রণে এমনসব নামাকরণ করা হয়, যা শুনলে কষ্ট লাগে। মোবাইলের এসএমএসতো ইংরেজিতে হয়। কম্পিউটারেও রোমান হরফে বাংলা লেখা হয়। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে সরকারের কোন কোন প্রতিষ্ঠান রোমান হরফে বাংলা লেখাকে উৎসাহিত করে।

বাংলাদেশে বাংলা ভাষার গুরুত্ব কতটা তার একটি নমুনা আমি এখানে উল্লেখ করতে পারি। একটি টিভি চ্যানেলে সম্প্রতি বিয়ের কার্ড বিক্রির ওপর একটি জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে ধনী ও শিক্ষিত পরিবারের বিয়ের কার্ডে বাংলা হরফের কোন অস্তিত্বই থাকে না। বাংলা ভাষা ও হরফ ব্যবহার করে স্বল্পশিক্ষিত, গ্রামের মানুষ বা গরিব মানুষ। এতে প্রতীয়মাণ হয় যে বাংলা ভাষার প্রতি এই দেশের বাংলা ভাষাভাষীদের একটি শ্রেণীর দরদ নেই।

যে দেশ ভাষার নামে সৃষ্টি হয়েছে, যে দেশ ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে সেই দেশে বাংলা ভাষা চরমতম অবহেলার বিষয় হয়ে থাকবে সেটি মেনে নেয়া কেমন যেন ভীষণ কষ্টের মনে হয়। মনে হয় আবারও বরকত, সালাম, রফিক জব্বারের রক্তের আহ্বান জানাচ্ছে এই মাতৃভাষা।

আমি আশা করব বাংলাদেশে বাংলা ভাষার প্রকৃত মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে। অতি সংক্ষেপে তার কয়েকটির কথা আমি এখানে উল্লেখ করতে চাই। ক) সরকারি-বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। খ) যেখানে বিদেশি ভাষা ব্যবহার অত্যাবশ্যক সেখানেও সেই ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে হবে। গ) দেশের কোথাও কোন সাইনবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার বা প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হয় এমন সব কিছুতে বাংলা ব্যবহার করতেই হবে। এমনকি অন্য ভাষা ব্যবহার করা হলেও তাতে বাংলা ভাষা বাংলা হরফেই প্রকাশ করতে হবে। ঘ) বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত কোথাও বাংলা হরফ ছাড়া অন্য কোন হরফে বাংলা লেখা যাবে না। ঙ) উচ্চশিক্ষাসহ শিক্ষার সব স্তরে শিক্ষার বাহন হিসেবে বাংলা অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। বিদেশি ভাষায় বিশেষ বিষয় পড়ানো হলেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা শেখাতেই হবে। জ) বাংলাদেশের সব দূতাবাসে বিদেশিদের বাংলা শেখার ব্যবস্থা করতে হবে। ঝ) ডিজিটাল যন্ত্রে ও ডিজিটাল রূপান্তরের নামে বাংলার বদলে অন্য কোন ভাষা ব্যবহার করা যাবেনা। ঞ) রাষ্ট্র বাংলা ভাষার উন্নয়নে সব উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ট) সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগসহ বাংলা শেখার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বস্তুত বাংলা বিভাগ ছাড়া কোন বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত নয়। ঠ) বাংলা লেখার সময় ইংরেজি হরফকে বাংলায় রূপান্তর করার পদ্ধতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বাংলা ভাষার জন্য সরকারের প্রমিত মান সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে। ড) দেশের সব সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদিতে অবশ্যই বাংলা থাকতেই হবে। অপশনাল হিসেবে অন্য ভাষা ব্যবহৃত হতে পারে তবে বাংলা ছাড়া শুধু কোন বিদেশি ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। ঢ) বাংলা ভাষা প্রয়োগবিষয়ক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। ণ) উচ্চ আদালত ও উচ্চশিক্ষাসহ আইন ও শিক্ষায় বাংলাকেই একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।

বাংলা ভাষার নামে জন্ম নেয়া বাংলাদেশে আমরা কোনভাবেই এটি মেনে নিতে পারিনা যে এই ভাষা দেশের অবহেলিত ভাষা হিসেবে টিকে থাকবে। যারা মনে করেন যে বাংলা মূর্খ মানুষের বা গ্রামের মানুষের ভাষা এবং ইংরেজি বিশ্বের ভাষা তাদের অবগতির জন্য বলতে পারি যে সামনের পাঁচ বছরের মাঝে প্রযুক্তির কারণেই ইংরেজির দাপট শূন্যের কোঠায় নেম আসবে। আপনি বাংলায় কথা বলবেন শ্রোতা সেটি তার নিজের মাতৃভাষায় শুনবে। অন্যদিকে বক্তা তার ভাষায় কথা বলবেন আর আপনি বাংলা ভাষাতেই বুঝবেন। আমি এখনই অনুভব করি ইংরেজি জানা লোকের চাইতে জাপানি, কোরীয়, আরবি ভাষা জানলে বিদেশে কর্মসংস্থানটা আগেই হয়।

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক]

mustafajabbar@gmail.com