সম্পত্তির লোভে মাকে খুন করে অপহরণ নাটক

৩৪ দিন পর লাশ উদ্ধার

যে মা ১০ মাস ১০ দিন পেটে ধরেছেন। নিজে না খেয়ে ছেলেকে খাইয়ে বড় করেছেন। সম্পত্তির জন্য সেই মাকে প্রাণ দিতে হলো সন্তানের হাতে। শুধু তাই নয়, মায়ের বস্তাবন্দী লাশ পুকুরে ফেলে থানায় মা অপহরণ হয়েছে মর্মে জিডি করে পাষ- ছেলে। এ ঘটনা ঘটে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ এলাকায়। নিহত মায়ের নাম মমতাজ বেগম। ঘাতক ছেলের নাম মুন্না বাবু (৩২)।

৩৪ দিন পর সেই হতভাগী মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত। এ ঘটনায় ঘাতক ছেলে মুন্না বাবুসহ জড়িত অপর ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

প্রেস বিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, মমতাজ বেগমের এক ছেলে ও ৩ মেয়ে। মেয়েদের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি একমাত্র ছেলে মুন্না বাবুর সঙ্গে বসবাস করতেন। মা যাতে মেয়েদের সম্পত্তির ভাগ দিতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে বন্ধু রাব্বি ও চাচা আবদুল কাদেরকে নিয়ে মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মুন্না। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২০ জানুয়ারি মমতাজকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দী করে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে ২১ জানুয়ারি ছেলে মুন্না বাবু মিরপুর থানায় তার মাকে কে বা কারা অপহরণ করেছে মর্মে জিডি করে। কেবল তাই নয় এরপর মুন্না তার বন্ধু রাব্বিকে অপহরণকারী সাজিয়ে তার (মুন্না) দুলাভাইয়ের কাছে ফোন করিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

জিডি ও ফোন কলের সূত্র ধরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করে নম্বরটি মুন্œার বন্ধু রাব্বি ব্যবহার করে। গত মঙ্গলবার গোয়েন্দা পুলিশ রাব্বিকে আটক করে। এরপর মুন্না ও তার চাচা আবদুল কাদেরকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, লাশটি পুকুরে রাখা আছে। পরে ঘটনার ৩৪ দিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুকুর থেকে গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রেস বিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফরহাদ হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিনুল ইসলাম, পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন বলেন, গতকাল মিরপুর থানায় এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়। এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নেয় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১২ ফাল্গুন ১৪২৭ ১২ রজব ১৪৪২

সম্পত্তির লোভে মাকে খুন করে অপহরণ নাটক

৩৪ দিন পর লাশ উদ্ধার

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া

যে মা ১০ মাস ১০ দিন পেটে ধরেছেন। নিজে না খেয়ে ছেলেকে খাইয়ে বড় করেছেন। সম্পত্তির জন্য সেই মাকে প্রাণ দিতে হলো সন্তানের হাতে। শুধু তাই নয়, মায়ের বস্তাবন্দী লাশ পুকুরে ফেলে থানায় মা অপহরণ হয়েছে মর্মে জিডি করে পাষ- ছেলে। এ ঘটনা ঘটে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ এলাকায়। নিহত মায়ের নাম মমতাজ বেগম। ঘাতক ছেলের নাম মুন্না বাবু (৩২)।

৩৪ দিন পর সেই হতভাগী মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত। এ ঘটনায় ঘাতক ছেলে মুন্না বাবুসহ জড়িত অপর ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

প্রেস বিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, মমতাজ বেগমের এক ছেলে ও ৩ মেয়ে। মেয়েদের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি একমাত্র ছেলে মুন্না বাবুর সঙ্গে বসবাস করতেন। মা যাতে মেয়েদের সম্পত্তির ভাগ দিতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে বন্ধু রাব্বি ও চাচা আবদুল কাদেরকে নিয়ে মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মুন্না। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২০ জানুয়ারি মমতাজকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দী করে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে ২১ জানুয়ারি ছেলে মুন্না বাবু মিরপুর থানায় তার মাকে কে বা কারা অপহরণ করেছে মর্মে জিডি করে। কেবল তাই নয় এরপর মুন্না তার বন্ধু রাব্বিকে অপহরণকারী সাজিয়ে তার (মুন্না) দুলাভাইয়ের কাছে ফোন করিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

জিডি ও ফোন কলের সূত্র ধরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করে নম্বরটি মুন্œার বন্ধু রাব্বি ব্যবহার করে। গত মঙ্গলবার গোয়েন্দা পুলিশ রাব্বিকে আটক করে। এরপর মুন্না ও তার চাচা আবদুল কাদেরকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, লাশটি পুকুরে রাখা আছে। পরে ঘটনার ৩৪ দিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুকুর থেকে গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রেস বিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফরহাদ হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিনুল ইসলাম, পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন বলেন, গতকাল মিরপুর থানায় এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়। এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নেয় পুলিশ।