লকডাউনেও ঠেকানো যাচ্ছে না মানুষের চলাচল

জরুরি প্রয়োজনের অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছেন

লকডাউন ঘোষণা করে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ করে দেয়া হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না রাস্তায় মানুষের চলাচল। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মানুষ ছুটে বেড়াচ্ছে। কাজ নেই, পাড়া-মহল্লায় নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছে তরুণ ও মধ্য বয়সীরা। অলিগলিতে জরুরি সেবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বন্ধ রাখার কথা এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। প্রথম দিন পুলিশ কিছুটা কঠোর হলেও দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় চলাচালকারীদের আটকানোর কোন নজির চোখে পড়েনি। বিশ্লেষকদের অভিমত লকডাউন আরও কড়াকড়ি না করলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাটের শাটার অর্ধেক খোলা রেখে বেচাবিক্রি চলছে। খোলা রাখার নির্দেশনা নেই এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো একটি শাটার খোলা রেখে বিক্রি করছে। পুলিশের গাড়ি দেখলে শাটার বন্ধ করে দেয় আবার পুলিশের গাড়ি চলে গেলে শাটার খোলে। রাজধানীর হাতিরপুল এলাকাসহ কয়েক স্থানে এ চিত্র বেশি দেখা গেছে। শুধু হাতিরপুল বাজারই নয়, পুরান ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে দোকানপাট খোলা রাখা হয়েছে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে। মানুষ এলাকায় নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লকডাউনের প্রথমদিন পুরান ঢাকায় কয়েকটি এলাকায় দলে দলে মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে। পাড়া-মহল্লায় পুলিশের নজরদারি না থাকায় মানুষ রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাঁচাবাজারগুলোতে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন লক্ষণই দেখা যায়নি। বিভিন্ন কাঁচাবাজারে মানুষ ঈদ উৎসবের মতো কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। আগামীদিনগুলোতে এভাবে চললে যে উদ্দেশ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার তা ভেস্তে যাবে। অর্থাৎ মানুষের রাস্তায় আসা বন্ধ না করলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনার সরকারের সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন থাকলেও গত ২ দিনে সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জরুরি প্রয়োজনের অজুহাতে অপ্রয়োজনীয় কাজে রাস্তায় বের হয়েছেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা তল্লাশি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জেরার মুখে কেউ কেউ স্বীকার করেছেন তাদের কোন প্রয়োজন না থাকলেও তারা রাস্তায় বেরিয়েছেন। অনেকে ওষুধ কেনা, নিত্যপণ্য কেনার জন্য রাস্তায় বের হয়েছেন জানালেও কোন প্রমাণ দিতে পারেননি। পুলিশ প্রথম দিনে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানুষ নানা অজুহাত দেখিয়েছেন।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় আওলাদ হোসেন নামের একজনকে আটকানো হয় শাহবাগে। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান, ওড়না ডেলিভারি দেয়ার জন্য বের হয়েছেন। যাবেন নিউমার্কেট এলাকায়। পরে তাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুধু আওলাদ হোসেনই নয়, জরুরি ওষুধ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত একটি ওষুধ কোম্পানির গাড়ি থামিয়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত জানতে পারে জরুরি ওষুধ সরবরাহের কাজে যুক্ত স্টিকার ব্যবহার করে ওই গাড়িতে চিকিৎসকের জন্য উপহারের খেজুর নিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরে গাড়ির চালককে জরিমানা করা হয়। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘জনসাধারণ আগের তুলনায় বেশি মাস্ক পরে বাইরে বের হলেও অনেকেই প্রয়োজনীয় কারণ ছাড়া রাস্তায় বের হয়েছেন। যারা অপ্রয়োজনে বের হয়েছেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।

পলাশ কুমার বসু বলেন, করোনাকালে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নির্দেশনায় লকডাউন চলছে। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা মাঠে রয়েছি। নিদের্শনা অনুযায়ী যারা আদেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। যারা বিনা কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন, মুভমেন্ট পাস না নিয়ে বাইরে বের হবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তাদের জরিমানা করাও হচ্ছে। জরিমানার পাশাপাশি জনগণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না আসার জন্য এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টানা অভিযানে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয় ৭ হাজার টাকা। গতকাল রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, বিজয়নগর, কাকরাইল, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, বাসাবো, খিলগাঁও, পল্টনসহ অনেক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ ছিল তবে রাস্তায় রিকশা চলাচল বেড়েছে। কিছু সিএনজি অটোরিকশাও চলতে দেখা গেছে। বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়িও। তবে যান ও পথচারী চলাচল নিয়ন্ত্রণে তৎপর ছিলেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও। কয়েকটি স্থানে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে রিকশা উল্টে রাখা ও সিএনজি আটক করার দৃশ্যও দেখা গেছে।

প্রথম দিনে বিভিন্ন সড়কে রাস্তায় বেষ্টনী দিয়ে যান চলাচল বন্ধের যে দৃশ্য দেখা গিয়েছিল দ্বিতীয় দিনে তা ছিল না। পরিবর্তে তল্লাশি চৌকিতে প্রত্যেকটি যানবাহন থামিয়ে মুভমেন্ট পাস আছে কিনা জানতে চাইতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। যারা পাস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের জরিমানা করে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাড়া অন্যদের ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া বাসার বাইরে না আসতে মোড়ে মোড়ে মাইকিংও করা হয়। কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিনের চেয়ে বেশি রিকশা নেমেছে।

রিকশাচালক কালু মিয়া বলেন, স্যার একটু কইয়া দেন, পুলিশ ভাইকে আমার রিকশাটা ছাইড়া দিতে। পেটের খিদায় রাস্তায় নেমেছি। ভুল হইছে আমার, গলিতে থাকা ঠিক ছিল। একটা খেপ কাকরাইলে মারতে আইসা ধরা খেয়েছি। কত রিকশা চলছে, কপাল মন্দ আমি ধরা খাইলাম।

কাকরাইলের মোড়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘লকডাউনে’ কোন ধরনের যানবাহন রাস্তায় বের করা নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে বলেই রিকশাগুলো আটক করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয়া হবে। বিজয়নগরের কাছে দেখা গেছে, ৮টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তার পাশে আটক করে রাখা হয়েছে। আছে কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িও। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, চালকদের কারও ‘মুভমেন্ট পাস’ নেই। তাদের জরিমানা করা হবে।

কর্ণফুলী সুপার মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী হাফিজ বলেন, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত এই মার্কেট বন্ধ থাকবে। দোকানের মালিক-স্টাফরাও প্রবেশ করতে পারবেন না। খুব কড়াকড়ি নির্দেশনা আছে দোকান মালিক কর্তৃপক্ষের। পুরানা পল্টন লেনের বিভিন্ন অলিগলির প্রবেশ পথের গেইটগুলোও বন্ধ করে রাখা হয়েছে যাতে কোন যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে।

পুরানা পল্টনে লেনের বাসিন্দা আবদুস সালাম তালুকদার বলেন, ‘লকডাউনে কড়াকড়ি না করলে কোনভাবে আপনি যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। যেভাবে করোনাভাইরাসে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে তা মহাবিপদের পূর্বাভাস। আমাদের এরিয়াতে সব অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাকে বলা হয়েছে যেন, তারা ঘরের বাইরে না আসেন। বাজার-সদাইয়ের জন্য আমরা এরিয়াতে ঠেলাগাড়িতে তরিতরকারি বিক্রির অনুমতি দিয়েছি। অনেকেই এর সুবিধা পাচ্ছেন। বাজারে সংক্রমণ হার বেশি, যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত বুধবার সকাল থেকে কঠোর বিধিনিষেধ চালু করে সরকার। টানা আটদিনের এই নিষেধাজ্ঞা চলবে ২১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে লকডাউনের মধ্যে পোশাক রপ্তানি প্রতিষ্ঠানসহ শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখা হয়েছে। বাংলা নববর্ষের ছুটির পর গতকাল সকাল ১০টা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য ব্যাংক লেনদেন ও পুঁজিবাজারের কার্যক্রমও চালু হয়েছে।

সরেজিমেনে দেখা গেছে, লকডাউন উপেক্ষা করে যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ি। পণ্যবাহী যান অনেকটাই নির্বিঘ্নে চলাচল করলেও চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকের মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ, শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ড, যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। ঢাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের ওভারব্রিজ থেকে সামান্য পূর্বে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানেই পুলিশ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসগুলোকে থামাচ্ছিল। থামিয়ে পাস কিংবা পরিচয়পত্র পরীক্ষা করছিল। রিকশা এলে তাও থামিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন পুলিশের সদস্যরা।

ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি-প্যাট্রোল) এএসএম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে যেসব গাড়ির চলাচলের অনুমতি নেই সেগুলোকে আমরা ফিরিয়ে দিচ্ছি কিংবা ট্রাফিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। যতদিন লকডাউন থাকবে ততদিন এই ব্যবস্থা থাকবে।’

রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড, শনির আখড়া ব্রিজের উপর অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে গুলিস্তান ও মতিঝিল দিকে যাওয়ার জন্য। কয়েক যাত্রী জানান, তারা ব্যাংকে চাকরি করেন। কিন্তু অফিস থেকে কোন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়নি, তাই কোন না কোনভাবে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে মাতুয়াইল খানবাড়ি মোড় হয়ে কবরস্থানে যাওয়ার সড়কটির বেশিরভাগ অংশ কাঠ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। উত্তর রায়েরবাগ কাঁচাবাজারটি সকালেই ছিল ক্রেতায় সরগরম।

ডিএমপির আহ্বান

এদিকে করোনা মহামারীর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মেনে চলতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপির পাবলিক রিলেশন্স শাখা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়

এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মেনে চলা সব নাগরিকের দায়িত্ব। এসব বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ডিএমপি অঙ্গীকারবদ্ধ। কোন পুলিশ সদস্য যাতে অপেশাদার আচরণ না করেন সে জন্য সর্বদা তাদের আচার-আচরণ মনিটর করা হয়ে থাকে। যথাযথ দায়িত্ব পালনে তাদের উদ্বুদ্ধ করা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ চলমান রয়েছে। পুলিশের কাজে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। কোন ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছেন পুলিশের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবাসহ জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং অতি জরুরি প্রয়োজনে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া বিনা কারণে বা উপযুক্ত পাস ব্যতীত কোন ব্যক্তি যাতে রাস্তায় বের হতে না পারে তা নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টা ডিএমপির সদস্যরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছেন।

শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল ২০২১ , ৩ বৈশাখ ১৪২৮ ৩ রমজান ১৪৪২

লকডাউনেও ঠেকানো যাচ্ছে না মানুষের চলাচল

জরুরি প্রয়োজনের অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছেন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

লকডাউনের প্রথম দিন। রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার চিত্র। মানুষের স্বাভাবিক চলাচল, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা -সংবাদ

লকডাউন ঘোষণা করে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ করে দেয়া হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না রাস্তায় মানুষের চলাচল। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মানুষ ছুটে বেড়াচ্ছে। কাজ নেই, পাড়া-মহল্লায় নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছে তরুণ ও মধ্য বয়সীরা। অলিগলিতে জরুরি সেবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বন্ধ রাখার কথা এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। প্রথম দিন পুলিশ কিছুটা কঠোর হলেও দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় চলাচালকারীদের আটকানোর কোন নজির চোখে পড়েনি। বিশ্লেষকদের অভিমত লকডাউন আরও কড়াকড়ি না করলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাটের শাটার অর্ধেক খোলা রেখে বেচাবিক্রি চলছে। খোলা রাখার নির্দেশনা নেই এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো একটি শাটার খোলা রেখে বিক্রি করছে। পুলিশের গাড়ি দেখলে শাটার বন্ধ করে দেয় আবার পুলিশের গাড়ি চলে গেলে শাটার খোলে। রাজধানীর হাতিরপুল এলাকাসহ কয়েক স্থানে এ চিত্র বেশি দেখা গেছে। শুধু হাতিরপুল বাজারই নয়, পুরান ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে দোকানপাট খোলা রাখা হয়েছে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে। মানুষ এলাকায় নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লকডাউনের প্রথমদিন পুরান ঢাকায় কয়েকটি এলাকায় দলে দলে মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে। পাড়া-মহল্লায় পুলিশের নজরদারি না থাকায় মানুষ রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাঁচাবাজারগুলোতে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন লক্ষণই দেখা যায়নি। বিভিন্ন কাঁচাবাজারে মানুষ ঈদ উৎসবের মতো কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। আগামীদিনগুলোতে এভাবে চললে যে উদ্দেশ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার তা ভেস্তে যাবে। অর্থাৎ মানুষের রাস্তায় আসা বন্ধ না করলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনার সরকারের সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন থাকলেও গত ২ দিনে সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জরুরি প্রয়োজনের অজুহাতে অপ্রয়োজনীয় কাজে রাস্তায় বের হয়েছেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা তল্লাশি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জেরার মুখে কেউ কেউ স্বীকার করেছেন তাদের কোন প্রয়োজন না থাকলেও তারা রাস্তায় বেরিয়েছেন। অনেকে ওষুধ কেনা, নিত্যপণ্য কেনার জন্য রাস্তায় বের হয়েছেন জানালেও কোন প্রমাণ দিতে পারেননি। পুলিশ প্রথম দিনে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানুষ নানা অজুহাত দেখিয়েছেন।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় আওলাদ হোসেন নামের একজনকে আটকানো হয় শাহবাগে। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান, ওড়না ডেলিভারি দেয়ার জন্য বের হয়েছেন। যাবেন নিউমার্কেট এলাকায়। পরে তাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুধু আওলাদ হোসেনই নয়, জরুরি ওষুধ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত একটি ওষুধ কোম্পানির গাড়ি থামিয়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত জানতে পারে জরুরি ওষুধ সরবরাহের কাজে যুক্ত স্টিকার ব্যবহার করে ওই গাড়িতে চিকিৎসকের জন্য উপহারের খেজুর নিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরে গাড়ির চালককে জরিমানা করা হয়। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘জনসাধারণ আগের তুলনায় বেশি মাস্ক পরে বাইরে বের হলেও অনেকেই প্রয়োজনীয় কারণ ছাড়া রাস্তায় বের হয়েছেন। যারা অপ্রয়োজনে বের হয়েছেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।

পলাশ কুমার বসু বলেন, করোনাকালে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নির্দেশনায় লকডাউন চলছে। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা মাঠে রয়েছি। নিদের্শনা অনুযায়ী যারা আদেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। যারা বিনা কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন, মুভমেন্ট পাস না নিয়ে বাইরে বের হবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তাদের জরিমানা করাও হচ্ছে। জরিমানার পাশাপাশি জনগণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না আসার জন্য এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টানা অভিযানে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয় ৭ হাজার টাকা। গতকাল রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, বিজয়নগর, কাকরাইল, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, বাসাবো, খিলগাঁও, পল্টনসহ অনেক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ ছিল তবে রাস্তায় রিকশা চলাচল বেড়েছে। কিছু সিএনজি অটোরিকশাও চলতে দেখা গেছে। বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়িও। তবে যান ও পথচারী চলাচল নিয়ন্ত্রণে তৎপর ছিলেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও। কয়েকটি স্থানে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে রিকশা উল্টে রাখা ও সিএনজি আটক করার দৃশ্যও দেখা গেছে।

প্রথম দিনে বিভিন্ন সড়কে রাস্তায় বেষ্টনী দিয়ে যান চলাচল বন্ধের যে দৃশ্য দেখা গিয়েছিল দ্বিতীয় দিনে তা ছিল না। পরিবর্তে তল্লাশি চৌকিতে প্রত্যেকটি যানবাহন থামিয়ে মুভমেন্ট পাস আছে কিনা জানতে চাইতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। যারা পাস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের জরিমানা করে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাড়া অন্যদের ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া বাসার বাইরে না আসতে মোড়ে মোড়ে মাইকিংও করা হয়। কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিনের চেয়ে বেশি রিকশা নেমেছে।

রিকশাচালক কালু মিয়া বলেন, স্যার একটু কইয়া দেন, পুলিশ ভাইকে আমার রিকশাটা ছাইড়া দিতে। পেটের খিদায় রাস্তায় নেমেছি। ভুল হইছে আমার, গলিতে থাকা ঠিক ছিল। একটা খেপ কাকরাইলে মারতে আইসা ধরা খেয়েছি। কত রিকশা চলছে, কপাল মন্দ আমি ধরা খাইলাম।

কাকরাইলের মোড়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘লকডাউনে’ কোন ধরনের যানবাহন রাস্তায় বের করা নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে বলেই রিকশাগুলো আটক করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয়া হবে। বিজয়নগরের কাছে দেখা গেছে, ৮টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তার পাশে আটক করে রাখা হয়েছে। আছে কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িও। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, চালকদের কারও ‘মুভমেন্ট পাস’ নেই। তাদের জরিমানা করা হবে।

কর্ণফুলী সুপার মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী হাফিজ বলেন, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত এই মার্কেট বন্ধ থাকবে। দোকানের মালিক-স্টাফরাও প্রবেশ করতে পারবেন না। খুব কড়াকড়ি নির্দেশনা আছে দোকান মালিক কর্তৃপক্ষের। পুরানা পল্টন লেনের বিভিন্ন অলিগলির প্রবেশ পথের গেইটগুলোও বন্ধ করে রাখা হয়েছে যাতে কোন যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে।

পুরানা পল্টনে লেনের বাসিন্দা আবদুস সালাম তালুকদার বলেন, ‘লকডাউনে কড়াকড়ি না করলে কোনভাবে আপনি যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। যেভাবে করোনাভাইরাসে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে তা মহাবিপদের পূর্বাভাস। আমাদের এরিয়াতে সব অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাকে বলা হয়েছে যেন, তারা ঘরের বাইরে না আসেন। বাজার-সদাইয়ের জন্য আমরা এরিয়াতে ঠেলাগাড়িতে তরিতরকারি বিক্রির অনুমতি দিয়েছি। অনেকেই এর সুবিধা পাচ্ছেন। বাজারে সংক্রমণ হার বেশি, যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত বুধবার সকাল থেকে কঠোর বিধিনিষেধ চালু করে সরকার। টানা আটদিনের এই নিষেধাজ্ঞা চলবে ২১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে লকডাউনের মধ্যে পোশাক রপ্তানি প্রতিষ্ঠানসহ শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখা হয়েছে। বাংলা নববর্ষের ছুটির পর গতকাল সকাল ১০টা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য ব্যাংক লেনদেন ও পুঁজিবাজারের কার্যক্রমও চালু হয়েছে।

সরেজিমেনে দেখা গেছে, লকডাউন উপেক্ষা করে যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ি। পণ্যবাহী যান অনেকটাই নির্বিঘ্নে চলাচল করলেও চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকের মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ, শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ড, যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। ঢাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের ওভারব্রিজ থেকে সামান্য পূর্বে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানেই পুলিশ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসগুলোকে থামাচ্ছিল। থামিয়ে পাস কিংবা পরিচয়পত্র পরীক্ষা করছিল। রিকশা এলে তাও থামিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন পুলিশের সদস্যরা।

ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি-প্যাট্রোল) এএসএম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে যেসব গাড়ির চলাচলের অনুমতি নেই সেগুলোকে আমরা ফিরিয়ে দিচ্ছি কিংবা ট্রাফিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। যতদিন লকডাউন থাকবে ততদিন এই ব্যবস্থা থাকবে।’

রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড, শনির আখড়া ব্রিজের উপর অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে গুলিস্তান ও মতিঝিল দিকে যাওয়ার জন্য। কয়েক যাত্রী জানান, তারা ব্যাংকে চাকরি করেন। কিন্তু অফিস থেকে কোন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়নি, তাই কোন না কোনভাবে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে মাতুয়াইল খানবাড়ি মোড় হয়ে কবরস্থানে যাওয়ার সড়কটির বেশিরভাগ অংশ কাঠ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। উত্তর রায়েরবাগ কাঁচাবাজারটি সকালেই ছিল ক্রেতায় সরগরম।

ডিএমপির আহ্বান

এদিকে করোনা মহামারীর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মেনে চলতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপির পাবলিক রিলেশন্স শাখা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়

এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মেনে চলা সব নাগরিকের দায়িত্ব। এসব বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ডিএমপি অঙ্গীকারবদ্ধ। কোন পুলিশ সদস্য যাতে অপেশাদার আচরণ না করেন সে জন্য সর্বদা তাদের আচার-আচরণ মনিটর করা হয়ে থাকে। যথাযথ দায়িত্ব পালনে তাদের উদ্বুদ্ধ করা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ চলমান রয়েছে। পুলিশের কাজে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। কোন ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছেন পুলিশের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবাসহ জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং অতি জরুরি প্রয়োজনে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া বিনা কারণে বা উপযুক্ত পাস ব্যতীত কোন ব্যক্তি যাতে রাস্তায় বের হতে না পারে তা নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টা ডিএমপির সদস্যরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছেন।