রমজানের শুরুতেই বাজারে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কোন পদক্ষেপ নেই সরকারের। অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে সবজির দাম। শসা, ঢেঁড়স, বরবটিসহ প্রায় অধিকাংশ সবজি প্রতি কেজি একশ’ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুনের দাম। এই সবজিটির প্রতি কেজি একশ’ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তবে সামান্য কমেছে বয়লার মুরগির দাম। প্রতি কেজিতে বয়লারের দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য দেখা গেছে। গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, মান ও বাজার ভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে বেশিরভাগ বাজারে বেগুনের কেজি ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনে ডাটার দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে।

দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে পটল, বরবটি, শিম, ঢেঁড়স, টমেটোসহ অন্যান্য সবজিগুলোও। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৪০ টাকা কেজিতে নেমে আসা শিমের কেজি আবার ৬০ টাকায় উঠেছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ধুন্দুলের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

রমজান মাসে চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে পাকা টমেটো ও শসার। গত সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। খিরা ৫০ টাকা। শসার দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। মটরশুঁটির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লেবুর দাম বেড়ে হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এছাড়া শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকা, রসুনের কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকা। হলুদ ১৮০ টাকা থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা, নাজির ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, স্বর্ণা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, পোলাও চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। খোলা ভোজ্যতেলর লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৩৯ টাকা। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের দাম কমে ডজন এখন ১৩৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা।

সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা। আর লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি।

সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে শাকের। বাজার থেকে এখন শাক এক আটি কিনতে ১৫ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল শাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমি শাক। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

এসব বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংস, মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়।

এসব বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, মাগুর মাছ ৬০০ টাকা, প্রতি এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, মৃগেল ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, ফোলি মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পোয়া মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, টেংরা মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, টাটকিনি মাছ ১০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, সিলভার কাপ ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি কৈ মাছ ১৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কাঁচকি ও মলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় মাছ ৫০০, রিডা মাছ ২২০ টাকা ও কোরাল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বাইলা ১২০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।