ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও অর্ধশতাধিক। গতকাল সকাল ৯টার দিকে খলাপাড়া গ্রামে অস্থায়ী খোলায় ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষে নিহতরা হলেন, খলাপাড়া গ্রামের মৃত শেখ মোতালিব মিয়ার ছেলে মকবুল মিয়া (৪০) ও একই বংশের লুন্দিয়া গ্রামের আবদুল খালেক মিয়ার ছেলে পাভেল (২২)। গুরুতর আহত ৯ জনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এতে ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতরা হলো, আবু তাহেরের ছেলে ইকবাল (৩০), ধন মিয়ার ছেলে খাইরুল (৩৬), আবদুর রউফের স্ত্রী বিপাশা (২৫), সংঘর্ষে নিহত মকবুলের স্ত্রী শেফালী (৩০), শহীদ মিয়ার ছেলে হৃদয় (২৪), ইদ্রিস মিয়ার ছেলে খাইরুল (২৪), নজরুল ইসলামের ছেলে মুছা (২৪), উসমান মিয়ার ছেলে শিবলী (৩৫), মজনু মিয়ার ছেলে কালা মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বর্তমানে ভৈরব থানা পুলিশ ওই এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২ বছর যাবত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শেখ বাড়ির সঙ্গে সিকদার বাড়ির লোকজনের ছোটখাট সংঘর্ষ লেগেই আছে। গতকাল সকালে ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে শেখ বাড়ির সঙ্গে সিকদার বাড়ির মঞ্জু মেম্বারের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। এতে শেখ বাড়ির শেখ মোতালিব মিয়ার ছেলে শেখ মকবুল হোসেন নিহত হয়। সংঘর্ষে লুন্দিয়া এলাকার শেখ বাড়ির লোকজন খলাপাড়া ঝগড়ায় জড়িত হলে ঝগড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে লুন্দিয়া গ্রামের শেখ বাড়ির লোকজনদের উপর বেলা ১২টার দিকে পাগলা বাড়ির লোকজন সিকদার বাড়ির পক্ষ নিয়ে তাদের অতর্কিত হামলা করে। হামলায় শেখ খালেক মিয়ার ছেলে শেখ পাভেল নিহত হয়। নিহত পাভেল ও মকবুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুলিয়ারচরে কাঁচা আম
পাড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
নিহত ১ আহত ১০
এদিকে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইদল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে লিটন মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যলালপুর এলাকার আব্বাছ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের প্রায় ২০/২৫টি বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তাদের স্বজনরা। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সকাল ১০টার দিকে ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. রেজওয়ান দীপু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ১৬ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে গাছ থেকে কাঁচা আম পারাকে কেন্দ্র করে এলাকার কাঞ্জিবাড়ি ও উমরাবাড়ির বাচ্চাদের মাঝে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে রাতেই উভয়পক্ষের লোকজন সালিসে বসেন। কিন্তু সেই সালিস বৈঠক মীমাংসা ছাড়াই শেষ হয়।
গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উমরাবাড়ির মিশ্রি মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন লোক কাঞ্জিবাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে লিটন মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এ প্রসঙ্গে ঘটনাস্থলে থাকা কুলিয়ারচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান জানান, এমন একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১ , ৫ বৈশাখ ১৪২৮ ৫ রমজান ১৪৪২
প্রতিনিধি, ভৈরব
ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও অর্ধশতাধিক। গতকাল সকাল ৯টার দিকে খলাপাড়া গ্রামে অস্থায়ী খোলায় ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষে নিহতরা হলেন, খলাপাড়া গ্রামের মৃত শেখ মোতালিব মিয়ার ছেলে মকবুল মিয়া (৪০) ও একই বংশের লুন্দিয়া গ্রামের আবদুল খালেক মিয়ার ছেলে পাভেল (২২)। গুরুতর আহত ৯ জনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এতে ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতরা হলো, আবু তাহেরের ছেলে ইকবাল (৩০), ধন মিয়ার ছেলে খাইরুল (৩৬), আবদুর রউফের স্ত্রী বিপাশা (২৫), সংঘর্ষে নিহত মকবুলের স্ত্রী শেফালী (৩০), শহীদ মিয়ার ছেলে হৃদয় (২৪), ইদ্রিস মিয়ার ছেলে খাইরুল (২৪), নজরুল ইসলামের ছেলে মুছা (২৪), উসমান মিয়ার ছেলে শিবলী (৩৫), মজনু মিয়ার ছেলে কালা মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বর্তমানে ভৈরব থানা পুলিশ ওই এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২ বছর যাবত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শেখ বাড়ির সঙ্গে সিকদার বাড়ির লোকজনের ছোটখাট সংঘর্ষ লেগেই আছে। গতকাল সকালে ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে শেখ বাড়ির সঙ্গে সিকদার বাড়ির মঞ্জু মেম্বারের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। এতে শেখ বাড়ির শেখ মোতালিব মিয়ার ছেলে শেখ মকবুল হোসেন নিহত হয়। সংঘর্ষে লুন্দিয়া এলাকার শেখ বাড়ির লোকজন খলাপাড়া ঝগড়ায় জড়িত হলে ঝগড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে লুন্দিয়া গ্রামের শেখ বাড়ির লোকজনদের উপর বেলা ১২টার দিকে পাগলা বাড়ির লোকজন সিকদার বাড়ির পক্ষ নিয়ে তাদের অতর্কিত হামলা করে। হামলায় শেখ খালেক মিয়ার ছেলে শেখ পাভেল নিহত হয়। নিহত পাভেল ও মকবুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুলিয়ারচরে কাঁচা আম
পাড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
নিহত ১ আহত ১০
এদিকে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইদল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে লিটন মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যলালপুর এলাকার আব্বাছ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের প্রায় ২০/২৫টি বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তাদের স্বজনরা। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সকাল ১০টার দিকে ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. রেজওয়ান দীপু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ১৬ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে গাছ থেকে কাঁচা আম পারাকে কেন্দ্র করে এলাকার কাঞ্জিবাড়ি ও উমরাবাড়ির বাচ্চাদের মাঝে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে রাতেই উভয়পক্ষের লোকজন সালিসে বসেন। কিন্তু সেই সালিস বৈঠক মীমাংসা ছাড়াই শেষ হয়।
গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উমরাবাড়ির মিশ্রি মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন লোক কাঞ্জিবাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে লিটন মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এ প্রসঙ্গে ঘটনাস্থলে থাকা কুলিয়ারচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান জানান, এমন একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।