করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে লকডাউন কার্যকরে দায়িত্ব পালনের সময় মাঠপর্যায়ের কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অসহযোগিতার অভিযোগ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ ব্যাখ্যা দেয়া হয়। ব্যাখ্যায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে জনগণের সহায়তা চাওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় করোনা সংক্রমণ রোধে চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারি আদেশ বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অসহযোগিতার কিছু অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসব তথ্য ও সংবাদ উঠে এসেছে গণমাধ্যমেও। বিষয়টি পুলিশ সদর দফতরের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের বক্তব্য জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে উপস্থাপন করা হলো : করোনার এই অতিমারিতে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশ সর্বতোভাবে দেশের মানুষের পাশে থেকেছে। অতিমারীর শুরুতে যখন প্রচন্ড ভয় ও বিভীষিকা গ্রাস করেছে সারা পৃথিবীকে, সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে অনেকেই যখন দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে; তখন পুলিশের দুই লক্ষাধিক সদস্য জীবনের পরোয়া না করে ভালোবেসে মানুষের পাশে থেকেছে। করোনায় মৃতের জানাজা ও দাফন এবং খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ, চিকিৎসক ও জরুরি সেবাকর্মীদের যাতায়াতে সহায়তা, শিল্প উৎপাদন, কৃষি পণ্যের পরিবহন ও বিপণনে সহায়তা ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসা পেয়েছে পুলিশ।
কর্তব্যরত অবস্থায় আক্রান্ত হয়ে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশের মোট ৯১ জন কর্মকর্তা ও সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন। অবসরোত্তর ছুটি ও অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা ও সদস্য এবং পরিবারের সদস্যদের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে নিহতের এই সংখ্যা অনেক বেশি। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য। দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় আত্মোৎসর্গকারী এই বীর সেনানীদের জন্য পুলিশ গর্বিত। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দূরদর্শী সিদ্ধান্তে করোনা মোকাবিলায় পৃথিবীর সফলতম দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পুলিশও সরকারের সব নির্দেশনা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও ডেডিকেশনের সঙ্গে পালন করেছে। ড. বেনজীর আহমেদের উদ্যোগে পুলিশ সদর দপ্তর দ্রুততম সময়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিওর) প্রণয়ন করেছে। চালু হয়েছে প্যান্ডেমিক পুলিশিং, যা সারাদেশে করোনা সংক্রমণ রোধে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করেছে। করোনার প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলা করেছে পুলিশ। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে। ১৪ এপ্রিল ভোর হতে ২১ এপ্রিল মাঝরাত পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। পুলিশের সদস্যরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা সংক্রমণ রোধের স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে সার্বক্ষণিক রাস্তায় রয়েছে। পাশাপাশি, চলমান রয়েছে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নিয়মিত দায়িত্ব পালনও। দৃশ্যত বিনা কারণে বের হওয়া এবং জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে গিয়ে এবং অহেতুক কাজে বের হওয়া থেকে তাদের বিরত রাখতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। এছাড়া, বিনা জিজ্ঞাসাবাদে জরুরী প্রয়োজন নিরূপণ করার কোন উপায়ও নেই। করোনাকালে মানুষের মুভমেন্ট ও কার্যক্রম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছে পুলিশ। জনকল্যাণে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের সুবিধার্থে আইজিপি’র নির্দেশে জনস্বার্থে ১৩ এপ্রিল চালু হয়েছে মুভমেন্ট পাস। মুভমেন্ট পাস গ্রহণ বাধ্যতামূলক নয় এবং সরকার ঘোষিত জরুরি সেবায় নিয়োজিত কতিপয় পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য এই পাসের প্রয়োজন নেই, যা উ?দ্বোধ?নের দিন প্রেস ব্রি?ফিং এ স্পষ্ট করা হ?য়ে?ছে। জরুরি কাজে যাতায়াতকারী ব্যক্তিরা পুলিশ চেকপোস্ট অতিক্রমের সুবিধার্থেই এই পাস সংগ্রহ করছেন। ১৭ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত মুভমেন্ট পাসের জন্য প্রায় ১৭ কোটির বে?শি হিট বা চেষ্টা হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় কী বিপুল সংখ্যক মানুষ মুভমেন্ট পাস পেতে চেষ্টা করেছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষ একই সঙ্গে এই পাসের জন্য আবেদন করায় প্রথমদিকে সার্ভারের ওপর বাড়তি চাপ ছিল। সেজন্য সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যক সার্ভার বাড়ানো হয়েছে। মুভমেন্ট পাস চালু হওয়ায় মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়েছে, যা করোনার ভয়ানক সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরকারি নির্দেশনার কঠোর বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের সব পুলিশ সদস্য সর্বোচ্চ ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের সদস্যগণ বৈশাখের এই তীব্র দাবদাহে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করছেন। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন তারা। কাজ করছেন দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। সবাইকে সহায়তা করাই পুলিশের উদ্দেশ্য।
রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১ , ৫ বৈশাখ ১৪২৮ ৫ রমজান ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে লকডাউন কার্যকরে দায়িত্ব পালনের সময় মাঠপর্যায়ের কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অসহযোগিতার অভিযোগ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ ব্যাখ্যা দেয়া হয়। ব্যাখ্যায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে জনগণের সহায়তা চাওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় করোনা সংক্রমণ রোধে চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারি আদেশ বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অসহযোগিতার কিছু অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসব তথ্য ও সংবাদ উঠে এসেছে গণমাধ্যমেও। বিষয়টি পুলিশ সদর দফতরের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের বক্তব্য জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে উপস্থাপন করা হলো : করোনার এই অতিমারিতে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশ সর্বতোভাবে দেশের মানুষের পাশে থেকেছে। অতিমারীর শুরুতে যখন প্রচন্ড ভয় ও বিভীষিকা গ্রাস করেছে সারা পৃথিবীকে, সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে অনেকেই যখন দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে; তখন পুলিশের দুই লক্ষাধিক সদস্য জীবনের পরোয়া না করে ভালোবেসে মানুষের পাশে থেকেছে। করোনায় মৃতের জানাজা ও দাফন এবং খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ, চিকিৎসক ও জরুরি সেবাকর্মীদের যাতায়াতে সহায়তা, শিল্প উৎপাদন, কৃষি পণ্যের পরিবহন ও বিপণনে সহায়তা ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসা পেয়েছে পুলিশ।
কর্তব্যরত অবস্থায় আক্রান্ত হয়ে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশের মোট ৯১ জন কর্মকর্তা ও সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন। অবসরোত্তর ছুটি ও অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা ও সদস্য এবং পরিবারের সদস্যদের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে নিহতের এই সংখ্যা অনেক বেশি। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য। দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় আত্মোৎসর্গকারী এই বীর সেনানীদের জন্য পুলিশ গর্বিত। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দূরদর্শী সিদ্ধান্তে করোনা মোকাবিলায় পৃথিবীর সফলতম দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পুলিশও সরকারের সব নির্দেশনা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও ডেডিকেশনের সঙ্গে পালন করেছে। ড. বেনজীর আহমেদের উদ্যোগে পুলিশ সদর দপ্তর দ্রুততম সময়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিওর) প্রণয়ন করেছে। চালু হয়েছে প্যান্ডেমিক পুলিশিং, যা সারাদেশে করোনা সংক্রমণ রোধে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করেছে। করোনার প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলা করেছে পুলিশ। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে। ১৪ এপ্রিল ভোর হতে ২১ এপ্রিল মাঝরাত পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। পুলিশের সদস্যরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা সংক্রমণ রোধের স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে গ্রীষ্মের এই দাবদাহে সার্বক্ষণিক রাস্তায় রয়েছে। পাশাপাশি, চলমান রয়েছে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নিয়মিত দায়িত্ব পালনও। দৃশ্যত বিনা কারণে বের হওয়া এবং জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে গিয়ে এবং অহেতুক কাজে বের হওয়া থেকে তাদের বিরত রাখতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। এছাড়া, বিনা জিজ্ঞাসাবাদে জরুরী প্রয়োজন নিরূপণ করার কোন উপায়ও নেই। করোনাকালে মানুষের মুভমেন্ট ও কার্যক্রম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছে পুলিশ। জনকল্যাণে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের সুবিধার্থে আইজিপি’র নির্দেশে জনস্বার্থে ১৩ এপ্রিল চালু হয়েছে মুভমেন্ট পাস। মুভমেন্ট পাস গ্রহণ বাধ্যতামূলক নয় এবং সরকার ঘোষিত জরুরি সেবায় নিয়োজিত কতিপয় পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য এই পাসের প্রয়োজন নেই, যা উ?দ্বোধ?নের দিন প্রেস ব্রি?ফিং এ স্পষ্ট করা হ?য়ে?ছে। জরুরি কাজে যাতায়াতকারী ব্যক্তিরা পুলিশ চেকপোস্ট অতিক্রমের সুবিধার্থেই এই পাস সংগ্রহ করছেন। ১৭ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত মুভমেন্ট পাসের জন্য প্রায় ১৭ কোটির বে?শি হিট বা চেষ্টা হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় কী বিপুল সংখ্যক মানুষ মুভমেন্ট পাস পেতে চেষ্টা করেছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষ একই সঙ্গে এই পাসের জন্য আবেদন করায় প্রথমদিকে সার্ভারের ওপর বাড়তি চাপ ছিল। সেজন্য সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যক সার্ভার বাড়ানো হয়েছে। মুভমেন্ট পাস চালু হওয়ায় মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়েছে, যা করোনার ভয়ানক সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরকারি নির্দেশনার কঠোর বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের সব পুলিশ সদস্য সর্বোচ্চ ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের সদস্যগণ বৈশাখের এই তীব্র দাবদাহে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করছেন। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন তারা। কাজ করছেন দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। সবাইকে সহায়তা করাই পুলিশের উদ্দেশ্য।