লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে

পঞ্চম দিনও রাস্তায় মানুষ চলাচল নিয়ন্ত্রণহীন

চলমান ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। আজ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। গত তিনদিন দেশে রেকর্ড দৈনিক শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার গঠিত ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ও টানা দুই সপ্তাহের ‘লকডাউন’ দেয়ার সুপারিশ করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও জানিয়েছেন, সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে কমপক্ষে তিন সপ্তাহের লকডাউন প্রয়োজন। এ কারণে ‘লকডাউন’ আপাতত আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

চলমান ৮ দিনের ‘লকডাউন’র মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২১ এপ্রিল রাত ১২টায়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ১৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি শীর্ষ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকে মতামত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে চলমান ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২২ এপ্রিল থেকে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকরের সিদ্ধান্ত হতে পারে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি পরামর্শক কমিটি ও সমাজ সচেতন মহলসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে ‘লকডাউন’ বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তারা বলছেন, কঠোর ‘লকডাউন’ ছাড়া করোনা সংক্রমণের গতি থামানো যাবে না। সংক্রমণের সংখ্যা ও শনাক্তের হার এবং মৃত্যু, এই তিনটি সূচক এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে রয়েছে।

গত মার্চের শুরু থেকেই দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। গতকাল দেশে রেকর্ড ১০২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগের দু’দিনও দেশে ১০১ জনে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ১৪ থেকে আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরুর ঘোষণা দেয়। চলমান ‘লকডাউনে’ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে শিল্প ও কলকারখানা খোলা রয়েছে।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিনেও রাজধানীতে মানুষের চলাচল ও যানবাহন দেখা গেছে। হাটবাজারগুলোতেও ছিল মানুষের ভিড়। গতকাল দু’একটি চেকপোস্টে পুলিশকে তৎপর দেখা গেলেও তা ছিল অল্প সময়ের জন্য। প্রধান সড়কে মানুষের চলাচল কম চোখে পড়লেও পাড়া-মহল্লায় মানুষের চলাচল ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। এমন পরিস্থিতিতে সর্বাত্মক লকডাউনের কার্যকারিতা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কোনভাবেই মানুষকে রাস্তায় নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না।

গতকাল সরেজমিনে বাসাবো, মুগদা, খিলগাঁও, পল্টন, মালিবাগ, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতে দোকানপাট খোলা। রিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলের ব্যাপক চলাচল। বাস বন্ধ থাকায় মানুষ রিকশায় বেশি ঘুরছে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় রিকশায় যাতায়াত করছেন। যারা দূরের কোন গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চলাফেরা করছেন। আবার অনেকেই মোটরসাইকেলে চলাফেরা করছেন। গতকাল রাজারবাগ মোড়ে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাড়ির উল্টোদিকে পুলিশ চেকপোস্টে অবস্থান নেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আকতার হোসেন। এ সময় রিকশায় দু’জন যেতে দেখে থামিয়ে একজনকে নামিয়ে দিতে দেখা গেছে। পুলিশ মুভমেন্ট পাস আছে কিনা তা নিয়ে জিজ্ঞেস করতে দেখা গেছে। এ সময় পুলিশসহ কয়েক মোটরসাইকেল আরোহীর বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করা হয় তার নির্দেশে। ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার থামিয়ে রাস্তায় চলাচলের কারণ জানতে চাইলে অধিকাংশ করোনা রোগী, রোগী আনতে যাচ্ছেন এমন অজুহাত দেখিয়েছেন। আবার অনেকে নিজেদের জরুরি সেবার কাজে যুক্ত বলেও দাবি করেন। ওই চেকপোস্ট অতিক্রম করে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ব্যাপক মানুষকে রিকশা, ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, সিএনজিতে যেতে দেখা গেছে।

খিলগাঁওয়ে অন্য দিনের মতোও কাঁচাবাজারের সামনের দোকান খোলা থাকলেও গতকাল তা ছিল না। তবে মার্কেটের ভেতরে দোকানপাট খোলা ছিল। ফুটপাতে মুরগি ও কাঁচা তরিতরকারির কিছু দোকান খোলা ছিল। প্রচুর রিকশাযাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। মালিবাগ মোড়েও দেখা গেছে একই চিত্র। শান্তিনগর এলাকায় ব্যাপক জনসমাগম এবং গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এসব এলাকায় লডডাউন উপেক্ষা করে যারা রাস্তায় চলাচল করছেন তারা কী প্রয়োজনে রাস্তায় আছেন তা জিজ্ঞেস করতে দেখা যায়নি। একই অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়।

লকডাউন পরিস্থিতি দেখতে উত্তরা, মিরপুর রোড, কাকরাইল, মোহাম্মদপুর, আসাদগেটসহ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, ‘লকডাউনের প্রথম চারদিনের তুলনায় গতকাল ওইসব এলাকায় পঞ্চম দিনে রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের ভিড় অনেক বেশি ছিল। গতকাল সকাল ১০টায় বনানী থেকে উত্তরার দিকে যেতে র‌্যাডিসন হোটেলের সামনে যানবাহনের সারি ছিল চোখে পড়ার মতো। যার মধ্যে বেশিরভাগই প্রাইভেটকার, কাভার্ড ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। লকডাউনের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও কল-কারখানা ও ব্যাংকিং সেবার মতো জরুরি কার্যক্রম চলমান আছে। বিমানবন্দর সড়কের মতো মিরপুর রোড ও কাকরাইলের বিভিন্ন সড়কেও গণপরিবহন বাদে অন্যান্য যানবাহনের আধিক্য চোখে পড়েছে। কিছু কিছু সিগন্যালে অল্প সময়ের জন্য হলেও যান চলাচল থামতে দেখা যায়। বেগম রোকেয়া সরণি, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার চিত্রও অনেকটা একই রকম।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় মূলত অফিসগামী লোকজনের কারণেই গত শুক্র ও শনিবারের তুলনায় যানবাহন চলাচল বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় যানবাহনের চাপ ছিল। বিভিন্ন চেকপোস্টে ব্যক্তিগত যানবাহন থামিয়ে পুলিশ মুভমেন্ট পাস আছে কিনা তা দেখতে চাওয়া হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, লকডাউন কার্যকরে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে সাধারণ মানুষ তা মানতে চায় না। নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে। অযথা ঘোরাফেরা করছে। পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সদস্যরাও হাল ছেড়ে দিয়েছেন। কোনভাবেই মানুষকে ঘর থেকে বের হওয়া থামানো যাচ্ছে না। পাড়া-মহল্লায় নিত্যপণ্য কেনার অজুহাতে মানুষ নির্বিঘেœ চলাফেরা করছে। পুলিশ গেলে সরে যায় আবার আড্ডায় মেতে ওঠে।

সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১ , ৬ বৈশাখ ১৪২৮ ৬ রমজান ১৪৪২

লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে

পঞ্চম দিনও রাস্তায় মানুষ চলাচল নিয়ন্ত্রণহীন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

চলমান ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। আজ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। গত তিনদিন দেশে রেকর্ড দৈনিক শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার গঠিত ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ও টানা দুই সপ্তাহের ‘লকডাউন’ দেয়ার সুপারিশ করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও জানিয়েছেন, সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে কমপক্ষে তিন সপ্তাহের লকডাউন প্রয়োজন। এ কারণে ‘লকডাউন’ আপাতত আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

চলমান ৮ দিনের ‘লকডাউন’র মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২১ এপ্রিল রাত ১২টায়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ১৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি শীর্ষ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকে মতামত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে চলমান ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২২ এপ্রিল থেকে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকরের সিদ্ধান্ত হতে পারে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি পরামর্শক কমিটি ও সমাজ সচেতন মহলসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে ‘লকডাউন’ বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তারা বলছেন, কঠোর ‘লকডাউন’ ছাড়া করোনা সংক্রমণের গতি থামানো যাবে না। সংক্রমণের সংখ্যা ও শনাক্তের হার এবং মৃত্যু, এই তিনটি সূচক এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে রয়েছে।

গত মার্চের শুরু থেকেই দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। গতকাল দেশে রেকর্ড ১০২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগের দু’দিনও দেশে ১০১ জনে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ১৪ থেকে আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরুর ঘোষণা দেয়। চলমান ‘লকডাউনে’ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে শিল্প ও কলকারখানা খোলা রয়েছে।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিনেও রাজধানীতে মানুষের চলাচল ও যানবাহন দেখা গেছে। হাটবাজারগুলোতেও ছিল মানুষের ভিড়। গতকাল দু’একটি চেকপোস্টে পুলিশকে তৎপর দেখা গেলেও তা ছিল অল্প সময়ের জন্য। প্রধান সড়কে মানুষের চলাচল কম চোখে পড়লেও পাড়া-মহল্লায় মানুষের চলাচল ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। এমন পরিস্থিতিতে সর্বাত্মক লকডাউনের কার্যকারিতা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কোনভাবেই মানুষকে রাস্তায় নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না।

গতকাল সরেজমিনে বাসাবো, মুগদা, খিলগাঁও, পল্টন, মালিবাগ, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতে দোকানপাট খোলা। রিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলের ব্যাপক চলাচল। বাস বন্ধ থাকায় মানুষ রিকশায় বেশি ঘুরছে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় রিকশায় যাতায়াত করছেন। যারা দূরের কোন গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চলাফেরা করছেন। আবার অনেকেই মোটরসাইকেলে চলাফেরা করছেন। গতকাল রাজারবাগ মোড়ে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাড়ির উল্টোদিকে পুলিশ চেকপোস্টে অবস্থান নেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আকতার হোসেন। এ সময় রিকশায় দু’জন যেতে দেখে থামিয়ে একজনকে নামিয়ে দিতে দেখা গেছে। পুলিশ মুভমেন্ট পাস আছে কিনা তা নিয়ে জিজ্ঞেস করতে দেখা গেছে। এ সময় পুলিশসহ কয়েক মোটরসাইকেল আরোহীর বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করা হয় তার নির্দেশে। ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার থামিয়ে রাস্তায় চলাচলের কারণ জানতে চাইলে অধিকাংশ করোনা রোগী, রোগী আনতে যাচ্ছেন এমন অজুহাত দেখিয়েছেন। আবার অনেকে নিজেদের জরুরি সেবার কাজে যুক্ত বলেও দাবি করেন। ওই চেকপোস্ট অতিক্রম করে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ব্যাপক মানুষকে রিকশা, ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, সিএনজিতে যেতে দেখা গেছে।

খিলগাঁওয়ে অন্য দিনের মতোও কাঁচাবাজারের সামনের দোকান খোলা থাকলেও গতকাল তা ছিল না। তবে মার্কেটের ভেতরে দোকানপাট খোলা ছিল। ফুটপাতে মুরগি ও কাঁচা তরিতরকারির কিছু দোকান খোলা ছিল। প্রচুর রিকশাযাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। মালিবাগ মোড়েও দেখা গেছে একই চিত্র। শান্তিনগর এলাকায় ব্যাপক জনসমাগম এবং গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এসব এলাকায় লডডাউন উপেক্ষা করে যারা রাস্তায় চলাচল করছেন তারা কী প্রয়োজনে রাস্তায় আছেন তা জিজ্ঞেস করতে দেখা যায়নি। একই অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়।

লকডাউন পরিস্থিতি দেখতে উত্তরা, মিরপুর রোড, কাকরাইল, মোহাম্মদপুর, আসাদগেটসহ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, ‘লকডাউনের প্রথম চারদিনের তুলনায় গতকাল ওইসব এলাকায় পঞ্চম দিনে রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের ভিড় অনেক বেশি ছিল। গতকাল সকাল ১০টায় বনানী থেকে উত্তরার দিকে যেতে র‌্যাডিসন হোটেলের সামনে যানবাহনের সারি ছিল চোখে পড়ার মতো। যার মধ্যে বেশিরভাগই প্রাইভেটকার, কাভার্ড ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। লকডাউনের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও কল-কারখানা ও ব্যাংকিং সেবার মতো জরুরি কার্যক্রম চলমান আছে। বিমানবন্দর সড়কের মতো মিরপুর রোড ও কাকরাইলের বিভিন্ন সড়কেও গণপরিবহন বাদে অন্যান্য যানবাহনের আধিক্য চোখে পড়েছে। কিছু কিছু সিগন্যালে অল্প সময়ের জন্য হলেও যান চলাচল থামতে দেখা যায়। বেগম রোকেয়া সরণি, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার চিত্রও অনেকটা একই রকম।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় মূলত অফিসগামী লোকজনের কারণেই গত শুক্র ও শনিবারের তুলনায় যানবাহন চলাচল বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় যানবাহনের চাপ ছিল। বিভিন্ন চেকপোস্টে ব্যক্তিগত যানবাহন থামিয়ে পুলিশ মুভমেন্ট পাস আছে কিনা তা দেখতে চাওয়া হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, লকডাউন কার্যকরে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে সাধারণ মানুষ তা মানতে চায় না। নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে। অযথা ঘোরাফেরা করছে। পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সদস্যরাও হাল ছেড়ে দিয়েছেন। কোনভাবেই মানুষকে ঘর থেকে বের হওয়া থামানো যাচ্ছে না। পাড়া-মহল্লায় নিত্যপণ্য কেনার অজুহাতে মানুষ নির্বিঘেœ চলাফেরা করছে। পুলিশ গেলে সরে যায় আবার আড্ডায় মেতে ওঠে।