বরিশালে সোনালী ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখার নির্দেশ

সোনালী ব্যাংকের বরিশাল ও ঝালকাঠী জেলা সমন্বয়ে গঠিত জোনাল অফিসের আওতাধীন সবকটি শাখা গতকাল থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। সপ্তাহে ৩ দিন শাখাগুলোতে লেনদেন চলবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে শাখাগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, করেনাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া বিধি উপেক্ষা করে বরিশাল জোনের মহাব্যবস্থাপক একেএম সেলিম একক সিদ্ধান্তে সবকটি শাখায় ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেছেন। এতে ঝুঁকিতে পড়েছেন প্রত্যন্ত এলাকার কর্মরত সোনালী ব্যাংক শাখার কর্মকর্তারা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, প্রতি সপ্তাহের রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সবগুলো শাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত রোববার থেকে কার্যকর করা হয়েছে। আগের দিন শনিবার বরিশাল করপোরেট শাখা থেকে এই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। নির্দেশ অনুযায়ী রোববার সকালে কর্মকর্তাদের নিজ উদ্যোগে কর্মস্থলে যেতে হয়েছে। লকডাউনে যানবাহন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলে যেতে নারী-পুরুষ সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যন্ত এলাকার শাখায় কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, করোনাকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি উপজেলায় ১টি শাখা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১টি করে শাখা খোলা রাখা যাবে। ওই শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উল্লিখিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে সোনালী ব্যাংকের বরিশাল জোনের মহাব্যবস্থাপক মৌখিক নির্দেশ জারি করে বরিশাল জোনের ৩৭টি শাখার সবগুলো সপ্তাহে ৩দিন খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে আবাসন ও আসা-যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দূর-দূরান্তের শাখার কর্মরতরা।

ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়ন শাখা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আল আমিন জুয়েল জানান, বরিশালের জিএম কার্যালয়ের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তারা রোববার থেকে সপ্তাহে ৩ দিন ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাবেন। একই কথা জানান বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরমদ্দি ইউনিয়ন শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

তবে এই দুই কর্মকর্তা বলেন, নির্দেশনা রয়েছে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করার। সে অনুযায়ী শাখায় কর্মরতরা নিজ নিজ উদ্যোগে কর্মস্থলের আশপাশে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। এর বেশি কিছু বলতে অপরাগতা জানান এই দুই কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে জানতে সোনালী ব্যাংকের বরিশাল জোনাল কার্যালয়ে ফোন দেয়া হলে উপ-মহাব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক জানান, মহাব্যবস্থাপক একেএম সেলিম ছুটিতে রয়েছেন। ব্যাংক পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া বিধিগুলো উল্লেখ করা হলে উপ-মহাব্যবস্থাপক বলেন, কেন্দ্রীয় সোনালী ব্যাংক থেকে তাদের মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে সবগুলো শাখা খোলা রাখার জন্য। সে অনুযায়ী রোববার থেকে সপ্তাহে ৩ দিন জোনের আওতাধীন ৩৭টি শাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত দাপ্তরিক আদেশ এখনও পাননি বলে জানান উপ-মহাব্যবস্থাপক আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে যানবহন সুবিধা চাইলে তারা ব্যবস্থা করবেন।

সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১ , ৬ বৈশাখ ১৪২৮ ৬ রমজান ১৪৪২

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষার অভিযোগ

বরিশালে সোনালী ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখার নির্দেশ

মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল

সোনালী ব্যাংকের বরিশাল ও ঝালকাঠী জেলা সমন্বয়ে গঠিত জোনাল অফিসের আওতাধীন সবকটি শাখা গতকাল থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। সপ্তাহে ৩ দিন শাখাগুলোতে লেনদেন চলবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে শাখাগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, করেনাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া বিধি উপেক্ষা করে বরিশাল জোনের মহাব্যবস্থাপক একেএম সেলিম একক সিদ্ধান্তে সবকটি শাখায় ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেছেন। এতে ঝুঁকিতে পড়েছেন প্রত্যন্ত এলাকার কর্মরত সোনালী ব্যাংক শাখার কর্মকর্তারা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, প্রতি সপ্তাহের রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সবগুলো শাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত রোববার থেকে কার্যকর করা হয়েছে। আগের দিন শনিবার বরিশাল করপোরেট শাখা থেকে এই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। নির্দেশ অনুযায়ী রোববার সকালে কর্মকর্তাদের নিজ উদ্যোগে কর্মস্থলে যেতে হয়েছে। লকডাউনে যানবাহন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলে যেতে নারী-পুরুষ সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যন্ত এলাকার শাখায় কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, করোনাকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি উপজেলায় ১টি শাখা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১টি করে শাখা খোলা রাখা যাবে। ওই শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উল্লিখিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে সোনালী ব্যাংকের বরিশাল জোনের মহাব্যবস্থাপক মৌখিক নির্দেশ জারি করে বরিশাল জোনের ৩৭টি শাখার সবগুলো সপ্তাহে ৩দিন খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে আবাসন ও আসা-যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দূর-দূরান্তের শাখার কর্মরতরা।

ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়ন শাখা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আল আমিন জুয়েল জানান, বরিশালের জিএম কার্যালয়ের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তারা রোববার থেকে সপ্তাহে ৩ দিন ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাবেন। একই কথা জানান বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরমদ্দি ইউনিয়ন শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

তবে এই দুই কর্মকর্তা বলেন, নির্দেশনা রয়েছে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করার। সে অনুযায়ী শাখায় কর্মরতরা নিজ নিজ উদ্যোগে কর্মস্থলের আশপাশে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। এর বেশি কিছু বলতে অপরাগতা জানান এই দুই কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে জানতে সোনালী ব্যাংকের বরিশাল জোনাল কার্যালয়ে ফোন দেয়া হলে উপ-মহাব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক জানান, মহাব্যবস্থাপক একেএম সেলিম ছুটিতে রয়েছেন। ব্যাংক পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া বিধিগুলো উল্লেখ করা হলে উপ-মহাব্যবস্থাপক বলেন, কেন্দ্রীয় সোনালী ব্যাংক থেকে তাদের মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে সবগুলো শাখা খোলা রাখার জন্য। সে অনুযায়ী রোববার থেকে সপ্তাহে ৩ দিন জোনের আওতাধীন ৩৭টি শাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত দাপ্তরিক আদেশ এখনও পাননি বলে জানান উপ-মহাব্যবস্থাপক আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে যানবহন সুবিধা চাইলে তারা ব্যবস্থা করবেন।