‘পথশিশুদের প্রতি অবহেলা নয়’

ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নদীভাঙন, শৈশবে বাবা-মায়ের অকালমৃত্যুসহ নানা কারণে পথশিশু তথা সুবিধাবঞ্চিত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ বা একাধিক বিয়ে, পারিবারিক অশান্তি, শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন, হারিয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে শিশুরা পরিণত হয় পথশিশুতে। বাংলাদেশে পথশিশুর সংখ্যা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো জরিপ নেই। তবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কয়েক লক্ষ পথশিশু রয়েছে। ফুটপাত, রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, অফিস চত্বর, পার্ক, লঞ্চঘাট, সরকারি ভবনের নিচে তাদের বাস। মাথার উপর ছাদ হয়ে থাকে খোলা আকাশ। অবহেলা, অনাদরে, খেয়ে-নাখেয়ে তাদের দিন কাটে। এসব পথশিশু রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে, ফুল বিক্রি করে কিংবা কিছু খাবে বলে টাকা চায়। যে বয়সে তাদের হাতে থাকা উচিৎ বই-খাতা, সে বয়সে তাদের হাতে প্লাস্টিকের বস্তা অথবা ভিক্ষার থালা। জন্মের পরপরই তারা পৃথিবীর এক অন্যরকম চিত্র দেখতে দেখতে বড় হয়ে ওঠে। এসব ভাগ্যহীন, পরিচয়হীন শিশুদের আমরা কখনো টোকাই, কখনো পথকলি, ছিন্নমূল বা পথশিশু বলে ডাকি।

জন্মের সময় কেউ পথশিশুর পরিচয় নিয়ে জন্মায় না, পরিস্থিতি তাদের পথশিশুদের তালিকায় এনে দাঁড় করায়। কিন্তু এই শিশুদের যদি যথাযথ শিক্ষা পরিবেশ অন্যান্য অধিকার দিয়ে বড় করা হয় তাহলে এরাই দেশের রত্ন। এদের অধিকার আছে অন্য শিশুদের মতো স্কুলে যাওয়ার। যে বয়সে তাদের শিক্ষার সংস্পর্শে থাকা উচিত সেখানে তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে। অনেকেই পথশিশুদের জন্য অনেক কিছু করেন কিন্তু এই স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগগুলো সাময়িকভাবে পথশিশুদের উপকার করে ঠিকই কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কোন সমাধান দেয় না। আন্তর্জাতিক শিশু সনদ আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনে প্রতিটি শিশু তাদের সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশ লাভের জন্য শিক্ষা, খেলাধুলা, খাদ্য, পুষ্টি, বিনোদন পাওয়ার অধিকার রাখে।

মেহেদী হাসান অর্ণব

শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা

সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১ , ৬ বৈশাখ ১৪২৮ ৬ রমজান ১৪৪২

‘পথশিশুদের প্রতি অবহেলা নয়’

ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নদীভাঙন, শৈশবে বাবা-মায়ের অকালমৃত্যুসহ নানা কারণে পথশিশু তথা সুবিধাবঞ্চিত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ বা একাধিক বিয়ে, পারিবারিক অশান্তি, শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন, হারিয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে শিশুরা পরিণত হয় পথশিশুতে। বাংলাদেশে পথশিশুর সংখ্যা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো জরিপ নেই। তবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কয়েক লক্ষ পথশিশু রয়েছে। ফুটপাত, রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, অফিস চত্বর, পার্ক, লঞ্চঘাট, সরকারি ভবনের নিচে তাদের বাস। মাথার উপর ছাদ হয়ে থাকে খোলা আকাশ। অবহেলা, অনাদরে, খেয়ে-নাখেয়ে তাদের দিন কাটে। এসব পথশিশু রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে, ফুল বিক্রি করে কিংবা কিছু খাবে বলে টাকা চায়। যে বয়সে তাদের হাতে থাকা উচিৎ বই-খাতা, সে বয়সে তাদের হাতে প্লাস্টিকের বস্তা অথবা ভিক্ষার থালা। জন্মের পরপরই তারা পৃথিবীর এক অন্যরকম চিত্র দেখতে দেখতে বড় হয়ে ওঠে। এসব ভাগ্যহীন, পরিচয়হীন শিশুদের আমরা কখনো টোকাই, কখনো পথকলি, ছিন্নমূল বা পথশিশু বলে ডাকি।

জন্মের সময় কেউ পথশিশুর পরিচয় নিয়ে জন্মায় না, পরিস্থিতি তাদের পথশিশুদের তালিকায় এনে দাঁড় করায়। কিন্তু এই শিশুদের যদি যথাযথ শিক্ষা পরিবেশ অন্যান্য অধিকার দিয়ে বড় করা হয় তাহলে এরাই দেশের রত্ন। এদের অধিকার আছে অন্য শিশুদের মতো স্কুলে যাওয়ার। যে বয়সে তাদের শিক্ষার সংস্পর্শে থাকা উচিত সেখানে তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে। অনেকেই পথশিশুদের জন্য অনেক কিছু করেন কিন্তু এই স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগগুলো সাময়িকভাবে পথশিশুদের উপকার করে ঠিকই কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কোন সমাধান দেয় না। আন্তর্জাতিক শিশু সনদ আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনে প্রতিটি শিশু তাদের সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশ লাভের জন্য শিক্ষা, খেলাধুলা, খাদ্য, পুষ্টি, বিনোদন পাওয়ার অধিকার রাখে।

মেহেদী হাসান অর্ণব

শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা