মামুনুল ৭ দিনের রিমান্ডে

মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা ২০২০ সালের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে ১৭ মামলায় গ্রেপ্তার দেখাবে পুলিশ। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুর্বন্তজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিবিরোধী বিক্ষোভ পরবর্তী সহিংসতা এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্ট কা-ে দায়ের হওয়া মামলা ছাড়াও ২০১৩ সালের কিছু মামলায় আসামি মাওলানা মামুনুল হক। এসব মামলায় মামুনুলের রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে পুলিশের পক্ষ থেকে। এদিকে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড হেফাজতে নিয়েছে। তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

গতকাল ওই মামলায় তদন্ত মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল আদালতে মামুনুলকে হাজির করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামুনুলের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৬ মার্চ মোহাম্মদপুর সাত মসজিদ এলাকায় সাত গম্বুজ মসজিদে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামি মাওলানা মামুনুল হক ও তার ভাই মুহতামিম মাহফুজুল হকের নির্দেশে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আসামি ওমর এবং ওসমান, মামলার বাদী ও তার সঙ্গে থাকা অন্যদের মসজিদের ভেতর আমল করতে নিষেধ করে। তাদের ধর্মীয় কাজে আঘাত করে তাদের আসামিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলে। বাদী তার প্রতিবাদ করলে মাওলানা মামুনুল ও তার ভাইয়ের নির্দেশে ওই মাদ্রাসার আরও ৭০/৮০ জন ছাত্র মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে। ওমর ও ওসমান তাদের হাতের লাঠি দিয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর আসামিরা বাদীর কাছে থাকা একটি স্যামসাং মোবাইল, নগদ ৭ হাজার টাকা, ২০০ ডলার ও ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ডেবিট কার্ডসহ বাদীর মানিব্যাগ নিয়ে যায় এবং পুনরায় মসজিদে প্রবেশ করতে দেখলে তাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয় আসামিরা।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কেবল রাজধানীতেই ১৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তা-বের পর হওয়া ১৫টি মামলায় তার নাম রয়েছে। এসব মামলার বাদী পুলিশ। পল্টন থানায় হওয়া সর্বশেষ মামলার বাদী যুবলীগের এক নেতা আর মোহাম্মদপুরে আরেকটি মামলার বাদী সাধারণ মানুষ। সব মামলায় মামনুলকে গ্রেফতার দেখানো হবে। আপাতত মোহাম্মদপুর থানার মামলাটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ তদন্ত করছে। ওই মামলায় তাকে ডিবি হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে নিরাপত্তার কারণে।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, গত রোববার দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা পৌনে ১টার দিকে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিএমপির তেজগাঁও ডিভিশনের পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ যৌথভাবে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালায়। গ্রেপ্তারের পর মামুনলকে প্রথমে পুলিশের তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি কার্যালয়ে নেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে নেয়া হয় তেজগাঁও থানায়। তেজগাঁও থানা থেকে রাতে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে তাকে মোহাম্মদপুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করার পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০২০ সালের ৭ মার্চ মোহাম্মদপুর থানায় হওয়া মামলায় মামুনুল হক সাত নম্বর আসামি। মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণীতে তার বাবার নাম ও ঠিকানা অজ্ঞাত লেখা আছে। মোহাম্মদপুরের চাঁন মিয়া হাউজিংয়ের বাসিন্দা জি এম আলমগীর শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি জনতাবদ্ধে এলোপাতাড়ি মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি দেয়া, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি ও প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ এনেছেন।

ডিএমপি সদর দপ্তরের বলেছে, ডিবির মতিঝিল বিভাগে তদন্তাধীন আটটি মামলা, লালবাগ বিভাগে তদন্তাধীন দুটি মামলা এবং তেজগাঁও বিভাগে তদন্তাধীন একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক। এ ছাড়া মতিঝিল থানায় তদন্তাধীন একটি এবং পল্টন থানায় তদন্তাধীন চারটি মামলায় তার নাম রয়েছে। ১৬টি মামলার মধ্যে ১৫টি মামলাই হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তা-বের পর। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয়েছে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল। গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধর্মভিত্তিক দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এই মামলা করেছেন ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) উপদপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ উজ জামান। মামুনুল হক এই মামলার এক নম্বর আসামি। এছাড়া যাত্রাবাড়ী ও গে-ারিয়া থানায় ৩ মামলায়ও মামুনুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে করা ওইসব মামলায় অজ্ঞাত আসামিদের নাম উল্লেখ থাকলেও সেসব মামলায় মামুনুল আসামি হচ্ছেন।

মামুনুল হক আদালতে বলেন, স্যার, আমাকে গ্রেফতার করে গতকাল যেখানে রাখা হয়েছিল সেটি থাকার মতো জায়গা না। ওই রকম জায়গায় ইবাদত করা যায় না। অন্যান্য রমজানে আমি নিয়মিত কোরআন খতম করি। রিমান্ডে পাঠালে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না এবং আমার ইবাদত করা কঠিন হয়ে যাবে।

গ্রেপ্তারের পর আমাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাকে রিমান্ড দিয়েন না। এ মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শুনানি শেষে মামুনুলের ইবাদতে যেন বিঘœ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য বিচারক রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।

মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। এমন অভিযোগে রিমান্ডও নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন মামুনুলের আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ। গতকাল রিমান্ড শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামুনুলের রিমান্ড শুনানি শেষে তিনি একথা জানান।

আইনজীবী বলেন, মাওলানা মামুনুলের বিরুদ্ধে মসজিদ থেকে এক ব্যক্তিকে বের করে দেয়ার নির্দেশনা দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে বলেছে, ওই ব্যক্তিকে বের করে দেয়ার সময় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেয়া হয়েছে। মূলত এ ধরনের কোন ঘটনাই ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঘটেনি। তিনি আদালতকে বলেন, রোববার মামুনুলকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেজন্য তাকে আর রিমান্ডে নেয়ার প্রয়োজন নেই।

মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল ২০২১ , ৭ বৈশাখ ১৪২৮ ৭ রমজান ১৪৪২

মামুনুল ৭ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা ২০২০ সালের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে ১৭ মামলায় গ্রেপ্তার দেখাবে পুলিশ। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুর্বন্তজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিবিরোধী বিক্ষোভ পরবর্তী সহিংসতা এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্ট কা-ে দায়ের হওয়া মামলা ছাড়াও ২০১৩ সালের কিছু মামলায় আসামি মাওলানা মামুনুল হক। এসব মামলায় মামুনুলের রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে পুলিশের পক্ষ থেকে। এদিকে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড হেফাজতে নিয়েছে। তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

গতকাল ওই মামলায় তদন্ত মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল আদালতে মামুনুলকে হাজির করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামুনুলের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৬ মার্চ মোহাম্মদপুর সাত মসজিদ এলাকায় সাত গম্বুজ মসজিদে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামি মাওলানা মামুনুল হক ও তার ভাই মুহতামিম মাহফুজুল হকের নির্দেশে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আসামি ওমর এবং ওসমান, মামলার বাদী ও তার সঙ্গে থাকা অন্যদের মসজিদের ভেতর আমল করতে নিষেধ করে। তাদের ধর্মীয় কাজে আঘাত করে তাদের আসামিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলে। বাদী তার প্রতিবাদ করলে মাওলানা মামুনুল ও তার ভাইয়ের নির্দেশে ওই মাদ্রাসার আরও ৭০/৮০ জন ছাত্র মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে। ওমর ও ওসমান তাদের হাতের লাঠি দিয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর আসামিরা বাদীর কাছে থাকা একটি স্যামসাং মোবাইল, নগদ ৭ হাজার টাকা, ২০০ ডলার ও ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ডেবিট কার্ডসহ বাদীর মানিব্যাগ নিয়ে যায় এবং পুনরায় মসজিদে প্রবেশ করতে দেখলে তাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয় আসামিরা।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কেবল রাজধানীতেই ১৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তা-বের পর হওয়া ১৫টি মামলায় তার নাম রয়েছে। এসব মামলার বাদী পুলিশ। পল্টন থানায় হওয়া সর্বশেষ মামলার বাদী যুবলীগের এক নেতা আর মোহাম্মদপুরে আরেকটি মামলার বাদী সাধারণ মানুষ। সব মামলায় মামনুলকে গ্রেফতার দেখানো হবে। আপাতত মোহাম্মদপুর থানার মামলাটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ তদন্ত করছে। ওই মামলায় তাকে ডিবি হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে নিরাপত্তার কারণে।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, গত রোববার দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা পৌনে ১টার দিকে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিএমপির তেজগাঁও ডিভিশনের পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ যৌথভাবে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালায়। গ্রেপ্তারের পর মামুনলকে প্রথমে পুলিশের তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি কার্যালয়ে নেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে নেয়া হয় তেজগাঁও থানায়। তেজগাঁও থানা থেকে রাতে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে তাকে মোহাম্মদপুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করার পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০২০ সালের ৭ মার্চ মোহাম্মদপুর থানায় হওয়া মামলায় মামুনুল হক সাত নম্বর আসামি। মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণীতে তার বাবার নাম ও ঠিকানা অজ্ঞাত লেখা আছে। মোহাম্মদপুরের চাঁন মিয়া হাউজিংয়ের বাসিন্দা জি এম আলমগীর শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি জনতাবদ্ধে এলোপাতাড়ি মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি দেয়া, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি ও প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ এনেছেন।

ডিএমপি সদর দপ্তরের বলেছে, ডিবির মতিঝিল বিভাগে তদন্তাধীন আটটি মামলা, লালবাগ বিভাগে তদন্তাধীন দুটি মামলা এবং তেজগাঁও বিভাগে তদন্তাধীন একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক। এ ছাড়া মতিঝিল থানায় তদন্তাধীন একটি এবং পল্টন থানায় তদন্তাধীন চারটি মামলায় তার নাম রয়েছে। ১৬টি মামলার মধ্যে ১৫টি মামলাই হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তা-বের পর। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয়েছে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল। গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধর্মভিত্তিক দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এই মামলা করেছেন ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) উপদপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ উজ জামান। মামুনুল হক এই মামলার এক নম্বর আসামি। এছাড়া যাত্রাবাড়ী ও গে-ারিয়া থানায় ৩ মামলায়ও মামুনুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে করা ওইসব মামলায় অজ্ঞাত আসামিদের নাম উল্লেখ থাকলেও সেসব মামলায় মামুনুল আসামি হচ্ছেন।

মামুনুল হক আদালতে বলেন, স্যার, আমাকে গ্রেফতার করে গতকাল যেখানে রাখা হয়েছিল সেটি থাকার মতো জায়গা না। ওই রকম জায়গায় ইবাদত করা যায় না। অন্যান্য রমজানে আমি নিয়মিত কোরআন খতম করি। রিমান্ডে পাঠালে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না এবং আমার ইবাদত করা কঠিন হয়ে যাবে।

গ্রেপ্তারের পর আমাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাকে রিমান্ড দিয়েন না। এ মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শুনানি শেষে মামুনুলের ইবাদতে যেন বিঘœ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য বিচারক রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।

মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। এমন অভিযোগে রিমান্ডও নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন মামুনুলের আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ। গতকাল রিমান্ড শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামুনুলের রিমান্ড শুনানি শেষে তিনি একথা জানান।

আইনজীবী বলেন, মাওলানা মামুনুলের বিরুদ্ধে মসজিদ থেকে এক ব্যক্তিকে বের করে দেয়ার নির্দেশনা দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে বলেছে, ওই ব্যক্তিকে বের করে দেয়ার সময় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেয়া হয়েছে। মূলত এ ধরনের কোন ঘটনাই ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঘটেনি। তিনি আদালতকে বলেন, রোববার মামুনুলকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেজন্য তাকে আর রিমান্ডে নেয়ার প্রয়োজন নেই।