টিভ্যাসের মাধ্যমে গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নেয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

টিভ্যাসের (TVAS) পূণরূপ হলো টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। মোবাইল ফোন গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়ালপেপার, ভিডিও, বিভিন্ন তথ্য (কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ক), লাইফস্টাইল, মোবাইলফোন গেম, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা টিভ্যাস হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয় এবং সে সময় হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়। বর্তমানে বিটিআরসি অনুমোদিত টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২টি। টিভ্যাস প্রোভাইডারগণ অপারেটরদের সাথে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে। সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে প্রাপ্য অর্থের একটি অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মোবাইল অপারেটরগণ পেয়ে থাকে। এছাড়াও টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬.৫% বিটিআরসি/সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সম্প্রতি টিভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া যায় যেমন- গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া, অপ্রয়োজনীয় সেবা চালু করে দেয়া ইত্যাদি। বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করাসহ গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় বিটিআরসি টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটধারী প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন শুরু করে। ইতোমধ্যে ১১টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে এবং এদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু ব্যত্যয় পাওয়া যায়Ñ নিবন্ধিত ঠিকানায় অফিস না থাকা; কমিশন হতে সার্ভিস এবং ট্যারিফ অ্যাপ্রুভাল ব্যতিরেকে টিভ্যাস সেবা প্রদান করা; টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মনিটরিং টার্মিনাল/অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা; ইনপ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং এগ্রিমেন্ট ব্যতীত সার্ভার স্থাপনপূর্বক সেবা প্রদান করা; অডিট রিপোর্ট প্রদান করতে না পারা; টিভ্যাস সার্ভিস অ্যাক্টিভেশন এর ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা মোতাবেক ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) বাস্তবায়ন না করা; টিভ্যাস সার্ভিস অ্যাকটিভ এর ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা অমান্য করে গ্রাহকদের সম্মতি ব্যতিরেকে অটো রিনুয়্যাল চালু রাখা; টিভ্যাস গাইডলাইন প্রণয়নের পূর্ব থেকে টিভ্যাস প্রদানকারীগণ কর্তৃক কমিশনের প্রাপ্য রাজস্ব প্রদান না করা; গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেয়া।

এ প্রেক্ষিতে ব্যত্যয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কমিশন হতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে এবং এরূপ পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান থাকবে। ইতোমধ্যে উইন মিয়াকি লিমিটেড, মিয়াকি মিডিয়া লিমিটেড ও বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড নামক তিনটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানসমূহের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল ২০২১ , ৭ বৈশাখ ১৪২৮ ৭ রমজান ১৪৪২

টিভ্যাসের মাধ্যমে গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নেয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

টিভ্যাসের (TVAS) পূণরূপ হলো টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। মোবাইল ফোন গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়ালপেপার, ভিডিও, বিভিন্ন তথ্য (কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ক), লাইফস্টাইল, মোবাইলফোন গেম, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা টিভ্যাস হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয় এবং সে সময় হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়। বর্তমানে বিটিআরসি অনুমোদিত টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২টি। টিভ্যাস প্রোভাইডারগণ অপারেটরদের সাথে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে। সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে প্রাপ্য অর্থের একটি অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মোবাইল অপারেটরগণ পেয়ে থাকে। এছাড়াও টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬.৫% বিটিআরসি/সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সম্প্রতি টিভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া যায় যেমন- গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া, অপ্রয়োজনীয় সেবা চালু করে দেয়া ইত্যাদি। বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করাসহ গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় বিটিআরসি টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটধারী প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন শুরু করে। ইতোমধ্যে ১১টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে এবং এদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু ব্যত্যয় পাওয়া যায়Ñ নিবন্ধিত ঠিকানায় অফিস না থাকা; কমিশন হতে সার্ভিস এবং ট্যারিফ অ্যাপ্রুভাল ব্যতিরেকে টিভ্যাস সেবা প্রদান করা; টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মনিটরিং টার্মিনাল/অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা; ইনপ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং এগ্রিমেন্ট ব্যতীত সার্ভার স্থাপনপূর্বক সেবা প্রদান করা; অডিট রিপোর্ট প্রদান করতে না পারা; টিভ্যাস সার্ভিস অ্যাক্টিভেশন এর ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা মোতাবেক ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) বাস্তবায়ন না করা; টিভ্যাস সার্ভিস অ্যাকটিভ এর ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা অমান্য করে গ্রাহকদের সম্মতি ব্যতিরেকে অটো রিনুয়্যাল চালু রাখা; টিভ্যাস গাইডলাইন প্রণয়নের পূর্ব থেকে টিভ্যাস প্রদানকারীগণ কর্তৃক কমিশনের প্রাপ্য রাজস্ব প্রদান না করা; গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেয়া।

এ প্রেক্ষিতে ব্যত্যয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কমিশন হতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে এবং এরূপ পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান থাকবে। ইতোমধ্যে উইন মিয়াকি লিমিটেড, মিয়াকি মিডিয়া লিমিটেড ও বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড নামক তিনটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানসমূহের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।