করোনা মহামারীর কারণে দেশে দেশে চলছে লকডাউন কিন্তু এর মধ্যেও বাতাসে কার্বণ ডাই অক্সাইডডের নিঃসরণ চলতি বছরে শুধু বাড়বেই না, বৃদ্ধির দিক থেকে এটি হবে ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) এমন পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে তৈরি অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বাড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এ খাতে প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে তারা। এতে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ বেড়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ১০ বছর আগে ব্যাপক আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে বিশ্ব। ওই ঘটনার পর এই প্রথম কার্বন নিঃসরণের হার এতটা বাড়তে যাচ্ছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, সেটি আগামীতে আরও বাড়বে।
আইইএ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। চলতি বছরে ব্যাপক মাত্রায় কার্বন নিঃসরণ বন্ধে দেশগুলোকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সম্ভব নয়।
জীবাশ্ম জ্বালানির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর কয়লা। পৃথিবীর অনেক দেশে বিদ্যুতের জন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এতে কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার বিপুল ব্যবহারে তাই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম কয়লার চেয়ে কম। এরপরেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার ব্যবহার কমছে না।
আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও উদ্বেগের। মহামারীর কারণে হওয়া অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে কার্বন নিঃসরণ বাড়ানো আমাদের এ বার্তা দেয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের প্রাথমিক পদক্ষেপ কোনভাবেই পর্যাপ্ত নয়।
২০১০ সালের আর্থিক সংকটের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করেন আইইএর নির্বাহী পরিচালক বিরল। সে সময় সস্তা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল। এর ফলে কার্বন নিঃসরণ ছয় শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। বিরল সতর্ক করে বলেন, মনে হচ্ছে, আমরা আবারও একই ভুল করছি। ২০১০ সালের চেয়ে এবার আমি আরও বেশি হতাশ।
বিজ্ঞানীরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ সেলসিয়াস পর্যন্ত রাখতে চাইলে এ দশকে কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে। এর অর্থ বায়ুম-লে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা যেন এতটা না বাড়ে যাতে তাপমাত্রা বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য এই দশকেই কার্বন নিঃসরণ সহনীয় পর্যায়ে আনা জরুরি।
বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১ , ৮ বৈশাখ ১৪২৮ ৮ রমজান ১৪৪২
সংবাদ ডেস্ক
করোনা মহামারীর কারণে দেশে দেশে চলছে লকডাউন কিন্তু এর মধ্যেও বাতাসে কার্বণ ডাই অক্সাইডডের নিঃসরণ চলতি বছরে শুধু বাড়বেই না, বৃদ্ধির দিক থেকে এটি হবে ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) এমন পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে তৈরি অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বাড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এ খাতে প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে তারা। এতে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ বেড়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ১০ বছর আগে ব্যাপক আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে বিশ্ব। ওই ঘটনার পর এই প্রথম কার্বন নিঃসরণের হার এতটা বাড়তে যাচ্ছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, সেটি আগামীতে আরও বাড়বে।
আইইএ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। চলতি বছরে ব্যাপক মাত্রায় কার্বন নিঃসরণ বন্ধে দেশগুলোকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সম্ভব নয়।
জীবাশ্ম জ্বালানির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর কয়লা। পৃথিবীর অনেক দেশে বিদ্যুতের জন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এতে কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার বিপুল ব্যবহারে তাই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম কয়লার চেয়ে কম। এরপরেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার ব্যবহার কমছে না।
আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও উদ্বেগের। মহামারীর কারণে হওয়া অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে কার্বন নিঃসরণ বাড়ানো আমাদের এ বার্তা দেয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের প্রাথমিক পদক্ষেপ কোনভাবেই পর্যাপ্ত নয়।
২০১০ সালের আর্থিক সংকটের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করেন আইইএর নির্বাহী পরিচালক বিরল। সে সময় সস্তা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল। এর ফলে কার্বন নিঃসরণ ছয় শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। বিরল সতর্ক করে বলেন, মনে হচ্ছে, আমরা আবারও একই ভুল করছি। ২০১০ সালের চেয়ে এবার আমি আরও বেশি হতাশ।
বিজ্ঞানীরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ সেলসিয়াস পর্যন্ত রাখতে চাইলে এ দশকে কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে। এর অর্থ বায়ুম-লে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা যেন এতটা না বাড়ে যাতে তাপমাত্রা বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য এই দশকেই কার্বন নিঃসরণ সহনীয় পর্যায়ে আনা জরুরি।