লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে চিকিৎসক, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগবিত-ার ঘটনায় পুলিশ ও ডাক্তারদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া পাল্টাপাল্টি বিবৃতিকে ‘অনভিপ্রেত’ বলেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এমন আচরণ কাম্য নয়। আবার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেশাজীবী সংগঠনের এ ধরনের বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি দেয়াও অনাকাক্সিক্ষত ।
এ ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির খবর নজরে আনার পর এ মন্তব্য আসে উচ্চ আদালত থেকে। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি এ ঘটনা তদন্তের জন্য আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করেন। ওই ঘটনার তদন্ত চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এ মন্তব্য করেন আদালত।
আদালত বলেন, তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাদের কাছ থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন সবাই আশা করে। আদালত বলেন, কভিড-১৯ এর কারণে দেশের সব মানুষই চাপের মধ্যে আছে। যেকোনভাবেই হোক- একটা ঘটনা ঘটে গেছে। আর তা নিয়ে কিছু পেশাজীবী সংগঠন যে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিয়েছে তা কাম্য নয়। সবারই নমনীয় হওয়া উচিত।
গত মঙ্গলবার আবেদনকারীকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, গতকালও (সোমবার) আপনি এ বিষয় নিয়ে এসেছিলেন। আপনি তো (ইউনুছ আলী আকন্দ) সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নন। যদি কোন সংক্ষুব্ধ পক্ষ এটা নিয়ে আদালতে আসেন, তবে বিষয়টি দেখা যেতে পারে। জবাবে ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, আমার মেয়ে একজন চিকিৎসক। আরও চিকিৎসক আত্মীয়-স্বজন আছে।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, আপনি তো বিষয়টি দেখতে পারেন। দুটি পেশাজীবী সংগঠন কিভাবে বিবৃতি দেয়? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ওই ঘটনা (বাগবিত-া) অপ্রত্যাশিত, অনাকাক্সিক্ষত।
গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে সরকারি বিধি-নিষেধের পঞ্চম দিনে ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বাগবিত-ায় জড়ান চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তা। এ নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা জেলা প্রশাসন অফিসের সহকারী কমিশনার শেখ মো. মামুনুর রশিদ এবং নিউ মার্কেট থানার একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা বাগবিত-ায় জড়ান।
এ ঘটনায় সোমবার বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ) এক বিবৃতি দিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায়। আবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এবং বাংলাদেশ ডক্টরস’ অ্যাসোসিয়েশন পৃথক পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়ে চিকিৎসককে হয়রানি করার অভিযোগে জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায়।
বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১ , ৮ বৈশাখ ১৪২৮ ৮ রমজান ১৪৪২
আদালত বার্তা পরিবেশক
লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে চিকিৎসক, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগবিত-ার ঘটনায় পুলিশ ও ডাক্তারদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া পাল্টাপাল্টি বিবৃতিকে ‘অনভিপ্রেত’ বলেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এমন আচরণ কাম্য নয়। আবার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেশাজীবী সংগঠনের এ ধরনের বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি দেয়াও অনাকাক্সিক্ষত ।
এ ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির খবর নজরে আনার পর এ মন্তব্য আসে উচ্চ আদালত থেকে। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি এ ঘটনা তদন্তের জন্য আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করেন। ওই ঘটনার তদন্ত চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এ মন্তব্য করেন আদালত।
আদালত বলেন, তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাদের কাছ থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন সবাই আশা করে। আদালত বলেন, কভিড-১৯ এর কারণে দেশের সব মানুষই চাপের মধ্যে আছে। যেকোনভাবেই হোক- একটা ঘটনা ঘটে গেছে। আর তা নিয়ে কিছু পেশাজীবী সংগঠন যে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিয়েছে তা কাম্য নয়। সবারই নমনীয় হওয়া উচিত।
গত মঙ্গলবার আবেদনকারীকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, গতকালও (সোমবার) আপনি এ বিষয় নিয়ে এসেছিলেন। আপনি তো (ইউনুছ আলী আকন্দ) সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নন। যদি কোন সংক্ষুব্ধ পক্ষ এটা নিয়ে আদালতে আসেন, তবে বিষয়টি দেখা যেতে পারে। জবাবে ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, আমার মেয়ে একজন চিকিৎসক। আরও চিকিৎসক আত্মীয়-স্বজন আছে।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, আপনি তো বিষয়টি দেখতে পারেন। দুটি পেশাজীবী সংগঠন কিভাবে বিবৃতি দেয়? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ওই ঘটনা (বাগবিত-া) অপ্রত্যাশিত, অনাকাক্সিক্ষত।
গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে সরকারি বিধি-নিষেধের পঞ্চম দিনে ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বাগবিত-ায় জড়ান চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তা। এ নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা জেলা প্রশাসন অফিসের সহকারী কমিশনার শেখ মো. মামুনুর রশিদ এবং নিউ মার্কেট থানার একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা বাগবিত-ায় জড়ান।
এ ঘটনায় সোমবার বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ) এক বিবৃতি দিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায়। আবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এবং বাংলাদেশ ডক্টরস’ অ্যাসোসিয়েশন পৃথক পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়ে চিকিৎসককে হয়রানি করার অভিযোগে জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায়।