করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভা ছোট করা হবে

রাহুল কোন সভা করবেন না

কোভিড পরিস্থিতিতে বাংলায় জনসভায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা মঙ্গলবার এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধমে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছোট জনসভা করবেন। একই সঙ্গে ‘নিজের বুথ কোভিডমুক্ত’ কর্মসূচি চালু করার কথাও ঘোষণা করেন জেপি নাড্ডা।

কোভিড পরিস্থিতিতে বাংলায় আর নির্বাচনী সভা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গান্ধী। এর আগে বামেরাও বড় সভা করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় কোন সভা না করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সব পরিস্থিতি বিচার করে সেই পথে হাঁটল বিজেপিও। বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর আরও ৪টি সভা করার কথা ছিল। অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডারও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। ওই সভাগুলো বাতিল করা হচ্ছে না, বরং স্যানিটাইজার, মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব মেনে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। বিজেপির প্রেস বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয় ‘পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ চলছে। সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়াটাও জরুরি। এই কথা মাথায় রেখেই সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছোট সভা করবেন।

৫শ’র বেশি লোক থাকবে না ওই সভাগুলোতে। কোভিডবিধি মেনে সভা হবে। ৬ কোটি মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হবে রাজ্যে।’ কোভিডকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘আপনা বুথ কোভিডমুক্ত’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বিজেপি। এই কর্মসূচিতে হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থাসহ পথ্য দিয়ে মানুষ সহযোগিতা করবেন দলের নেতাকর্মীরা। এদিকে ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গণটিকাকরণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় ফের চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অভিযোগ, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা মে মাসের প্রথম থেকে। এই সিদ্ধান্তকে ধরা হলে, রাজ্যে টিকাকরণ অনেক দেরি হয়ে যাবে। পরিস্থিতি বুঝে এখন গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র,’ তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে টিকাকরণ নীতি সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মমতা।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটে কাবু গোটা দেশ। ঝড়ের গতিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাংলায়ও। কিন্তু ভ্যাকসিন কোথায়? পরিস্থিতি মোকাবিলায় কয়েকদিন আগে করোনা টিকা, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ ও পর্যাপ্ত অক্সিজেন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে রাজ্যের ও কলকাতার সাম্প্রতিক করোনা চিত্রও তুলে ধরেছেন কেন্দ্রের কাছে মমতা। তেমনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কেন্দ্রের কাছে অনুমোদন চেয়েছিলেন, রাজ্য নিজেদের তহবিল থেকেই বিনা পয়সায় সবাইকে করোনা টিকা দিতে চায়, কিন্তু তার জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে করোনা টিকা কেনার অনুমোদন তিনি পাননি। সোমবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মোদি। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ১ মে থেকে ১৮ বছর পেরোলেই ভ্যাকসিন নেয়া যাবে। অর্থাৎ করোনা মোকাবিলায় এবার দেশজুড়ে গণটিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হবে। এমনকী, ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে খোলাবাজারেও।

প্রস্তুতকারক সংস্থা উৎপাদনের ৫০ শতাংশ বিক্রি খোলাবাজারে ও রাজ্যে বিক্রি করতে পারবে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে হঠকারী আখ্যা দিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখলেন মমতা। আগামী বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ দফার ভোটপর্বে উত্তর ২৪ পরগনার ১৩টি আসনে ভোট হবে। এই আসনগুলোর মধ্যে ব্যারাকপুরকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। ২৬ এপ্রিল ভোট হবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, গাইঘাটা, স্বরূপনগর, বাদুরিয়া, হাবরা, অশোকনগর, আমডাঙা, বিজপুর, নৈহাটি, ভাটপাড়া, জগদ্দল, নোয়াপাড়া, ব্যারাকপুর, খড়দা, দমদম উত্তর আসন। এর মধ্যে বারাকপুর বিধানসভার ওপর অতিরিক্ত নজর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির নির্বাচন কমিশন।

গতকাল ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। ভোটের দিন এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যারাকপুরে অতিরিক্ত আরও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৫টি কুইক রেসপন্স টিমকে মোতায়েন রাখা হবে। এছাড়া ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটকে অতিরিক্ত সজাগ সতর্ক থাকতে বলেছে কমিশন

অন্যদিকে শীতলকুচির ঘটনার পর এখানকার এক তৃণমূলের কর্মীর সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের যে ফোনালাপ করা হয়েছে এ ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ্য, শীতলকুচিতে গুলি চালনার পর কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতীম রায়কে ফোন করে নিহতদের লাশ আগলে রেখে মিছিল করতে বলেছেন মমতা। গুলিচালনার পর দিন তার সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। এমনই একটি ফোনালাপ প্রকাশ্যে এনেছে বিজেপি। ওই ফোনের ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।

ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠে মুর্শিদাবাদ। সেখানে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে কাসেম আলী (৫২) নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে। সোমবার রাতে হরিহরপাড়ার রায়পুর অঞ্চলের বিলধারী পাড়া এলাকায় তৃণমূল ও জাতীয় কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রথমে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে, পরে শুরু হয় ব্যপক বোমাবাজি। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ওই কংগ্রেস কর্মীর। তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ, মসজিদে নামাজ পড়ে বের হলেই কসেমসহ কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় তৃণমূল। তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, এদিন তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা চালায় কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতরা। এই সহিংস ঘটনায় দুপক্ষের ৭-৮ জন কর্মী আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে হরিহরপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

ভোট মিটলেও হিংসা কিছুতেই থামছে না। গতকাল দুপুরে এজেন্টসহ বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠে বিধান নগরের দত্তাবাদে। সন্ধ্যা নামতেই বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এদিন বিকেলে বিধাননগরের লাবনী গোলচক্করের কাছে বিজেপি পার্টি অফিসকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতকারীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ বিজেপির। বিজেপির দাবি, বাইকে করে এসেছিল ওই দুষ্কৃতরা। পরে বিজেপির তাড়া খেয়ে পালিয়ে যায় তারা।

নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে বর্ধমান। গত রোব ও সোমবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠ, কাঞ্চননগর, রথতলা ও মেহেদিবাগান এলাকা। ওই সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ দুই পক্ষের ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে ২৬ জন বিজেপির। বাকিরা তৃণমূলের। পঞ্চমদফা ভোট চলাকালীন উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুর মহকুমার পানিহাটিতে তৃণমূল কর্মীদের হাতে রোববার আক্রান্ত হয়েছেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী সাংবাদিক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পর সোমবার মধ্যরাতে একদল তৃণমূল সমর্থক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও কয়েকদফা বোমা হামলা চালায়।

এদিন সম্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমাকে হত্যা করার জন্যই এই হামলা করা হয়, গত রাতে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। তার অভিযোগ, রাত দুটো থেকে এদিন দুপুর পর্যন্ত বারবার থানায় খবর দেয়া সত্ত্বেও স্থানীয় খড়দা থানা থেকে কোন অফিসার বা কর্মী তার বাড়িতে আসেননি।

আরও খবর
বৃষ্টির জন্য কাঁদছে বরেন্দ্র অঞ্চল, বাতাসের সঙ্গে বইছে আগুনের হল্কা
বিশ্বে ২০২১ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণের রেকর্ড আইইএ
ফোর্বসের তালিকায় ৯ বাংলাদেশি তরুণ
চিকিৎসক-পুলিশ পাল্টাপাল্টি বিবৃতি অনভিপ্রেত হাইকোর্ট
দল বিবেচনায় নয়, ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার চলছে কাদের
বিএনপি-জামায়াত হেফাজত একই সূত্রে গাঁথা : ১৪ দল
হেফাজত নেতা কোরবান আলী গ্রেপ্তার
অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু হচ্ছে
বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে ন্যায্যমূল্যে ওএমএস চাল-আটা বিক্রি অব্যাহত থাকবে
আধুনিক প্রযুক্তিতে বিটিসিএলের টেলিফোন নম্বর পরিবর্তন হচ্ছে
চিকিৎসকের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে ড্যাব
বরিশালে ডায়রিয়া রোগী বেড়েই চলেছে তাঁবুতেও ঠাঁই নেই

বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১ , ৮ বৈশাখ ১৪২৮ ৮ রমজান ১৪৪২

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন

করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভা ছোট করা হবে

রাহুল কোন সভা করবেন না

দীপক মুখার্জী, কলকাতা

কোভিড পরিস্থিতিতে বাংলায় জনসভায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা মঙ্গলবার এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধমে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছোট জনসভা করবেন। একই সঙ্গে ‘নিজের বুথ কোভিডমুক্ত’ কর্মসূচি চালু করার কথাও ঘোষণা করেন জেপি নাড্ডা।

কোভিড পরিস্থিতিতে বাংলায় আর নির্বাচনী সভা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গান্ধী। এর আগে বামেরাও বড় সভা করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় কোন সভা না করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সব পরিস্থিতি বিচার করে সেই পথে হাঁটল বিজেপিও। বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর আরও ৪টি সভা করার কথা ছিল। অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডারও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। ওই সভাগুলো বাতিল করা হচ্ছে না, বরং স্যানিটাইজার, মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব মেনে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। বিজেপির প্রেস বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয় ‘পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ চলছে। সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়াটাও জরুরি। এই কথা মাথায় রেখেই সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছোট সভা করবেন।

৫শ’র বেশি লোক থাকবে না ওই সভাগুলোতে। কোভিডবিধি মেনে সভা হবে। ৬ কোটি মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হবে রাজ্যে।’ কোভিডকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘আপনা বুথ কোভিডমুক্ত’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বিজেপি। এই কর্মসূচিতে হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থাসহ পথ্য দিয়ে মানুষ সহযোগিতা করবেন দলের নেতাকর্মীরা। এদিকে ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গণটিকাকরণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় ফের চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অভিযোগ, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা মে মাসের প্রথম থেকে। এই সিদ্ধান্তকে ধরা হলে, রাজ্যে টিকাকরণ অনেক দেরি হয়ে যাবে। পরিস্থিতি বুঝে এখন গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র,’ তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে টিকাকরণ নীতি সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মমতা।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটে কাবু গোটা দেশ। ঝড়ের গতিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাংলায়ও। কিন্তু ভ্যাকসিন কোথায়? পরিস্থিতি মোকাবিলায় কয়েকদিন আগে করোনা টিকা, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ ও পর্যাপ্ত অক্সিজেন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে রাজ্যের ও কলকাতার সাম্প্রতিক করোনা চিত্রও তুলে ধরেছেন কেন্দ্রের কাছে মমতা। তেমনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কেন্দ্রের কাছে অনুমোদন চেয়েছিলেন, রাজ্য নিজেদের তহবিল থেকেই বিনা পয়সায় সবাইকে করোনা টিকা দিতে চায়, কিন্তু তার জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে করোনা টিকা কেনার অনুমোদন তিনি পাননি। সোমবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মোদি। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ১ মে থেকে ১৮ বছর পেরোলেই ভ্যাকসিন নেয়া যাবে। অর্থাৎ করোনা মোকাবিলায় এবার দেশজুড়ে গণটিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হবে। এমনকী, ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে খোলাবাজারেও।

প্রস্তুতকারক সংস্থা উৎপাদনের ৫০ শতাংশ বিক্রি খোলাবাজারে ও রাজ্যে বিক্রি করতে পারবে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে হঠকারী আখ্যা দিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখলেন মমতা। আগামী বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ দফার ভোটপর্বে উত্তর ২৪ পরগনার ১৩টি আসনে ভোট হবে। এই আসনগুলোর মধ্যে ব্যারাকপুরকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। ২৬ এপ্রিল ভোট হবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, গাইঘাটা, স্বরূপনগর, বাদুরিয়া, হাবরা, অশোকনগর, আমডাঙা, বিজপুর, নৈহাটি, ভাটপাড়া, জগদ্দল, নোয়াপাড়া, ব্যারাকপুর, খড়দা, দমদম উত্তর আসন। এর মধ্যে বারাকপুর বিধানসভার ওপর অতিরিক্ত নজর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির নির্বাচন কমিশন।

গতকাল ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। ভোটের দিন এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যারাকপুরে অতিরিক্ত আরও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৫টি কুইক রেসপন্স টিমকে মোতায়েন রাখা হবে। এছাড়া ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটকে অতিরিক্ত সজাগ সতর্ক থাকতে বলেছে কমিশন

অন্যদিকে শীতলকুচির ঘটনার পর এখানকার এক তৃণমূলের কর্মীর সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের যে ফোনালাপ করা হয়েছে এ ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ্য, শীতলকুচিতে গুলি চালনার পর কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতীম রায়কে ফোন করে নিহতদের লাশ আগলে রেখে মিছিল করতে বলেছেন মমতা। গুলিচালনার পর দিন তার সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। এমনই একটি ফোনালাপ প্রকাশ্যে এনেছে বিজেপি। ওই ফোনের ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।

ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠে মুর্শিদাবাদ। সেখানে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে কাসেম আলী (৫২) নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে। সোমবার রাতে হরিহরপাড়ার রায়পুর অঞ্চলের বিলধারী পাড়া এলাকায় তৃণমূল ও জাতীয় কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রথমে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে, পরে শুরু হয় ব্যপক বোমাবাজি। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ওই কংগ্রেস কর্মীর। তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ, মসজিদে নামাজ পড়ে বের হলেই কসেমসহ কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় তৃণমূল। তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, এদিন তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা চালায় কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতরা। এই সহিংস ঘটনায় দুপক্ষের ৭-৮ জন কর্মী আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে হরিহরপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

ভোট মিটলেও হিংসা কিছুতেই থামছে না। গতকাল দুপুরে এজেন্টসহ বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠে বিধান নগরের দত্তাবাদে। সন্ধ্যা নামতেই বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এদিন বিকেলে বিধাননগরের লাবনী গোলচক্করের কাছে বিজেপি পার্টি অফিসকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতকারীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ বিজেপির। বিজেপির দাবি, বাইকে করে এসেছিল ওই দুষ্কৃতরা। পরে বিজেপির তাড়া খেয়ে পালিয়ে যায় তারা।

নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে বর্ধমান। গত রোব ও সোমবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠ, কাঞ্চননগর, রথতলা ও মেহেদিবাগান এলাকা। ওই সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ দুই পক্ষের ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে ২৬ জন বিজেপির। বাকিরা তৃণমূলের। পঞ্চমদফা ভোট চলাকালীন উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুর মহকুমার পানিহাটিতে তৃণমূল কর্মীদের হাতে রোববার আক্রান্ত হয়েছেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী সাংবাদিক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পর সোমবার মধ্যরাতে একদল তৃণমূল সমর্থক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও কয়েকদফা বোমা হামলা চালায়।

এদিন সম্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমাকে হত্যা করার জন্যই এই হামলা করা হয়, গত রাতে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। তার অভিযোগ, রাত দুটো থেকে এদিন দুপুর পর্যন্ত বারবার থানায় খবর দেয়া সত্ত্বেও স্থানীয় খড়দা থানা থেকে কোন অফিসার বা কর্মী তার বাড়িতে আসেননি।