স্বাস্থ্য বিভাগের কথিত সব ধরনের উদ্যোগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বরিশালে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন যে হারে রোগী হাসপাতালে আসছে তা সামাল দিতেই চিকিৎসকসহ অপরাপর কর্মচারীরা হিমশিম খাচ্ছেন। চলতি গরমের তীব্রতা না কমা পর্যন্ত ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না বলে মত প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।
সরকারি হিসাবে গত ১৩ মাসে যেখানে ১৩ হাজার ৫০৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছে, সেখানে গত ৩ মাসে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার অতিক্রম করেছে। তার মধ্যে সরকারি হিসাবেই মারা গেছেন ৮ জন। এ সংখ্যাটা শুধু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়া রোগীদের। বেসরকারি মতে, আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যাটা অনেক।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুধু ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হয় কিন্তু কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় শুধু বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালে। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে রয়েছে বিশেষ ধরনের মাত্র ৪ শয্যার একটি ওয়ার্ড। এবার ডায়রিয়ার (সাধারণের কাছে কলেরা হিসেবে পরিচিত) প্রকোপ বাড়ার পর ওয়ার্ডটিতে প্রথমে অতিরিক্ত ১০টি শয্যা করা হয় কিন্তু তাতেও সামাল না দেয়া যাওয়ায় রোগীরা এসে ওয়ার্ডের বারান্দা, পরে ওয়ার্ডের সামনে গাছতলায় থেকে চিকিৎসা নিতে থাকে। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগ ওয়ার্ডটির সামনে অস্থায়ীভাবে একটি তাঁবু টানিয়েছে কিন্তু এখন সেখানেও রোগীদের সংকুলান না হওয়ায় আবার তাঁবুর ফাঁকা জায়গায় মাটিতে শয্যা পেতে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল সেখানে ডায়রিয়া রোগী ছিল ৪৬ জন। রোববারে সংখ্যাটা ছিল ৬০ জনের অধিক।
ডায়রিয়া শুধু বরিশাল জেলায় সীমাবদ্ধ নেই। বরিশাল বিভাগের প্রতিটি জেলাতেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। সব হাসপাতালেই ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা বিরাজ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১ হাজার ৫১২ জন ডায়রিয়া আক্রান্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে ভোলাতেই সর্বোচ্চ ৩২৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। এরপরে পটুয়াখালীতে ৩২১, বরগুনায় ২৫৬, বরিশালে ২৪৭, ঝালকাঠীতে ২৩৯ ও পিরোজপুরে ১২৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানানো হলেও এসব টিমের কোনটিতেই চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দু-তিনটি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এছাড়া প্রতিটি টিমে একজন করে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ‘সেকমো’ বা পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা কাজ করছেন। পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইনসহ আইভি ফ্লুইডের সরবরাহ রয়েছে বলেও দাবি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহল। তবে খোলাবাজারে স্যালাইন সংকট সৃষ্টি হয়েছে ইতোমধ্যে।
বরিশাল মেডিকেলে তাবুতেও ঠাঁই নেই, তাই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা -সংবাদ
আরও খবরবুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১ , ৮ বৈশাখ ১৪২৮ ৮ রমজান ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল
বরিশাল মেডিকেলে তাবুতেও ঠাঁই নেই, তাই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা -সংবাদ
স্বাস্থ্য বিভাগের কথিত সব ধরনের উদ্যোগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বরিশালে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন যে হারে রোগী হাসপাতালে আসছে তা সামাল দিতেই চিকিৎসকসহ অপরাপর কর্মচারীরা হিমশিম খাচ্ছেন। চলতি গরমের তীব্রতা না কমা পর্যন্ত ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না বলে মত প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।
সরকারি হিসাবে গত ১৩ মাসে যেখানে ১৩ হাজার ৫০৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছে, সেখানে গত ৩ মাসে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার অতিক্রম করেছে। তার মধ্যে সরকারি হিসাবেই মারা গেছেন ৮ জন। এ সংখ্যাটা শুধু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়া রোগীদের। বেসরকারি মতে, আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যাটা অনেক।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুধু ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হয় কিন্তু কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় শুধু বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালে। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে রয়েছে বিশেষ ধরনের মাত্র ৪ শয্যার একটি ওয়ার্ড। এবার ডায়রিয়ার (সাধারণের কাছে কলেরা হিসেবে পরিচিত) প্রকোপ বাড়ার পর ওয়ার্ডটিতে প্রথমে অতিরিক্ত ১০টি শয্যা করা হয় কিন্তু তাতেও সামাল না দেয়া যাওয়ায় রোগীরা এসে ওয়ার্ডের বারান্দা, পরে ওয়ার্ডের সামনে গাছতলায় থেকে চিকিৎসা নিতে থাকে। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগ ওয়ার্ডটির সামনে অস্থায়ীভাবে একটি তাঁবু টানিয়েছে কিন্তু এখন সেখানেও রোগীদের সংকুলান না হওয়ায় আবার তাঁবুর ফাঁকা জায়গায় মাটিতে শয্যা পেতে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল সেখানে ডায়রিয়া রোগী ছিল ৪৬ জন। রোববারে সংখ্যাটা ছিল ৬০ জনের অধিক।
ডায়রিয়া শুধু বরিশাল জেলায় সীমাবদ্ধ নেই। বরিশাল বিভাগের প্রতিটি জেলাতেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। সব হাসপাতালেই ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা বিরাজ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১ হাজার ৫১২ জন ডায়রিয়া আক্রান্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে ভোলাতেই সর্বোচ্চ ৩২৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। এরপরে পটুয়াখালীতে ৩২১, বরগুনায় ২৫৬, বরিশালে ২৪৭, ঝালকাঠীতে ২৩৯ ও পিরোজপুরে ১২৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানানো হলেও এসব টিমের কোনটিতেই চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দু-তিনটি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এছাড়া প্রতিটি টিমে একজন করে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ‘সেকমো’ বা পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা কাজ করছেন। পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইনসহ আইভি ফ্লুইডের সরবরাহ রয়েছে বলেও দাবি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহল। তবে খোলাবাজারে স্যালাইন সংকট সৃষ্টি হয়েছে ইতোমধ্যে।