শান্ত’র সেঞ্চুরিতে টেস্টের প্রথম দিন টাইগারদের

ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সঙ্গে হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত অধিনায়ক মোমিনুল হক, ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। দিনশেষে বাংলাদেশের স্কোর দুই উইকেটে ৩০২ রান। আপাতত এই হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম দিনের সারসংক্ষেপ। এককথায় পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিন টাইগারদের।

বিদেশ সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এমন একটা দিন শেষ কবে পেয়েছে, তার জন্য রেকর্ড বইয়ের পাতায় খোঁজাখুজি না করে আপাতত সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আর ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিনটায় সবুজ ঘাসে ছাওয়া পিচে লাল-সবুজের দলটার সাহসের গল্প লেখাটাই শ্রেয়।

হ্যাঁ, প্রথম দিনে যথেষ্ঠ সাহসই দেখিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ঘরের মাটিতে আফগানিস্তানের কাছে টেস্ট ম্যাচে পরাজয়ের ধারাবাহিকতায় খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশের পর নিউজিল্যান্ড সফরে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে তিন ম্যাচের ও ২০ ওভারের ফরম্যাটে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশের দগদগে ক্ষত নিয়ে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস কোন যাদুমন্ত্রে যেনো জেগে উঠেছিল বুধবার। শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিজেদের শততম টেস্ট জয়ের স্মৃতিটাই বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবিত করেছিল কিনা কে জানে। আবার সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতির ছিটেফোঁটা প্রভাবও দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে বিদেশ সফরের অসাধারণ এই দিনটায় শুরুর সাহসী সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মোমিনুল হক। পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে ছাওয়া পিচের কারণেই শ্রীলঙ্কান একাদশে স্পেশালিস্ট পেস বোলারের সংখ্যা চারজন। পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে টাইগার ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতার বিষয়টা জানা থাকার পরও মোমিনুল টস জিতেই সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যাটিংয়ের। মনে মনে হয়তো মুচকি হাসি দিয়ে টাইগার দলপতির সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছিলেন লঙ্কা দলপতি দ্বিমুথ করুণারতেœ। তার খুশি হওয়ার উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছিলেন লঙ্কান পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো। নামের পাশে কোন রান যোগ হওয়ার আগেই ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে সাইফ হাসান ফিরলেন লেগ বিফোর উইকেট হয়ে। ফিল্ড আম্পায়ার আউটের আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় স্বাগতিক দল। দলের রান তখন মাত্র ৮।

স্বাভাবিকভাবেই টাইগার ভক্তদের মনে তখন কালো মেঘের ছায়া। সেই শঙ্কা ধীরে ধীরে দূর করার প্রত্যয়ে ব্যাট চালান তামিমের সঙ্গী ওয়ান ডাউন ব্যাটসম্যান শান্ত। দুইজনের ব্যাটে ধ্রুপদী ছন্দের সঙ্গে ছিল আক্রমণের মিশেল। চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ব্যর্থতার প্রতিমূর্তি নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুতে তামিম ইকবালকে দিয়ে গেলেন যোগ্য সমর্থণ। ক্রিজে শান্ত থেকে দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে গড়লেন ১৪৪ রানের পার্টনারশিপ। তামিম ১০১ বলে ৯০ রানের ইনিংস খেলে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মোমিনুল হককে নিয়ে ১৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে অপরাজিত থেকেছেন প্রথম দিনে। পাল্লেকেলের প্রথম দিনটা নিজেদের করে নেয়া বাংলাদেশ দলের ৩০২ রানে শান্ত’র অবদান ১২৬ রান। এই পথে তিনি ২৮৮ বলের মোকাবিলায় ১৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে হাঁকিয়েছেন মাত্র একটি ছক্কা। অন্যপ্রান্তে ১৫০ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত মোমিনুল হাঁকিয়েছেন ছয়টি বাউন্ডারি।

নার্ভাস নাইন্টিজে তামিম ইকবালের আউট হওয়া দেখার কারণেই শান্ত সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে অনেক বেশি ‘শান্ত’ হয়ে যান। ৯০ থেকে ১০০ রানে পৌঁছতে তিনি মোকাবিলা করেন ৩৮টি বল। তাও আবার দিনের শেষ সেশনে, যে সময়টাতে বাংলাদেশ দলের উইকেট হারানো হতে পারত বিপর্যয়ের কারণ।

দিনশেষে বাংলাদেশ দলের এমন শক্তিশালী একটা অবস্থানে পৌঁছার শুরুটা করেছিলেন তামিম ইকবাল। তার দেখানো পথেই দিনের প্রথম সেশনে ১০৬ ও দ্বিতীয় সেশনে ৯৪ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ দল।

ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয়বারের মতো রানের খাতা না খুলেই সাইফ হাসানের আউট হওয়াটা নার্ভাসনেস থেকে, তারও প্রমাণ তামিমের ব্যাটিং। কেননা তিনি আউট হওয়ার পর শান্ত ক্রিজে এসে রানের খাতা খোলার আগেই ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকানো হয়ে গেছে তামিমের। প্রথম ঘণ্টায় ৯টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তামিম তোলেন ৪৩ রান। তামিম আউট হয়েছেন একেবারেই খেলার গতির বিপরীতে। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দ্বিমুথ করুণারতেœ যখন বারবার বোলার (ততক্ষণে ছয়জন বোলার ব্যবহার করা হয়ে গেছে) পরিবর্তন করেও সাফল্য পাচ্ছিলেন না, তার সেরা স্ট্রাইক বোলার সুরঙ্গা লাকমল যখন বারবার প্রান্ত বদলেও কোন কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না, ঠিক সে সময়েই বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে লেট কাট করে স্লিপে ক্যাচ দেন লাহিরু কুমারার হাতে। এ নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো তামিম ইকবাল নার্ভাস নাইন্টিজে আউট হলেন, আর দশম টেস্ট সেঞ্চুরিটা আবারও কাছে এসেও অধরা থেকে গেলো।

তামিম আউট হওয়ার পর দিনের তৃতীয় সেশনেও রানপ্রবাহে ছেদ পড়তে দেননি শান্ত-মমিনুল। শ্রীলঙ্কার উইকেটকিপার নিরোশান ডিকওয়েলা শান্ত’র ক্যাচ ছেড়েছিলেন ২৮ রানে। ডিকওয়েলা উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে দেখেছেন পয়েন্ট ফিল্ডারের পাশ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শান্ত’র ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়া।

দিনের বিকেলের সেশনে শান্ত হয়ে ওঠেন অনেক বেশি ‘শান্ত’। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে তিন বলের ব্যবধানে একটি ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপর খোলসের ভেতরে ঢুকে যান। দিনের শেষ সেশনে মোমিনুলের সঙ্গে ৩৭ ওভারে ১০২ রান যোগ করার পথে শান্ত’র বাউন্ডারি খরা কাটে ৭৪তম ওভারে। কাভার ড্রাইভে সীমানা ছাড়া হওয়া ওই বলটাই শান্তকে এনে দেয় ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। এরপর সুরঙ্গা লাকমলকে টানা দুটো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শান্ত নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দেন। বিদেশের মাটিতে আর কবে বাংলাদেশ দল এমন একটা দিন পাবে, সেটা বলবে ভবিতব্য। আপাতত : বিদেশের মাটিতে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিনটা হয়ে থাকল অনেক মধুর। (আরও খবর খেলার পৃষ্ঠায়)।

বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১ , ৯ বৈশাখ ১৪২৮ ৯ রমজান ১৪৪২

শান্ত’র সেঞ্চুরিতে টেস্টের প্রথম দিন টাইগারদের

বিশেষ প্রতিনিধি

image

সেঞ্চুরির পর শান্তকে মোমিনুলের অভিনন্দন

ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সঙ্গে হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত অধিনায়ক মোমিনুল হক, ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। দিনশেষে বাংলাদেশের স্কোর দুই উইকেটে ৩০২ রান। আপাতত এই হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম দিনের সারসংক্ষেপ। এককথায় পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিন টাইগারদের।

বিদেশ সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এমন একটা দিন শেষ কবে পেয়েছে, তার জন্য রেকর্ড বইয়ের পাতায় খোঁজাখুজি না করে আপাতত সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আর ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিনটায় সবুজ ঘাসে ছাওয়া পিচে লাল-সবুজের দলটার সাহসের গল্প লেখাটাই শ্রেয়।

হ্যাঁ, প্রথম দিনে যথেষ্ঠ সাহসই দেখিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ঘরের মাটিতে আফগানিস্তানের কাছে টেস্ট ম্যাচে পরাজয়ের ধারাবাহিকতায় খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশের পর নিউজিল্যান্ড সফরে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে তিন ম্যাচের ও ২০ ওভারের ফরম্যাটে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশের দগদগে ক্ষত নিয়ে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস কোন যাদুমন্ত্রে যেনো জেগে উঠেছিল বুধবার। শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিজেদের শততম টেস্ট জয়ের স্মৃতিটাই বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবিত করেছিল কিনা কে জানে। আবার সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতির ছিটেফোঁটা প্রভাবও দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে বিদেশ সফরের অসাধারণ এই দিনটায় শুরুর সাহসী সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মোমিনুল হক। পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে ছাওয়া পিচের কারণেই শ্রীলঙ্কান একাদশে স্পেশালিস্ট পেস বোলারের সংখ্যা চারজন। পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে টাইগার ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতার বিষয়টা জানা থাকার পরও মোমিনুল টস জিতেই সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যাটিংয়ের। মনে মনে হয়তো মুচকি হাসি দিয়ে টাইগার দলপতির সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছিলেন লঙ্কা দলপতি দ্বিমুথ করুণারতেœ। তার খুশি হওয়ার উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছিলেন লঙ্কান পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো। নামের পাশে কোন রান যোগ হওয়ার আগেই ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে সাইফ হাসান ফিরলেন লেগ বিফোর উইকেট হয়ে। ফিল্ড আম্পায়ার আউটের আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় স্বাগতিক দল। দলের রান তখন মাত্র ৮।

স্বাভাবিকভাবেই টাইগার ভক্তদের মনে তখন কালো মেঘের ছায়া। সেই শঙ্কা ধীরে ধীরে দূর করার প্রত্যয়ে ব্যাট চালান তামিমের সঙ্গী ওয়ান ডাউন ব্যাটসম্যান শান্ত। দুইজনের ব্যাটে ধ্রুপদী ছন্দের সঙ্গে ছিল আক্রমণের মিশেল। চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ব্যর্থতার প্রতিমূর্তি নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুতে তামিম ইকবালকে দিয়ে গেলেন যোগ্য সমর্থণ। ক্রিজে শান্ত থেকে দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে গড়লেন ১৪৪ রানের পার্টনারশিপ। তামিম ১০১ বলে ৯০ রানের ইনিংস খেলে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মোমিনুল হককে নিয়ে ১৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে অপরাজিত থেকেছেন প্রথম দিনে। পাল্লেকেলের প্রথম দিনটা নিজেদের করে নেয়া বাংলাদেশ দলের ৩০২ রানে শান্ত’র অবদান ১২৬ রান। এই পথে তিনি ২৮৮ বলের মোকাবিলায় ১৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে হাঁকিয়েছেন মাত্র একটি ছক্কা। অন্যপ্রান্তে ১৫০ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত মোমিনুল হাঁকিয়েছেন ছয়টি বাউন্ডারি।

নার্ভাস নাইন্টিজে তামিম ইকবালের আউট হওয়া দেখার কারণেই শান্ত সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে অনেক বেশি ‘শান্ত’ হয়ে যান। ৯০ থেকে ১০০ রানে পৌঁছতে তিনি মোকাবিলা করেন ৩৮টি বল। তাও আবার দিনের শেষ সেশনে, যে সময়টাতে বাংলাদেশ দলের উইকেট হারানো হতে পারত বিপর্যয়ের কারণ।

দিনশেষে বাংলাদেশ দলের এমন শক্তিশালী একটা অবস্থানে পৌঁছার শুরুটা করেছিলেন তামিম ইকবাল। তার দেখানো পথেই দিনের প্রথম সেশনে ১০৬ ও দ্বিতীয় সেশনে ৯৪ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ দল।

ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয়বারের মতো রানের খাতা না খুলেই সাইফ হাসানের আউট হওয়াটা নার্ভাসনেস থেকে, তারও প্রমাণ তামিমের ব্যাটিং। কেননা তিনি আউট হওয়ার পর শান্ত ক্রিজে এসে রানের খাতা খোলার আগেই ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকানো হয়ে গেছে তামিমের। প্রথম ঘণ্টায় ৯টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তামিম তোলেন ৪৩ রান। তামিম আউট হয়েছেন একেবারেই খেলার গতির বিপরীতে। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দ্বিমুথ করুণারতেœ যখন বারবার বোলার (ততক্ষণে ছয়জন বোলার ব্যবহার করা হয়ে গেছে) পরিবর্তন করেও সাফল্য পাচ্ছিলেন না, তার সেরা স্ট্রাইক বোলার সুরঙ্গা লাকমল যখন বারবার প্রান্ত বদলেও কোন কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না, ঠিক সে সময়েই বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে লেট কাট করে স্লিপে ক্যাচ দেন লাহিরু কুমারার হাতে। এ নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো তামিম ইকবাল নার্ভাস নাইন্টিজে আউট হলেন, আর দশম টেস্ট সেঞ্চুরিটা আবারও কাছে এসেও অধরা থেকে গেলো।

তামিম আউট হওয়ার পর দিনের তৃতীয় সেশনেও রানপ্রবাহে ছেদ পড়তে দেননি শান্ত-মমিনুল। শ্রীলঙ্কার উইকেটকিপার নিরোশান ডিকওয়েলা শান্ত’র ক্যাচ ছেড়েছিলেন ২৮ রানে। ডিকওয়েলা উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে দেখেছেন পয়েন্ট ফিল্ডারের পাশ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শান্ত’র ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়া।

দিনের বিকেলের সেশনে শান্ত হয়ে ওঠেন অনেক বেশি ‘শান্ত’। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে তিন বলের ব্যবধানে একটি ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপর খোলসের ভেতরে ঢুকে যান। দিনের শেষ সেশনে মোমিনুলের সঙ্গে ৩৭ ওভারে ১০২ রান যোগ করার পথে শান্ত’র বাউন্ডারি খরা কাটে ৭৪তম ওভারে। কাভার ড্রাইভে সীমানা ছাড়া হওয়া ওই বলটাই শান্তকে এনে দেয় ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। এরপর সুরঙ্গা লাকমলকে টানা দুটো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শান্ত নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দেন। বিদেশের মাটিতে আর কবে বাংলাদেশ দল এমন একটা দিন পাবে, সেটা বলবে ভবিতব্য। আপাতত : বিদেশের মাটিতে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিনটা হয়ে থাকল অনেক মধুর। (আরও খবর খেলার পৃষ্ঠায়)।