লকডাউনে সুযোগ নিচ্ছে ভূমিদস্যু খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

একবার উচ্ছেদের পরও অগ্রাহ্য লাল নিশান

লকডাউন চলার কারণে প্রশাসনের পক্ষে সবকিছুতে দৃষ্টি দেয়া সম্ভব না হওয়ার সুযোগ নিয়ে বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠ লাকুটিয়ায় একটি সরকারি খালের একাংশের জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন স্থানীয় রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারী নামক দুই ভূমিদস্যু।

অথচ এর আগে বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তার হস্তক্ষেপে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছিল কাশীপুর ইউনিয়নের লাকুটিয়া বাজারসংলগ্ন সারসী এলাকায় সরকারি শাখা খালের জমি দখল করে অবৈধভাবে স্থাপন করা রিপন-আজাহারের নির্মাণাধীন পাকা স্থাপনাটি। এমনকি পূর্বে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে লাল নিশান দিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু চলমান লকডাউনের সুযোগ নিয়ে সেই রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারী আবারও পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিচ্ছেন। পূর্বে যখন বেআইনি স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হয় তখন সরকারি কাগজপত্র ও খালের ম্যাপ দেখে জমি মাপ দিলে দেখতে পান ৩০ ফুট খালের সিংহভাগই দখল করে রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারী ভবন নির্মাণ করেছেন। পরে সরকারি দখলকৃত জমিতে কোন ধরনের কাজ করা চলবে না বলে সার্ভেয়ার নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। সার্ভেয়ার ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুনরায় কাজ চালিয়ে যান রিপন হোসেন।

পরে খবরটি শুনে ওই দিন বিকালেই তক্ষৎণিকভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান ঘটনা স্থলে পরিদর্শনে গিয়ে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন করা ভবনটি ভেঙে দেন। সেখানে একটি লাল নিশান স্থাপন করা হয় কাজ বন্ধর জন্য। কিন্তু হঠাৎ আবারও দেশে লকডাউন চলছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে ভূমিদস্যু রিপন ও আজাহার ফের সরকারি জমি দখল করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ স্থাপনার কাজ। এলাকাবাসী ও কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, স্থানীয় রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারীর স্থাপনা নির্মাণের জন্য দখলকৃত সরকারি জমি হচ্ছে প্রবাহমান খাল। এতে খালের পানি প্রবাহ ব্যাহত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

কৃষকরা কোন ফসল উৎপাদন করতে পারবে না। তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। তারা সরকারি জমি ও অন্যের জমি জোর করে দখল, অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালুর ব্যবসাসহ একাধিক অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে এলাকাবাসী আভিযোগ করেন। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার পানি নিস্কাশনের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন সোনালী বেকারীর বৃহৎ বর্ধিতাংশ। রিপন ও আজাহার মিলে ইতিপূর্বে বহুবার সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন রকম বহু অপরাধ করেছে। এদের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এ বিষয়ে লাকুটিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সুমন মীর বলেন, আমি রিপনকে গিয়ে বলেছি এটা সরকারি জমি। এখানে ভবন নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু আমার কথা শুনেনি তারা।

পরে প্রশাসন এসে তাদের অবৈধ স্থাপনাটি পূর্বে একবার ভেঙে ফেলেছে। কিন্তু অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়ার পরও থেমে নেই তাদের স্থাপনা নির্মাণের কার্যক্রম। এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিবুর রহমান বলেন, শত বছরের সরকারি খাল অবৈধভাবে দখল করে ভবন নির্মাণ করায় রিপনের অবৈধ স্থাপনাটি এর আগে একবার ভেঙে দেয়া হয়েছে এবং সেখানে একটি লাল নিশান দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে। সরকারি আইন আমান্য করে ফের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিষয়টি প্রমাণিত হলে সরকারি আইন আমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর
পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন : পাল্টাচ্ছে প্রচারণার কৌশল তবে প্রাধান্য বিভেদের
লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর
দুর্যোগ-সংকটে ‘লিপ সার্ভিস’ নয় বিএনপিকে কাদের
রাত পোহালেই ৬ষ্ঠ দফা ভোট
জনপ্রতি ফিতরা সর্বোচ্চ ২৩১০ সর্বনিম্ন ৭০ টাকা
চলে গেলেন নববিনির্মাণের স্রষ্টা কবি শঙ্খ ঘোষ
শাকিল-সাইফুলদের দিন আর ফেরে না
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে গণপরিবহন চালু করতে চান শ্রমিক নেতারা
হেফাজত নেতা সাখাওয়াত ও মঞ্জুরুল ২১ দিনের রিমান্ডে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রত্যাশিত কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি স্কপের
ধর্ম, জাত, পরিচয়ই কি নিয়ামক?

বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১ , ৯ বৈশাখ ১৪২৮ ৯ রমজান ১৪৪২

লকডাউনে সুযোগ নিচ্ছে ভূমিদস্যু খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

একবার উচ্ছেদের পরও অগ্রাহ্য লাল নিশান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

লকডাউন চলার কারণে প্রশাসনের পক্ষে সবকিছুতে দৃষ্টি দেয়া সম্ভব না হওয়ার সুযোগ নিয়ে বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠ লাকুটিয়ায় একটি সরকারি খালের একাংশের জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন স্থানীয় রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারী নামক দুই ভূমিদস্যু।

অথচ এর আগে বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তার হস্তক্ষেপে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছিল কাশীপুর ইউনিয়নের লাকুটিয়া বাজারসংলগ্ন সারসী এলাকায় সরকারি শাখা খালের জমি দখল করে অবৈধভাবে স্থাপন করা রিপন-আজাহারের নির্মাণাধীন পাকা স্থাপনাটি। এমনকি পূর্বে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে লাল নিশান দিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু চলমান লকডাউনের সুযোগ নিয়ে সেই রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারী আবারও পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিচ্ছেন। পূর্বে যখন বেআইনি স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হয় তখন সরকারি কাগজপত্র ও খালের ম্যাপ দেখে জমি মাপ দিলে দেখতে পান ৩০ ফুট খালের সিংহভাগই দখল করে রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারী ভবন নির্মাণ করেছেন। পরে সরকারি দখলকৃত জমিতে কোন ধরনের কাজ করা চলবে না বলে সার্ভেয়ার নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। সার্ভেয়ার ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুনরায় কাজ চালিয়ে যান রিপন হোসেন।

পরে খবরটি শুনে ওই দিন বিকালেই তক্ষৎণিকভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান ঘটনা স্থলে পরিদর্শনে গিয়ে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন করা ভবনটি ভেঙে দেন। সেখানে একটি লাল নিশান স্থাপন করা হয় কাজ বন্ধর জন্য। কিন্তু হঠাৎ আবারও দেশে লকডাউন চলছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে ভূমিদস্যু রিপন ও আজাহার ফের সরকারি জমি দখল করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ স্থাপনার কাজ। এলাকাবাসী ও কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, স্থানীয় রিপন হোসেন ও আজাহার বেপারীর স্থাপনা নির্মাণের জন্য দখলকৃত সরকারি জমি হচ্ছে প্রবাহমান খাল। এতে খালের পানি প্রবাহ ব্যাহত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

কৃষকরা কোন ফসল উৎপাদন করতে পারবে না। তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। তারা সরকারি জমি ও অন্যের জমি জোর করে দখল, অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালুর ব্যবসাসহ একাধিক অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে এলাকাবাসী আভিযোগ করেন। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার পানি নিস্কাশনের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন সোনালী বেকারীর বৃহৎ বর্ধিতাংশ। রিপন ও আজাহার মিলে ইতিপূর্বে বহুবার সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন রকম বহু অপরাধ করেছে। এদের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এ বিষয়ে লাকুটিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সুমন মীর বলেন, আমি রিপনকে গিয়ে বলেছি এটা সরকারি জমি। এখানে ভবন নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু আমার কথা শুনেনি তারা।

পরে প্রশাসন এসে তাদের অবৈধ স্থাপনাটি পূর্বে একবার ভেঙে ফেলেছে। কিন্তু অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়ার পরও থেমে নেই তাদের স্থাপনা নির্মাণের কার্যক্রম। এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিবুর রহমান বলেন, শত বছরের সরকারি খাল অবৈধভাবে দখল করে ভবন নির্মাণ করায় রিপনের অবৈধ স্থাপনাটি এর আগে একবার ভেঙে দেয়া হয়েছে এবং সেখানে একটি লাল নিশান দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে। সরকারি আইন আমান্য করে ফের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিষয়টি প্রমাণিত হলে সরকারি আইন আমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।