রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রত্যাশিত কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘ কথা বলে গেলেও প্রত্যাশিত কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) আয়োজনে ‘রোহিঙ্গা সমস্যা : প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক বন্ধুরাষ্ট্রের অবদান ও অবস্থান নিয়ে যেমন সন্তুষ্ট আবার ঠিক একইভাবে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারি না অন্যান্য বন্ধুরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়ে। জাতিসংঘ রিপিটেডলি (বারংবার) এখানে কথা বলছে, কিন্তু ইফেকটিভ কিছু হচ্ছে না। আমরা অনেককে দেখছি, যতটুকু সময় তাদের ব্যয় করা উচিত ছিল, তারা সেটা না করে রোহিঙ্গাদের উল্টো বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এমন অবস্থান দেশের কূটনীতি এবং সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এখানে কীভাবে আরও ভালোভাবে রাখা যায় সে বিষয়ে অনেকে কথা বলেছেন। এটা আমাদের কূটনীতির জন্য চ্যালেঞ্জিং, সরকারের জন্যও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং তার নেয়া পলিসিতে আমরা সফল হয়েছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের দেখভাল করছি। কিন্তু জাতিসংঘসহ অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর যতটুকু করার, তারা এখনও ততটুকু করেনি।’

রোহিঙ্গা ইস্যুটি একবারে উপসংহারে আসার বিষয় নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) একবারে কনক্লুশানে বা উপসংহারে আসার মতো বিষয় নয়। এটিকে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। এই রোহিঙ্গা ইস্যুটি কিন্তু সার্বিক অর্থে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ করছে অহরহ, প্রতিনিয়ত এবং আমার মনে হয়, এটি মোকাবিলার জন্য যা যা করতে হয় সেটা আমরা করতে পারছি বা করে যাচ্ছি।’

‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত না হলে শুধু বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চলের জন্যও বিষয়টি হুমকির’- বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটির ক্ষেত্রে শুধু বর্ডার এরিয়ার জন্য না, এটির সঙ্গে সার্বভৌমত্বের বিষয় জড়িত। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চূড়ান্ত সফলতা তখনই আসবে বা বলতে পারব সফল যখন আমরা তাদের দেশে ফিরিয়ে দিতে পারব।’

বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারীর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে সেখানে ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা।

আরও খবর
পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন : পাল্টাচ্ছে প্রচারণার কৌশল তবে প্রাধান্য বিভেদের
লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর
দুর্যোগ-সংকটে ‘লিপ সার্ভিস’ নয় বিএনপিকে কাদের
রাত পোহালেই ৬ষ্ঠ দফা ভোট
জনপ্রতি ফিতরা সর্বোচ্চ ২৩১০ সর্বনিম্ন ৭০ টাকা
চলে গেলেন নববিনির্মাণের স্রষ্টা কবি শঙ্খ ঘোষ
শাকিল-সাইফুলদের দিন আর ফেরে না
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে গণপরিবহন চালু করতে চান শ্রমিক নেতারা
লকডাউনে সুযোগ নিচ্ছে ভূমিদস্যু খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ
হেফাজত নেতা সাখাওয়াত ও মঞ্জুরুল ২১ দিনের রিমান্ডে
অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি স্কপের
ধর্ম, জাত, পরিচয়ই কি নিয়ামক?

বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১ , ৯ বৈশাখ ১৪২৮ ৯ রমজান ১৪৪২

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রত্যাশিত কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘ কথা বলে গেলেও প্রত্যাশিত কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) আয়োজনে ‘রোহিঙ্গা সমস্যা : প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক বন্ধুরাষ্ট্রের অবদান ও অবস্থান নিয়ে যেমন সন্তুষ্ট আবার ঠিক একইভাবে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারি না অন্যান্য বন্ধুরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়ে। জাতিসংঘ রিপিটেডলি (বারংবার) এখানে কথা বলছে, কিন্তু ইফেকটিভ কিছু হচ্ছে না। আমরা অনেককে দেখছি, যতটুকু সময় তাদের ব্যয় করা উচিত ছিল, তারা সেটা না করে রোহিঙ্গাদের উল্টো বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এমন অবস্থান দেশের কূটনীতি এবং সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এখানে কীভাবে আরও ভালোভাবে রাখা যায় সে বিষয়ে অনেকে কথা বলেছেন। এটা আমাদের কূটনীতির জন্য চ্যালেঞ্জিং, সরকারের জন্যও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং তার নেয়া পলিসিতে আমরা সফল হয়েছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের দেখভাল করছি। কিন্তু জাতিসংঘসহ অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর যতটুকু করার, তারা এখনও ততটুকু করেনি।’

রোহিঙ্গা ইস্যুটি একবারে উপসংহারে আসার বিষয় নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) একবারে কনক্লুশানে বা উপসংহারে আসার মতো বিষয় নয়। এটিকে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। এই রোহিঙ্গা ইস্যুটি কিন্তু সার্বিক অর্থে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ করছে অহরহ, প্রতিনিয়ত এবং আমার মনে হয়, এটি মোকাবিলার জন্য যা যা করতে হয় সেটা আমরা করতে পারছি বা করে যাচ্ছি।’

‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত না হলে শুধু বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চলের জন্যও বিষয়টি হুমকির’- বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটির ক্ষেত্রে শুধু বর্ডার এরিয়ার জন্য না, এটির সঙ্গে সার্বভৌমত্বের বিষয় জড়িত। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চূড়ান্ত সফলতা তখনই আসবে বা বলতে পারব সফল যখন আমরা তাদের দেশে ফিরিয়ে দিতে পারব।’

বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারীর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে সেখানে ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা।