শিশু শিক্ষার্থী নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে কওমি মাদ্রাসার ২য় জামাতের ৭ বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার গভীর রাতে উপজেলা শহরের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পেছনে সড়ক থেকে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ২০১৩ সালের শিশু নির্যাতন আইনের ৭০ ধারায় একটি মামলা দিয়ে গতকাল সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হবিবর রহমানের পুত্র।

ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ‘ঢেবঢেবি বাজার কিসমত কুলসুম কওমি নূরানী ও হাফেজি মাদ্রাসার’ লাম নামে এক শিশু শিক্ষার্থীকে অমানুষিকভাবে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা পুলিশের নজরে আসে। পরে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও জানান, নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কেউই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ করেননি। তবে শিশু আইনে যে কেউ বাদী হতে পারে। ফলে পুলিশ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ তারিখে মাদ্রাসার ২য় জামাতের শিক্ষার্থী লাম মিয়া (৭) বাড়ির কাজ না লিখে অন্য লেখা জমা দেয়ার ঘটনায় শিক্ষক আবু সাঈদ ক্ষুব্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থীটিকে বেদমভাবে মারপিট করে। ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মারপিটের ভিডিওটি সবার হাতে হাতে পৌঁছানোর পর টনক নড়ে পুলিশ বিভাগে। ঘটনা তদন্তে মাঠে নামে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। এদিকে মারপিটের ভিডিও ক্লিপটি দেখে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পাথরডুবি বাজারের বাসিন্দা এবং ঢেবঢেবি বাজারের ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন জানতে পারেন ভিডিওতে নির্যাতনের শিকার শিশুটি তার সন্তান। ভয়ে এবং আতংকে তার ছেলে নির্যাতনের ঘটনা এতদিন গোপন রেখেছিল। প্রায়শই শিক্ষার্থীদের ওপর এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে শিশুটি জানায়। এ নিয়ে গত ১৯ এপ্রিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ একটি সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাঈদকে বহিষ্কার করেছে বলে প্রধান শিক্ষক মৌলভী আবু বক্কর সিদ্দিক সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।

শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১ , ১০ বৈশাখ ১৪২৮ ১০ রমজান ১৪৪২

কুড়িগ্রামে

শিশু শিক্ষার্থী নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে কওমি মাদ্রাসার ২য় জামাতের ৭ বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার গভীর রাতে উপজেলা শহরের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পেছনে সড়ক থেকে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ২০১৩ সালের শিশু নির্যাতন আইনের ৭০ ধারায় একটি মামলা দিয়ে গতকাল সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হবিবর রহমানের পুত্র।

ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ‘ঢেবঢেবি বাজার কিসমত কুলসুম কওমি নূরানী ও হাফেজি মাদ্রাসার’ লাম নামে এক শিশু শিক্ষার্থীকে অমানুষিকভাবে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা পুলিশের নজরে আসে। পরে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও জানান, নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কেউই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ করেননি। তবে শিশু আইনে যে কেউ বাদী হতে পারে। ফলে পুলিশ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ তারিখে মাদ্রাসার ২য় জামাতের শিক্ষার্থী লাম মিয়া (৭) বাড়ির কাজ না লিখে অন্য লেখা জমা দেয়ার ঘটনায় শিক্ষক আবু সাঈদ ক্ষুব্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থীটিকে বেদমভাবে মারপিট করে। ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মারপিটের ভিডিওটি সবার হাতে হাতে পৌঁছানোর পর টনক নড়ে পুলিশ বিভাগে। ঘটনা তদন্তে মাঠে নামে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। এদিকে মারপিটের ভিডিও ক্লিপটি দেখে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পাথরডুবি বাজারের বাসিন্দা এবং ঢেবঢেবি বাজারের ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন জানতে পারেন ভিডিওতে নির্যাতনের শিকার শিশুটি তার সন্তান। ভয়ে এবং আতংকে তার ছেলে নির্যাতনের ঘটনা এতদিন গোপন রেখেছিল। প্রায়শই শিক্ষার্থীদের ওপর এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে শিশুটি জানায়। এ নিয়ে গত ১৯ এপ্রিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ একটি সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাঈদকে বহিষ্কার করেছে বলে প্রধান শিক্ষক মৌলভী আবু বক্কর সিদ্দিক সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।