রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে দেখা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। রিকশাভ্যানে প্যাডেল দিতে দিতে এগুচ্ছিলেন ফকিরাপুলের দিকে। তপ্ত রোদে ঘাম ঝরছিল শরীর বেয়ে।
কাছে গিয়ে কেমন আছেন জানতে চাইলে করুণ চোখে তাকিয়ে বললেন, ‘কোনরকমে বাইচা আছি আর কি। দেখেন না মহামারী লাগছে দেশে, লোকে বলে করোনা মহামারী। সবকিছু শেষ হয়া যাচ্ছে। এইভাবে চললে কয়দিন আর বাইচা থাকতে পারমু জানি না।’
পাল্টা প্রশ্ন করে রফিকুল জানতে চায়- ‘করোনা কি দেশ থিকা যাইবোনা ভাই, কতদিন থাকবো?’
রফিকুলের বয়স ৩৮ বছর, কিন্তু শরীরের দিকে তাকিয়ে মনে হয় ৫০ পেরিয়ে গেছে। রফিকুলের বাড়ি জামালপুর। ২০ বছর বয়স থেকে আছেন ঢাকায়, ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবন চলে। সংসারে স্ত্রী ছাড়াও ৩ সন্তান, থাকেন ফকিরাপুলে।
করোনা মহামারীর কারণে লকডাউনে রফিকুল ভ্যানগাড়ির খেপ পাচ্ছেন না। জানালেন, ‘কোন খেপই পাই না। তিন দিন পর আইজ একটা খেপ পাইলাম, কাওরান বাজারে মাল নামায়া আসলাম। আগে প্রতিদিন দুই থিকা তিনটা খেপ পাইতাম। এখন ২/৩দিন পরপর একটা খেপ জোটে আবার জোটেও না।
কৈফিয়তের সুরে বলেন রফিকুল, ‘লোকজন ভ্যানগাড়ি ভাড়া করব কী জন্য, তাগোরওতো কোন কাজ নেই। মার্কেট-দোকান বন্ধ। তারা মালামাল আনা-নেয়ার জন্য আগে ভ্যানগাড়ি ভাড়া করত।’
রফিকুল জানায়, করোনার আগে প্রতিদিন ৭/৮শ’ টাকা রোজগার হতো, এখন তার তিন ভাগের একভাগ আয় করাও ভাগ্যের ব্যাপার। ‘এই টাকায় সংসার চলবো কেমনে? বাইচা থাকাই সম্ভব না। ঢাকা ছাইড়া গ্রামে যাইতে চাইছিলাম, কিন্তু গ্রামেতো কিছুই নাই। গিয়া কি করবো?’
রফিকুল যেখানে থাকেন সেই ফকিরাপুলে আরও ৫০/৬০ জন ভ্যানগাড়িচালক থাকেন। প্রায় সবাই ২৫/৩০ বছর ধরে ঢাকায় থেকে ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবন নির্বাহ করছেন। কিন্তু করোনা মহামারী দেখা দেয়ার পর সবারই সংসারে চরম অর্থকষ্ট দেখা দিয়েছে। এখন একনাগাড়ে কয়েকদিন কোন রোজগার হয় না। কিন্তু সংসারের খরচতো আছেই। এভাবে চলতে থাকলে কী করবেন জানেন না রফিকুল।
শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১ , ১০ বৈশাখ ১৪২৮ ১০ রমজান ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে দেখা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। রিকশাভ্যানে প্যাডেল দিতে দিতে এগুচ্ছিলেন ফকিরাপুলের দিকে। তপ্ত রোদে ঘাম ঝরছিল শরীর বেয়ে।
কাছে গিয়ে কেমন আছেন জানতে চাইলে করুণ চোখে তাকিয়ে বললেন, ‘কোনরকমে বাইচা আছি আর কি। দেখেন না মহামারী লাগছে দেশে, লোকে বলে করোনা মহামারী। সবকিছু শেষ হয়া যাচ্ছে। এইভাবে চললে কয়দিন আর বাইচা থাকতে পারমু জানি না।’
পাল্টা প্রশ্ন করে রফিকুল জানতে চায়- ‘করোনা কি দেশ থিকা যাইবোনা ভাই, কতদিন থাকবো?’
রফিকুলের বয়স ৩৮ বছর, কিন্তু শরীরের দিকে তাকিয়ে মনে হয় ৫০ পেরিয়ে গেছে। রফিকুলের বাড়ি জামালপুর। ২০ বছর বয়স থেকে আছেন ঢাকায়, ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবন চলে। সংসারে স্ত্রী ছাড়াও ৩ সন্তান, থাকেন ফকিরাপুলে।
করোনা মহামারীর কারণে লকডাউনে রফিকুল ভ্যানগাড়ির খেপ পাচ্ছেন না। জানালেন, ‘কোন খেপই পাই না। তিন দিন পর আইজ একটা খেপ পাইলাম, কাওরান বাজারে মাল নামায়া আসলাম। আগে প্রতিদিন দুই থিকা তিনটা খেপ পাইতাম। এখন ২/৩দিন পরপর একটা খেপ জোটে আবার জোটেও না।
কৈফিয়তের সুরে বলেন রফিকুল, ‘লোকজন ভ্যানগাড়ি ভাড়া করব কী জন্য, তাগোরওতো কোন কাজ নেই। মার্কেট-দোকান বন্ধ। তারা মালামাল আনা-নেয়ার জন্য আগে ভ্যানগাড়ি ভাড়া করত।’
রফিকুল জানায়, করোনার আগে প্রতিদিন ৭/৮শ’ টাকা রোজগার হতো, এখন তার তিন ভাগের একভাগ আয় করাও ভাগ্যের ব্যাপার। ‘এই টাকায় সংসার চলবো কেমনে? বাইচা থাকাই সম্ভব না। ঢাকা ছাইড়া গ্রামে যাইতে চাইছিলাম, কিন্তু গ্রামেতো কিছুই নাই। গিয়া কি করবো?’
রফিকুল যেখানে থাকেন সেই ফকিরাপুলে আরও ৫০/৬০ জন ভ্যানগাড়িচালক থাকেন। প্রায় সবাই ২৫/৩০ বছর ধরে ঢাকায় থেকে ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবন নির্বাহ করছেন। কিন্তু করোনা মহামারী দেখা দেয়ার পর সবারই সংসারে চরম অর্থকষ্ট দেখা দিয়েছে। এখন একনাগাড়ে কয়েকদিন কোন রোজগার হয় না। কিন্তু সংসারের খরচতো আছেই। এভাবে চলতে থাকলে কী করবেন জানেন না রফিকুল।