করোনার মধ্যেও কফির উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ

মহামারীর মধ্যেও কফির বৈশ্বিক বাজারের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। করোনা মহামারীতে ২০২০ সালে কফি উৎপাদন ও আমদানি বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জানুয়ারি-মার্চ) সে ধারা অব্যাহত ছিল। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় গত জানুয়ারি-মার্চ সেশনে বিশ্বে কফি উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। রয়টার্স।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার মধ্যে সরবরাহ চেইনে কিছুটা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ২০২০ সালে কফি উৎপাদন ও রপ্তানি বেড়েছে। করোনার মধ্যে কফির অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বেড়েছে। এর মাধ্যমে বিক্রি কমে যাওয়ার শঙ্কা থেকে বেঁচে গেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে কভিডকালেও স্বাভাবিক ছিল বৈশ্বিক কফির বাজার। সর্বশেষ চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও গড়ে কফির দাম বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি কফির উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বাজার গবেষণাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইনডেক্সবক্সের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বে কফি উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ফলে বৈশ্বিক কফি উৎপাদনের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টনে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অধিদপ্তর (ইউএসডিএ) ও ইন্টারন্যাশ কফি অর্গানাইজেশনের (আইসিও) দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইনডেক্সবক্স এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আইসিওর তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সেশনে বিশ্বে রোবাস্তা কফি উৎপাদন কমলেও বেড়েছে অ্যারাবিকা উৎপাদন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বে রোবাস্তা কফি উৎপাদন ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩ লাখ টনে। এর বিপরীতে অ্যারাবিকা কফি উৎপাদন বেড়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বিশ্বে এ জাতীয় কফির মোট উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ লাখ টনে।

পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, একই সময়ে আফ্রিকায় কফি উৎপাদন কমেছে দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া মধ্য আমেরিকার মেক্সিকোয় উৎপাদন কমেছে দশমিক ১ শতাংশ। এর বিপরীতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় বিশাল পরিমাণে বেড়েছে কফি উৎপাদন। এ অঞ্চলে পানীয় পণ্যটির উৎপাদন ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে কফি রপ্তানিও। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক কফি রপ্তানি ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। মোট রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬ লাখ টনে। এর মধ্যে ২৫ লাখ টন কফি রপ্তানির রেকর্ড করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। রপ্তানির দিক থেকে বরাবরের মতোই বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল।

অন্যদিকে বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি সত্ত্বেও বেড়েছে কফির দাম। আইসিওর মাসিক মূল্যসূচক অনুযায়ী গত মার্চে গড়ে প্রতি পাউন্ড কফির দাম ছিল ১২০ দশমিক ৩৬ সেন্ট। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে সমপরিমাণ কফি বিক্রি হয়েছে ১১৯ দশমিক ৩৫ সেন্টে।

আইসিওর বিশ্লেষকদের মতে, পুরো ২০২০ সালে কফির মূল্য গড়ে পাউন্ডপ্রতি ৯৯ দশমিক ৫ থেকে ১১৬ দশমিক ২৫ সেন্টের মধ্যে ওঠানামা করে। তবে মহামারী সত্ত্বেও কফির দাম ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও সে ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। তবে বৈশ্বিক চাহিদা বিবেচনায় ভবিষ্যতে কফি বাজারের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২

করোনার মধ্যেও কফির উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ

সংবাদ ডেস্ক

image

মহামারীর মধ্যেও কফির বৈশ্বিক বাজারের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। করোনা মহামারীতে ২০২০ সালে কফি উৎপাদন ও আমদানি বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জানুয়ারি-মার্চ) সে ধারা অব্যাহত ছিল। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় গত জানুয়ারি-মার্চ সেশনে বিশ্বে কফি উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। রয়টার্স।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার মধ্যে সরবরাহ চেইনে কিছুটা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ২০২০ সালে কফি উৎপাদন ও রপ্তানি বেড়েছে। করোনার মধ্যে কফির অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বেড়েছে। এর মাধ্যমে বিক্রি কমে যাওয়ার শঙ্কা থেকে বেঁচে গেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে কভিডকালেও স্বাভাবিক ছিল বৈশ্বিক কফির বাজার। সর্বশেষ চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও গড়ে কফির দাম বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি কফির উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বাজার গবেষণাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইনডেক্সবক্সের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বে কফি উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ফলে বৈশ্বিক কফি উৎপাদনের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টনে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অধিদপ্তর (ইউএসডিএ) ও ইন্টারন্যাশ কফি অর্গানাইজেশনের (আইসিও) দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইনডেক্সবক্স এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আইসিওর তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সেশনে বিশ্বে রোবাস্তা কফি উৎপাদন কমলেও বেড়েছে অ্যারাবিকা উৎপাদন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বে রোবাস্তা কফি উৎপাদন ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩ লাখ টনে। এর বিপরীতে অ্যারাবিকা কফি উৎপাদন বেড়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বিশ্বে এ জাতীয় কফির মোট উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ লাখ টনে।

পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, একই সময়ে আফ্রিকায় কফি উৎপাদন কমেছে দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া মধ্য আমেরিকার মেক্সিকোয় উৎপাদন কমেছে দশমিক ১ শতাংশ। এর বিপরীতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় বিশাল পরিমাণে বেড়েছে কফি উৎপাদন। এ অঞ্চলে পানীয় পণ্যটির উৎপাদন ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে কফি রপ্তানিও। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক কফি রপ্তানি ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। মোট রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬ লাখ টনে। এর মধ্যে ২৫ লাখ টন কফি রপ্তানির রেকর্ড করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। রপ্তানির দিক থেকে বরাবরের মতোই বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল।

অন্যদিকে বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি সত্ত্বেও বেড়েছে কফির দাম। আইসিওর মাসিক মূল্যসূচক অনুযায়ী গত মার্চে গড়ে প্রতি পাউন্ড কফির দাম ছিল ১২০ দশমিক ৩৬ সেন্ট। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে সমপরিমাণ কফি বিক্রি হয়েছে ১১৯ দশমিক ৩৫ সেন্টে।

আইসিওর বিশ্লেষকদের মতে, পুরো ২০২০ সালে কফির মূল্য গড়ে পাউন্ডপ্রতি ৯৯ দশমিক ৫ থেকে ১১৬ দশমিক ২৫ সেন্টের মধ্যে ওঠানামা করে। তবে মহামারী সত্ত্বেও কফির দাম ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও সে ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। তবে বৈশ্বিক চাহিদা বিবেচনায় ভবিষ্যতে কফি বাজারের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।