রামেকে বাড়তি চাপ মোকাবিলায়

করোনাকালে রাজশাহী প্রাচীন হাসপাতাল চালুর দাবি

২০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এক সময়ের প্রাচীন চিকিৎসা কেন্দ্র রাজশাহী সদর হাসপাতাল। এই হাসপাতালটিই ছিল এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থল। তবে বতর্মানে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এই হাসপাতালটির প্রয়োজনীয়তার কথা। জনস্বার্থে সদর হাসপাতালটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞসহ এলাকাবাসী।

জানা যায়, ১৯০২ সালে ব্রিটিশদের হাতে নির্মিত ভবনটিতে (বতর্মান সদর হাসপাতাল ভবন) এই অঞ্চলের মানুষের জন্য শুরু হয়েছিল বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। ধীরে ধীরে মেডিসিন, নাক-কান-গলা, হাড়-জোড়সহ এই অঞ্চলের মানুষের সেবা চালু হয় এখানেই। যা ১৯৩৮ সালে রুপ নেয় রাজশাহী সদর হাসপাতাল নামে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এখানে নাক, কান গলা চিকিৎসা কার্যক্রম চলতে থাকে। তবে বর্তমানে করোনার এই মহামারীতে করোনা রোগীদের চাপ ও সাধারণ রোগীদের সুরক্ষায় রাজশাহী সদর হাসপাতালটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীবাসী।

সুশাসন বিশ্লেষক আহমদ শফিউদ্দিন বলেন, ‘করোনার এই ভয়াবহ সময়ে দেশের প্রায় ২০টি জেলা থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অসহায় মানুষজন চিকিৎসা নিতে আসছেন। এতে হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে প্রচ- চাপ। কাজেই অনতিবিলম্বে রাজশাহী সদর হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হওয়া অত্যন্ত জরুরী।’

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ রোগী ও করোনা আক্রান্ত রোগীর একসঙ্গে রেখে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করানো একটু ডিফিকাল্ট। এতে করে সাধারণ ওয়ার্ডেও করোনা রোগী ছড়িয়ে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এজন্য করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরী।’

তবে ভবনটিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন রামেক হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট। তবে তাদের কাছ থেকে ভবনটি ফিরে পেলে সদর হাসপাতালের কার্যক্রম আবারও শুরু করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুদার।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালু করা খুবই দরকার। এজন্য আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট হাসপাতালটির কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে দিকনির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পেলে যত দ্রুত সম্ভব আমরা রাজশাহী সদর হাসপাতালটি পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করব।’

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এইচএস খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহী সদর হাসপাতালে কিন্তু পর্যাপ্ত অবকাঠামো রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আসবাবপত্রও আছে। তাই রামেক হাসপাতালের বাড়তি চাপ কমাতে রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালুর ব্যাপারে দ্রুত একটি ব্যবস্থা করা সম্ভব।’

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২

রামেকে বাড়তি চাপ মোকাবিলায়

করোনাকালে রাজশাহী প্রাচীন হাসপাতাল চালুর দাবি

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

image

রাজশাহী : ২০ আগে নির্মিত রাজশাহীর পুরনো হাসপাতাল -সংবাদ

২০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এক সময়ের প্রাচীন চিকিৎসা কেন্দ্র রাজশাহী সদর হাসপাতাল। এই হাসপাতালটিই ছিল এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থল। তবে বতর্মানে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এই হাসপাতালটির প্রয়োজনীয়তার কথা। জনস্বার্থে সদর হাসপাতালটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞসহ এলাকাবাসী।

জানা যায়, ১৯০২ সালে ব্রিটিশদের হাতে নির্মিত ভবনটিতে (বতর্মান সদর হাসপাতাল ভবন) এই অঞ্চলের মানুষের জন্য শুরু হয়েছিল বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। ধীরে ধীরে মেডিসিন, নাক-কান-গলা, হাড়-জোড়সহ এই অঞ্চলের মানুষের সেবা চালু হয় এখানেই। যা ১৯৩৮ সালে রুপ নেয় রাজশাহী সদর হাসপাতাল নামে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এখানে নাক, কান গলা চিকিৎসা কার্যক্রম চলতে থাকে। তবে বর্তমানে করোনার এই মহামারীতে করোনা রোগীদের চাপ ও সাধারণ রোগীদের সুরক্ষায় রাজশাহী সদর হাসপাতালটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীবাসী।

সুশাসন বিশ্লেষক আহমদ শফিউদ্দিন বলেন, ‘করোনার এই ভয়াবহ সময়ে দেশের প্রায় ২০টি জেলা থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অসহায় মানুষজন চিকিৎসা নিতে আসছেন। এতে হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে প্রচ- চাপ। কাজেই অনতিবিলম্বে রাজশাহী সদর হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হওয়া অত্যন্ত জরুরী।’

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ রোগী ও করোনা আক্রান্ত রোগীর একসঙ্গে রেখে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করানো একটু ডিফিকাল্ট। এতে করে সাধারণ ওয়ার্ডেও করোনা রোগী ছড়িয়ে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এজন্য করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরী।’

তবে ভবনটিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন রামেক হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট। তবে তাদের কাছ থেকে ভবনটি ফিরে পেলে সদর হাসপাতালের কার্যক্রম আবারও শুরু করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুদার।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালু করা খুবই দরকার। এজন্য আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট হাসপাতালটির কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে দিকনির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পেলে যত দ্রুত সম্ভব আমরা রাজশাহী সদর হাসপাতালটি পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করব।’

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এইচএস খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহী সদর হাসপাতালে কিন্তু পর্যাপ্ত অবকাঠামো রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আসবাবপত্রও আছে। তাই রামেক হাসপাতালের বাড়তি চাপ কমাতে রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালুর ব্যাপারে দ্রুত একটি ব্যবস্থা করা সম্ভব।’