মির্জাগঞ্জে তীব্র দাবদাহ অনাবৃষ্টিতে রবিশস্যের ক্ষতি : চাষিরা দিশেহারা

একে তো করোনাভাইরাস তার মধ্যে আবার প্রচ- তাপদাহ ও অনাবৃষ্টিতে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে রবিশস্যের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। লোকসানের মুখে পড়বেন চাষিরা। প্রচ- তাপদাহ, অনাবৃষ্টির এবং খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় ফসলের খেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফসলের গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষক ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ৯৪৫৫ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৬০০০ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল আর বাকি সব অন্য অন্য রবিশস্য চাষ করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় মুগডাল ১৫০০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ করা হয়েছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে করলা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, ঢেড়স, বরবটি ও পুইশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও লতা কৃষির চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের রবিশস্য প্রয়োজনীয় পানির অভাবে ও তীব্র রোদের তাপে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা কয়েক লাখ টাকার লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।

এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলের গাছ বৃদ্ধি হয়নি। ফুল ও ফল রোদের তাপে ঝড়ে পড়েছে। আর যতটুকু ফলন হয়েছে তাতে এখনও পুষ্টি আসেনি।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় ফসল পরিপক্ক হাওয়ার প্রাক্কালে অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে খেত পানিতে তলিয়ে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়া এবং আশপাশের নালা শুকিয়ে যাওয়া ও পরিমাণমতো পানি সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই উৎপাদনে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। তাই কৃষকদের লোকসান গুণতে হবে। লোকসান পুষিয়ে উঠতে কৃষকদের বিশেষ প্রণোদনা পাওয়ার দাবি।

পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম হাং জানান, এ বছর আমি এক একর জমিতে মুগডালের চাষ করেছি। কিন্তু রোদের তীব্র তাপ ও বৃষ্টি না থাকায় ফলন এত কম হয়েছে আমার আর ডাল তুলতে যেতে হবে না। আর বিভিন্ন ফল রোদের তাপে ঝরে পড়েছে। খালে পানি না থাকায় সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। এতে আমার অনেক লোকসান হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আরাফাত হোসেন জানান, কৃষকদেরকে ফসলের শত্রু

পোকা নিধন ও প্রয়োজনীয় সেচের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রবি শস্যের ফুল ও ফল রোদের তাপে ঝড়ে পড়েছে। কিন্তু কিছু কিছু এলাকায় কাছাকাছি খাল না থাকায় সেচ না দেয়ায় তুলনামূলক ফসল উৎপাদন কম হতে পারে। সার্বিক দিক থেকে এ বছর আবাদ বেশি হয়েছে। পর্যাপ্ত সেচের অভাবে ও বৃষ্টি না হওয়ায় সমস্যা হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র চাষিদের যাচাই বাছাই করে প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে।

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২

মির্জাগঞ্জে তীব্র দাবদাহ অনাবৃষ্টিতে রবিশস্যের ক্ষতি : চাষিরা দিশেহারা

আ.রহিম সজল, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

image

একে তো করোনাভাইরাস তার মধ্যে আবার প্রচ- তাপদাহ ও অনাবৃষ্টিতে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে রবিশস্যের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। লোকসানের মুখে পড়বেন চাষিরা। প্রচ- তাপদাহ, অনাবৃষ্টির এবং খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় ফসলের খেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফসলের গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষক ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ৯৪৫৫ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৬০০০ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল আর বাকি সব অন্য অন্য রবিশস্য চাষ করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় মুগডাল ১৫০০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ করা হয়েছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে করলা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, ঢেড়স, বরবটি ও পুইশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও লতা কৃষির চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের রবিশস্য প্রয়োজনীয় পানির অভাবে ও তীব্র রোদের তাপে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা কয়েক লাখ টাকার লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।

এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলের গাছ বৃদ্ধি হয়নি। ফুল ও ফল রোদের তাপে ঝড়ে পড়েছে। আর যতটুকু ফলন হয়েছে তাতে এখনও পুষ্টি আসেনি।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় ফসল পরিপক্ক হাওয়ার প্রাক্কালে অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে খেত পানিতে তলিয়ে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়া এবং আশপাশের নালা শুকিয়ে যাওয়া ও পরিমাণমতো পানি সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই উৎপাদনে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। তাই কৃষকদের লোকসান গুণতে হবে। লোকসান পুষিয়ে উঠতে কৃষকদের বিশেষ প্রণোদনা পাওয়ার দাবি।

পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম হাং জানান, এ বছর আমি এক একর জমিতে মুগডালের চাষ করেছি। কিন্তু রোদের তীব্র তাপ ও বৃষ্টি না থাকায় ফলন এত কম হয়েছে আমার আর ডাল তুলতে যেতে হবে না। আর বিভিন্ন ফল রোদের তাপে ঝরে পড়েছে। খালে পানি না থাকায় সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। এতে আমার অনেক লোকসান হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আরাফাত হোসেন জানান, কৃষকদেরকে ফসলের শত্রু

পোকা নিধন ও প্রয়োজনীয় সেচের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রবি শস্যের ফুল ও ফল রোদের তাপে ঝড়ে পড়েছে। কিন্তু কিছু কিছু এলাকায় কাছাকাছি খাল না থাকায় সেচ না দেয়ায় তুলনামূলক ফসল উৎপাদন কম হতে পারে। সার্বিক দিক থেকে এ বছর আবাদ বেশি হয়েছে। পর্যাপ্ত সেচের অভাবে ও বৃষ্টি না হওয়ায় সমস্যা হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র চাষিদের যাচাই বাছাই করে প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে।