হেফাজত নেতার পদত্যাগ নাশকতায় জড়িতদের বিচার দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চের সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঐ সংগঠনের নেতা মুফতি আবদুর রহিম কাসেমী। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এক লিখিত বিবৃতিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন হেফাজতের এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফরকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলাম যে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি হয়, তা কোাভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না।’

যাদের ‘প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমাল, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে অনুরোধ’ জানান কাসেমী।

কাসেমী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়ার জামিয়া ইলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষাসচিব। তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মতভিন্নতার কারণে গত বছরের ১ ডিসেম্বর তাকে দল ও মাদ্রাসার সব দায়িত্ব থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। তবে কেন্দ্রীয় বা জেলা হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে লিখিত কোন বহিষ্কারাদেশ তিনি এখনও পাননি বলে জানিয়েছেন।

কাসেমী বলছেন, ওই ঘটনার পর মাদ্রাসা ও হেফাজতের কোন সভা, সমাবেশ, মিছিল বা মাহফিল, কোথাও তাকে ডাকা হয়নি।

গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হেফাজতের এই নেতার সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তিনি তা স্থগিত করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যটি জেলার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠান।

লিখিত বিবৃতিতে মুফতি কাসেমী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি জেলার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্র্রাসায় কাজ করেছেন। সর্বশেষ মাদ্রাসায় শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘কিন্তু মতভিন্নতার’ কারণে গত বছরের ১ ডিসেম্বর তাকে মাদ্রাসার সব দায়-দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং মাদ্রাসায় তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

কাসেমী দাবি করেন, গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতি করা এবং ২৭ ও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার ঘটনায় তিনি ও তার মাদ্রাসার কেউ অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার নাম যুক্ত করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা নিতান্তই প্রতিহিংসামূলক মিথ্যাচার ও বাস্তবতার সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই’।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কোন কার্যক্রমের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। বর্তমানে তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত নাসিরনগরে জামিয়া কাসেমীয়া মাদ্রাসা, বাসুদেবের জামিয়াতুল হাসনাইন মাদ্রাসা, কসবায় জামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া কাসেমীয়া মাদ্রাসা নিয়ে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে দাবি করেন।

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২

হেফাজত নেতার পদত্যাগ নাশকতায় জড়িতদের বিচার দাবি

প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চের সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঐ সংগঠনের নেতা মুফতি আবদুর রহিম কাসেমী। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এক লিখিত বিবৃতিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন হেফাজতের এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফরকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলাম যে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি হয়, তা কোাভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না।’

যাদের ‘প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমাল, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে অনুরোধ’ জানান কাসেমী।

কাসেমী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়ার জামিয়া ইলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষাসচিব। তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মতভিন্নতার কারণে গত বছরের ১ ডিসেম্বর তাকে দল ও মাদ্রাসার সব দায়িত্ব থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। তবে কেন্দ্রীয় বা জেলা হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে লিখিত কোন বহিষ্কারাদেশ তিনি এখনও পাননি বলে জানিয়েছেন।

কাসেমী বলছেন, ওই ঘটনার পর মাদ্রাসা ও হেফাজতের কোন সভা, সমাবেশ, মিছিল বা মাহফিল, কোথাও তাকে ডাকা হয়নি।

গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হেফাজতের এই নেতার সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তিনি তা স্থগিত করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যটি জেলার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠান।

লিখিত বিবৃতিতে মুফতি কাসেমী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি জেলার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্র্রাসায় কাজ করেছেন। সর্বশেষ মাদ্রাসায় শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘কিন্তু মতভিন্নতার’ কারণে গত বছরের ১ ডিসেম্বর তাকে মাদ্রাসার সব দায়-দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং মাদ্রাসায় তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

কাসেমী দাবি করেন, গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতি করা এবং ২৭ ও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার ঘটনায় তিনি ও তার মাদ্রাসার কেউ অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার নাম যুক্ত করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা নিতান্তই প্রতিহিংসামূলক মিথ্যাচার ও বাস্তবতার সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই’।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কোন কার্যক্রমের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। বর্তমানে তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত নাসিরনগরে জামিয়া কাসেমীয়া মাদ্রাসা, বাসুদেবের জামিয়াতুল হাসনাইন মাদ্রাসা, কসবায় জামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া কাসেমীয়া মাদ্রাসা নিয়ে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে দাবি করেন।