স্কোর : বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৫৪১/৭ ডি. : শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২২৯/৩
ক্যাুিন্ডর পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে চলমান টেস্ট ম্যাচটি যেনো ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা টাইগারদের প্রতিদিনই আনন্দের উপলক্ষ তৈরী করে দিচ্ছে। প্রথম দিনে নাজমুল হোসেন শান্তর টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় দিনে অধিনায়ক মোমিনুল হক পেয়ে যান বিদেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি। তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ দল ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে প্রথম ইনিংসের ইতি টানার আগে লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিমের দুটো হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসই বা কম কিসে। আবার প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে স্বাগতিক দলের বোলাররা যেখানে সারাদিন ঘাম ঝরিয়ে বাংলাদেশের মাত্র দুটো করে উইকেটের পতন ঘটাতে পেরেছিলো, সেখানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কানদের বিপক্ষে ৭৩ ওভার বল করেই টাইগার বোলিং ডিপার্টমেন্ট তিন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখাতে পেরেছেন। বাংলাদেশ দলের জন্য আশার কথা হলো শেষ বিকেলে পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচে বল ঘুরছে, অর্থাৎ সুবিধা পাচ্ছেন স্পিনাররা। স্বাগতিক দল তিন উইকেটে ২২৯ রানে তৃতীয় দিনের ব্যাটিং শেষ করার সময়ে বাংলাদেশ দল এগিয়ে ৩১২ রানে।
দ্বিতীয় দিনে চার উইকেটে তোলা ৪৭৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দল নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস খেলতে সক্ষম হয়। ২০১৩ সালের গল টেস্টে টাইগারদের তৎকালীন ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট ১৯৬ ওভারে তোলে ৬৩৮ রান। সেই ৬৩৮ রানের ইনিংসটি এখনো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ও দীর্ঘতম ইনিংস। এরপর চলতি টেস্টে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ৫৪১ রানে ডিক্লেয়ার করা প্রথম ইনিংসটি হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস।
শুক্রবার সকালের সেশনে বাংলাদেশ দল ১৮ ওভার ব্যাটিং করে ৬৭ রান তুলতে সক্ষম হয়। আগের দিনে ৪৩ রানে অপরাজিত মুশফিকুর রহিম টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফ সেঞ্চুরিতে পৌছে যান ১২০ বলে। দিনশেষে তিনি অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। এর মধ্য দিয়ে তামিম ইকবালকে টপকে আবারো টেস্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হিসাবে নিজের নামটা লেখালেন বাংলাদেশের ‘মি: ডিপেন্ডেবল’।
অপরপ্রান্তে ২৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা লিটন কুমার দাস ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ সেঞ্চুরিতে পৌছেন যান ৬৫ বলে। অবশ্য এরপর আর এগোতে পারেননি এই উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যান । হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন হওয়ার পর আর কোনো রান যোগ না করেই বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ওশাদা ফার্নান্দোর হাতে ধরা পড়েন লিটন। তাঁর আউট হওয়ার ১১ রান আগেই বিদেশের মাঠে তৃতীয়বারের মত এক ইনিংসে বাংলাদেশ দল পৌছে ৫০০ রানে।
এরপর নিজের ৩৫ তম ওভারে এসে এই টেস্টে প্রথম উইকেটের দেখা পান সুরঙ্গা লাকমল। তার বলে কট বিহাইন্ড থেকে একবার রিভিউ নিয়ে রক্ষা পাওয়ার পরও কট বিহাইন্ডই হন মেহেদী হাসান মিরাজ (৩)।
বিশ্ব ফার্নান্দোর চতুর্থ উইকেট হিসাবে তাইজুল ইসলাম ফেরার পরই আসে ইনিংস ঘোষণা। মুশফিক তখন অপরাজিত ১৫৬ বলে ৬৮ রান করে।
বাংলাদেশের ৫৪১ রানের জবাবে লঙ্কানদের শুরুটা হয় দূর্দান্ত । তাদের ওপেনিং জুটির স্থায়ী হয় ৩৯ ওভার। দুই ওপেনার অধিনায়ক দ্বিমুথ করুনারতেœ ও লাহিরু থিরিমানে গড়েন ১১৪ রানের জুটি। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে থিরিমানে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়লে ভাঙে এই জুটি। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সাজঘরে ফেরার আগে তার সংগ্রহ ১২৫ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৫৮ রান। টাইগারদের দ্বিতীয় ব্রেক থ্রু এনে দেন পেস বোলার তাসকিন আহমেদ।
থিরিমানের বিদায়ের পর করুনারতেœর সঙ্গে ভালোই জমে গিয়েছিলেন ওসাদা ফার্নান্দো। ৪৩ বলে ২০ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তাসকিন। দলীয় ১৫৭ রানে লঙ্কানদের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর উইকেটে আসা অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যথুজও (২৫) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। শেষ বিকেলে বাংলাদেশকে দারুণ এক ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। অভিজ্ঞ এই স্পিনারের বলে আঘাত করে তারকা ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের স্ট্যাম্পে। স্বাগতিক দল ১৯০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। অধিনায়ক করুনারতেœর সঙ্গে দিনের বাকি সময়টা তিনি নিরাপদে কাটিয়ে দেন। করুনারতেœ ২১১ বলে ৮ বাউন্ডারীতে ৮৫ রানে এবং ধনঞ্জয়া ৩০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৬ রানে অপরাজিত আছেন।
ক্যান্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের দুই সফল বোলার তাসকিন ও মিরাজের উইকেট উদযাপন - ক্রিকইনফো
আরও খবরশনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২
স্কোর : বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৫৪১/৭ ডি. : শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২২৯/৩
বিশেষ প্রতিনিধি
ক্যান্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের দুই সফল বোলার তাসকিন ও মিরাজের উইকেট উদযাপন - ক্রিকইনফো
ক্যাুিন্ডর পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে চলমান টেস্ট ম্যাচটি যেনো ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা টাইগারদের প্রতিদিনই আনন্দের উপলক্ষ তৈরী করে দিচ্ছে। প্রথম দিনে নাজমুল হোসেন শান্তর টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় দিনে অধিনায়ক মোমিনুল হক পেয়ে যান বিদেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি। তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ দল ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে প্রথম ইনিংসের ইতি টানার আগে লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিমের দুটো হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসই বা কম কিসে। আবার প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে স্বাগতিক দলের বোলাররা যেখানে সারাদিন ঘাম ঝরিয়ে বাংলাদেশের মাত্র দুটো করে উইকেটের পতন ঘটাতে পেরেছিলো, সেখানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কানদের বিপক্ষে ৭৩ ওভার বল করেই টাইগার বোলিং ডিপার্টমেন্ট তিন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখাতে পেরেছেন। বাংলাদেশ দলের জন্য আশার কথা হলো শেষ বিকেলে পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচে বল ঘুরছে, অর্থাৎ সুবিধা পাচ্ছেন স্পিনাররা। স্বাগতিক দল তিন উইকেটে ২২৯ রানে তৃতীয় দিনের ব্যাটিং শেষ করার সময়ে বাংলাদেশ দল এগিয়ে ৩১২ রানে।
দ্বিতীয় দিনে চার উইকেটে তোলা ৪৭৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দল নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস খেলতে সক্ষম হয়। ২০১৩ সালের গল টেস্টে টাইগারদের তৎকালীন ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট ১৯৬ ওভারে তোলে ৬৩৮ রান। সেই ৬৩৮ রানের ইনিংসটি এখনো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ও দীর্ঘতম ইনিংস। এরপর চলতি টেস্টে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ৫৪১ রানে ডিক্লেয়ার করা প্রথম ইনিংসটি হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস।
শুক্রবার সকালের সেশনে বাংলাদেশ দল ১৮ ওভার ব্যাটিং করে ৬৭ রান তুলতে সক্ষম হয়। আগের দিনে ৪৩ রানে অপরাজিত মুশফিকুর রহিম টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফ সেঞ্চুরিতে পৌছে যান ১২০ বলে। দিনশেষে তিনি অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। এর মধ্য দিয়ে তামিম ইকবালকে টপকে আবারো টেস্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হিসাবে নিজের নামটা লেখালেন বাংলাদেশের ‘মি: ডিপেন্ডেবল’।
অপরপ্রান্তে ২৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা লিটন কুমার দাস ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ সেঞ্চুরিতে পৌছেন যান ৬৫ বলে। অবশ্য এরপর আর এগোতে পারেননি এই উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যান । হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন হওয়ার পর আর কোনো রান যোগ না করেই বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ওশাদা ফার্নান্দোর হাতে ধরা পড়েন লিটন। তাঁর আউট হওয়ার ১১ রান আগেই বিদেশের মাঠে তৃতীয়বারের মত এক ইনিংসে বাংলাদেশ দল পৌছে ৫০০ রানে।
এরপর নিজের ৩৫ তম ওভারে এসে এই টেস্টে প্রথম উইকেটের দেখা পান সুরঙ্গা লাকমল। তার বলে কট বিহাইন্ড থেকে একবার রিভিউ নিয়ে রক্ষা পাওয়ার পরও কট বিহাইন্ডই হন মেহেদী হাসান মিরাজ (৩)।
বিশ্ব ফার্নান্দোর চতুর্থ উইকেট হিসাবে তাইজুল ইসলাম ফেরার পরই আসে ইনিংস ঘোষণা। মুশফিক তখন অপরাজিত ১৫৬ বলে ৬৮ রান করে।
বাংলাদেশের ৫৪১ রানের জবাবে লঙ্কানদের শুরুটা হয় দূর্দান্ত । তাদের ওপেনিং জুটির স্থায়ী হয় ৩৯ ওভার। দুই ওপেনার অধিনায়ক দ্বিমুথ করুনারতেœ ও লাহিরু থিরিমানে গড়েন ১১৪ রানের জুটি। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে থিরিমানে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়লে ভাঙে এই জুটি। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সাজঘরে ফেরার আগে তার সংগ্রহ ১২৫ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৫৮ রান। টাইগারদের দ্বিতীয় ব্রেক থ্রু এনে দেন পেস বোলার তাসকিন আহমেদ।
থিরিমানের বিদায়ের পর করুনারতেœর সঙ্গে ভালোই জমে গিয়েছিলেন ওসাদা ফার্নান্দো। ৪৩ বলে ২০ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তাসকিন। দলীয় ১৫৭ রানে লঙ্কানদের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর উইকেটে আসা অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যথুজও (২৫) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। শেষ বিকেলে বাংলাদেশকে দারুণ এক ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। অভিজ্ঞ এই স্পিনারের বলে আঘাত করে তারকা ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের স্ট্যাম্পে। স্বাগতিক দল ১৯০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। অধিনায়ক করুনারতেœর সঙ্গে দিনের বাকি সময়টা তিনি নিরাপদে কাটিয়ে দেন। করুনারতেœ ২১১ বলে ৮ বাউন্ডারীতে ৮৫ রানে এবং ধনঞ্জয়া ৩০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৬ রানে অপরাজিত আছেন।