ডিপো সংশ্লিষ্টরা প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েক কোটি টাকা
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপোর বিপণন কেন্দ্রে একটি অসাধু চক্র পেট্রলে কেরোসিন মিশিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ ডিপোয় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানির বিপণন কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ১৯ জেলায় প্রায় পাঁচ লাখ লিটার নি¤œমানের (বিএসটিআইয়ের মান অনুয়ায়ী নয়) পেট্রল সরবরাহ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে অয়েল ডিপোর ৩ কোম্পানির কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরাসরি জড়িত বলে জানা যায়। এরা অতি গোপনে পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে পাম্প মালিকদের কাছে বিক্রি করছে। এ ভেজাল পেট্রল বিক্রি করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। বিপিসির বগুড়া আঞ্চলিক অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা মাসোহারার চুক্তিতে ভেজাল পেট্রলের এ কারবার না দেখার ভান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কয়েকটি বেসরকারি রিফাইনারিতে পরিশোধনের জন্য দেয়। পরিশোধনের পর রিফাইনারিগুলো অকটেন, পেট্রল, ডিজেল ও কেরোসিন বিপিসির ডিপোগুলোতে সরবরাহ করে। গাজীপুরের বেসরকারি অ্যাকুয়া রিফাইনারি লিমিটেড অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সঠিক মাত্রায় পরিশোধন করে বাঘাবাড়ী ডিপোর তিনটি কোম্পানিতে প্রতিমাসে ৬৫ ট্যাংকলরি (প্রতিটি ট্যাংক লরির ধারণক্ষমতা সাড়ে ১৩ হাজার লিটার) পেট্রল ও কেরোসিন সরবরাহ করে আসছে। এর মধ্যে ৪০ লরি (পাঁচ লাখ ৪০ হাজার লিটার) পেট্রল এবং ২৫ লরি (তিন লাখ ৩৭ হাজা ৫০০ লিটার) কেরোসিন। এছাড়া চিটাগাং এবং সিলেট থেকে জ্বালানি তেল বাঘাবাড়ী ডিপোতে আসে।
সূত্র জানায়, বাঘাবাড়ী ডিপোতে ট্যাংকলরি পেঁৗঁছার পর পদ্মা, মেঘনা, যমুনা এ তিন কোম্পানির ইনচার্জের মৌখিক নির্দেশে আনলোডের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা পেট্রল ট্যাংকারে পেট্রলের সঙ্গে ওই ট্যাংকারে কেরোসিনও আনলোড করে। পেট্রল ও কেরোসিন দেখতে প্রায় একই হওয়ায় বোঝার উপায় থাকে না ভেজাল পেট্রল। শুধু তাই নয়, চিটাগাং থেকে কার্গোভ্যাসেলে যে জ্বালানি তেল আসে সেখানও পেট্রলের ট্যাংকারে কেরোসিন মেশানো হচ্ছে।
ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই লাখ লিটার কেরোসিন এবং পাঁচ লাখ লিটার পেট্রল সরবরাহ করা হচ্ছে অথচ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, ১৯ জেলায় প্রতিদিন ২ লাখ লিটার কেরোসিনের চাহিদা দেখানো হলেও বাস্তবতার সঙ্গে তার কোন মিল নেই। এখন গ্রামীণ ঘরে ঘরে বিদ্যুতে কেরোসিনের ব্যবহার নেই বললেই চলে। ডিপোতে প্রতি লিটার পেট্রল ৮১.৫৬ টাকা, কেরোসিন ৬৩.৫৬ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তাই পেট্রলে কেরোসিন মিশিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রতি লিটারে ১৮ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
বিএসটিআই রাজশাহী অফিসের কর্মকর্তারা প্রতিবছর বাঘাবাড়ী ডিপোর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার মিটার সাড়ে ৯ হাজার লিটার পরিমাপ করে সিলগালা করে দেয়। ডিপোর কোন মিটারেই সিলগালা নেই। কিছু কিছু থাকলেও তা টেম্পারিং করা। কেরোসিনের ট্যাংক লরিতে পেট্রল সরবরাহ করা হয়। এভাবেই জ্বালানি তেল সরবরাহের হিসাব খাতা-কলমে ঠিক রাখা হয়।
সূত্রের দাবি, বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা বাঘাবাড়ী সরেজমিন তদন্ত করলে সিলগালা টেম্পারিং এবং বেসরকারি অ্যাকুয়া রিফাইনারি লিমিটেড এবং সিলেট থেকে আসা ট্যাংকলরির পেট্রল এবং ডিপোর ট্যাংকারের পেট্রল পরীক্ষা করলেই ডিপোর ভেজাল কারসাজি ধরা পড়বে। অন্যদিকে এ ভেজাল পেট্রল ব্যবহার করায় যানবাহনের ইঞ্জিনসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতির ব্যাপক ক্ষতি এবং ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল কমে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক পাম্প মালিক ডিপো থেকে নিম্নমানের পেট্রল সরবরাহের কথা স্বীকার করে জানান, সব জানা ও দেখার পরও তারা কোন প্রতিবাদ করতে পারছেন না। প্রতিবাদ করলে তেল সরবরাহ পেতে হয়রানির শিকার হতে হবে বলে তারা প্রতিবাদ করার সাহস পান না।
বাঘাবাড়ী ডিপোতে আনলোডের দায়িত্বে থাকা দুই কর্মচারী জানান, ডিপো ইনচার্জদের মৌখিক নির্দেশেই তারা পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে থাকে। তাদের নির্দেশ না মানলে হয় বদলি অথবা হয়রানির শিকার হতে হয়। সে জন্য বাধ্য হয়ে তারা এই কাজ করছে।
বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর মেঘনা কোম্পানির ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মিশ্রণের কথা অস্বীকার করে বলেন, বিএসটিআইয়ের প্রতি বছর ট্যাংকলরি ক্যালিব্রেশন করার কথা থাকলেও তা তারা করছে না। অনেক ট্রাংকলরির ক্যালিব্রেশন নেই। এতে দেখা যাচ্ছে, কোন কোন ট্যাংকলরি ৫-১০ বছর আগের ক্যালিব্রেশন চার্ট দেখিয়ে তেল সরবরাহ নিচ্ছে। এতে ওই সব ট্যাংকলরির কোনটিতে ১০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি তেল বেশি দিতে হচ্ছে। সিলগালা টেম্পারিংয়ের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান এবং যমুনার ডিপো ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
যমুনা অয়েল কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মেশানোর কোন সুযোগ নেই। কোন সময় মেশিন নষ্ট হলে বিএসটিআইয়ের সিলগালা খুলতে হয়। ট্যাংকলরিগুলোর ক্যালিব্রেশন চার্ট অনুয়ায়ী জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়।
যমুনা অয়েল কোম্পানির সহকারী ম্যানেজারের মেশিন নষ্ট হলে বিএসটিআয়ের সিলগালা খোলার এ দাবি সঠিক নয় বলে দাবি করেছে বিএসটিআই রাজশাহী অফিস। এ অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল মুন্নাফ জানান, মেশিন নষ্ট হলে তেল ডিপোর কর্মকর্তাদের সিল ভাঙার কোন এখতিয়ার নেই। কোন সমস্যা হলে তা জানানোর পর বিএসটিআইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সিল ভাঙা হবে।
আবার কাজ হওয়ার পর সেই কর্মকর্তা সিলগালা করবেন এটাই বিধান বলে তিনি দাবি করেন। টেম্পারিং বা সিলগালা না থাকার বিষয়ে তিনি আরও জানান, তাদের অভিযানে যেতে হলে পরিচালকের অনুমতির প্রয়োজন হয় তাই যত তাড়াতাড়ি তারা এ বিষয়ে অভিযানে নামবেন বলে আশ^স্ত করেন।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে পেট্রলে কেরোসিন মেশানোর ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি আপনার কাছ থেকে জানার পর খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২
ডিপো সংশ্লিষ্টরা প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েক কোটি টাকা
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপোর বিপণন কেন্দ্রে একটি অসাধু চক্র পেট্রলে কেরোসিন মিশিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ ডিপোয় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানির বিপণন কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ১৯ জেলায় প্রায় পাঁচ লাখ লিটার নি¤œমানের (বিএসটিআইয়ের মান অনুয়ায়ী নয়) পেট্রল সরবরাহ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে অয়েল ডিপোর ৩ কোম্পানির কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরাসরি জড়িত বলে জানা যায়। এরা অতি গোপনে পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে পাম্প মালিকদের কাছে বিক্রি করছে। এ ভেজাল পেট্রল বিক্রি করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। বিপিসির বগুড়া আঞ্চলিক অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা মাসোহারার চুক্তিতে ভেজাল পেট্রলের এ কারবার না দেখার ভান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কয়েকটি বেসরকারি রিফাইনারিতে পরিশোধনের জন্য দেয়। পরিশোধনের পর রিফাইনারিগুলো অকটেন, পেট্রল, ডিজেল ও কেরোসিন বিপিসির ডিপোগুলোতে সরবরাহ করে। গাজীপুরের বেসরকারি অ্যাকুয়া রিফাইনারি লিমিটেড অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সঠিক মাত্রায় পরিশোধন করে বাঘাবাড়ী ডিপোর তিনটি কোম্পানিতে প্রতিমাসে ৬৫ ট্যাংকলরি (প্রতিটি ট্যাংক লরির ধারণক্ষমতা সাড়ে ১৩ হাজার লিটার) পেট্রল ও কেরোসিন সরবরাহ করে আসছে। এর মধ্যে ৪০ লরি (পাঁচ লাখ ৪০ হাজার লিটার) পেট্রল এবং ২৫ লরি (তিন লাখ ৩৭ হাজা ৫০০ লিটার) কেরোসিন। এছাড়া চিটাগাং এবং সিলেট থেকে জ্বালানি তেল বাঘাবাড়ী ডিপোতে আসে।
সূত্র জানায়, বাঘাবাড়ী ডিপোতে ট্যাংকলরি পেঁৗঁছার পর পদ্মা, মেঘনা, যমুনা এ তিন কোম্পানির ইনচার্জের মৌখিক নির্দেশে আনলোডের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা পেট্রল ট্যাংকারে পেট্রলের সঙ্গে ওই ট্যাংকারে কেরোসিনও আনলোড করে। পেট্রল ও কেরোসিন দেখতে প্রায় একই হওয়ায় বোঝার উপায় থাকে না ভেজাল পেট্রল। শুধু তাই নয়, চিটাগাং থেকে কার্গোভ্যাসেলে যে জ্বালানি তেল আসে সেখানও পেট্রলের ট্যাংকারে কেরোসিন মেশানো হচ্ছে।
ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই লাখ লিটার কেরোসিন এবং পাঁচ লাখ লিটার পেট্রল সরবরাহ করা হচ্ছে অথচ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, ১৯ জেলায় প্রতিদিন ২ লাখ লিটার কেরোসিনের চাহিদা দেখানো হলেও বাস্তবতার সঙ্গে তার কোন মিল নেই। এখন গ্রামীণ ঘরে ঘরে বিদ্যুতে কেরোসিনের ব্যবহার নেই বললেই চলে। ডিপোতে প্রতি লিটার পেট্রল ৮১.৫৬ টাকা, কেরোসিন ৬৩.৫৬ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তাই পেট্রলে কেরোসিন মিশিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রতি লিটারে ১৮ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
বিএসটিআই রাজশাহী অফিসের কর্মকর্তারা প্রতিবছর বাঘাবাড়ী ডিপোর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার মিটার সাড়ে ৯ হাজার লিটার পরিমাপ করে সিলগালা করে দেয়। ডিপোর কোন মিটারেই সিলগালা নেই। কিছু কিছু থাকলেও তা টেম্পারিং করা। কেরোসিনের ট্যাংক লরিতে পেট্রল সরবরাহ করা হয়। এভাবেই জ্বালানি তেল সরবরাহের হিসাব খাতা-কলমে ঠিক রাখা হয়।
সূত্রের দাবি, বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা বাঘাবাড়ী সরেজমিন তদন্ত করলে সিলগালা টেম্পারিং এবং বেসরকারি অ্যাকুয়া রিফাইনারি লিমিটেড এবং সিলেট থেকে আসা ট্যাংকলরির পেট্রল এবং ডিপোর ট্যাংকারের পেট্রল পরীক্ষা করলেই ডিপোর ভেজাল কারসাজি ধরা পড়বে। অন্যদিকে এ ভেজাল পেট্রল ব্যবহার করায় যানবাহনের ইঞ্জিনসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতির ব্যাপক ক্ষতি এবং ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল কমে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক পাম্প মালিক ডিপো থেকে নিম্নমানের পেট্রল সরবরাহের কথা স্বীকার করে জানান, সব জানা ও দেখার পরও তারা কোন প্রতিবাদ করতে পারছেন না। প্রতিবাদ করলে তেল সরবরাহ পেতে হয়রানির শিকার হতে হবে বলে তারা প্রতিবাদ করার সাহস পান না।
বাঘাবাড়ী ডিপোতে আনলোডের দায়িত্বে থাকা দুই কর্মচারী জানান, ডিপো ইনচার্জদের মৌখিক নির্দেশেই তারা পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে থাকে। তাদের নির্দেশ না মানলে হয় বদলি অথবা হয়রানির শিকার হতে হয়। সে জন্য বাধ্য হয়ে তারা এই কাজ করছে।
বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর মেঘনা কোম্পানির ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মিশ্রণের কথা অস্বীকার করে বলেন, বিএসটিআইয়ের প্রতি বছর ট্যাংকলরি ক্যালিব্রেশন করার কথা থাকলেও তা তারা করছে না। অনেক ট্রাংকলরির ক্যালিব্রেশন নেই। এতে দেখা যাচ্ছে, কোন কোন ট্যাংকলরি ৫-১০ বছর আগের ক্যালিব্রেশন চার্ট দেখিয়ে তেল সরবরাহ নিচ্ছে। এতে ওই সব ট্যাংকলরির কোনটিতে ১০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি তেল বেশি দিতে হচ্ছে। সিলগালা টেম্পারিংয়ের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান এবং যমুনার ডিপো ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
যমুনা অয়েল কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন মেশানোর কোন সুযোগ নেই। কোন সময় মেশিন নষ্ট হলে বিএসটিআইয়ের সিলগালা খুলতে হয়। ট্যাংকলরিগুলোর ক্যালিব্রেশন চার্ট অনুয়ায়ী জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়।
যমুনা অয়েল কোম্পানির সহকারী ম্যানেজারের মেশিন নষ্ট হলে বিএসটিআয়ের সিলগালা খোলার এ দাবি সঠিক নয় বলে দাবি করেছে বিএসটিআই রাজশাহী অফিস। এ অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল মুন্নাফ জানান, মেশিন নষ্ট হলে তেল ডিপোর কর্মকর্তাদের সিল ভাঙার কোন এখতিয়ার নেই। কোন সমস্যা হলে তা জানানোর পর বিএসটিআইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সিল ভাঙা হবে।
আবার কাজ হওয়ার পর সেই কর্মকর্তা সিলগালা করবেন এটাই বিধান বলে তিনি দাবি করেন। টেম্পারিং বা সিলগালা না থাকার বিষয়ে তিনি আরও জানান, তাদের অভিযানে যেতে হলে পরিচালকের অনুমতির প্রয়োজন হয় তাই যত তাড়াতাড়ি তারা এ বিষয়ে অভিযানে নামবেন বলে আশ^স্ত করেন।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে পেট্রলে কেরোসিন মেশানোর ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি আপনার কাছ থেকে জানার পর খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।